বর্ধমানে নির্দল প্রার্থী দেওয়ার ভাবনা আদি বিজেপির!

পূর্ব বর্ধমান জেলা (সদর) সভাপতি সন্দীপ নন্দীর অপসারণ চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছে আদি কর্মীরা।

February 18, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নির্দল প্রার্থী হিসেবে এবার লড়াইয়ে নামছে বিজেপির(BJP) বিক্ষুব্ধ আদি নেতারা(Old leaders)। পূর্ব বর্ধমানে(Purba Burdwan) বিজেপির অন্তর্দ্বন্দ্বে এবার নতুন সমীকরণ তৈরি হল। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ন’টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দিতে চলেছে আদি বিজেপি। পূর্ব বর্ধমান জেলা (সদর) সভাপতি সন্দীপ নন্দীর অপসারণ চেয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছে আদি কর্মীরা। দল তাদের দাবিতে সেভাবে আমল দিচ্ছে না বলেই অভিযোগ। এবার তাই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আদি বিজেপির কর্মীরা। ইতিমধ্যে তারা দেওয়াল দখল নিয়ে ‘সাইট ফর বিজেপি আদি’ বলে লিখে রেখেছে। পূর্ব বর্ধমানের গলসি বিধানসভার কুরকুবা অঞ্চলের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে একাধিক দেওয়াল দখল করে রেখেছে তারা। বাকি আট বিধানসভায় চলতি সপ্তাহের মধ্যেই দেওয়াল দখল করা হবে বলে জানিয়েছে তারা। এতে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে গেরুয়া শিবির। 
আদি বিজেপি নেতা স্মৃতিকান্ত মণ্ডল বলেন, গলসি থেকে আমাদের দেওয়াল দখল শুরু হল। এবার প্রত্যেকটি বিধানসভায় আমরা দেওয়াল দখল করে রাখব। বিজেপি দলটি শুরুর দিন থেকে করেও আজ আমাদের গুরুত্ব নেই। আমাদের দাবি এখনও মানা হয়নি। তাই আমরা নির্দল প্রার্থী দেব। প্রচারের জন্যই দেওয়াল দখল করে রেখেছি। আমাদের দাবি মিটলে আমরা পদ্মফুল আঁকব। না হলে নির্বাচন কমিশন আমাদের নির্দল যে প্রতীক দেবে সেটাই বহন করব। 
গণতন্ত্রের উৎসবের আর হাতে গোনা কয়েকটি দিন মাত্র বাকি। তার আগে বিজেপির আদি নেতা কর্মীদের এই সিদ্ধান্তে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। তবে এই ঘটনা প্রথম নয়। দীর্ঘদিন ধরেই পূর্ব বর্ধমানে বিজেপির আদি ও নব্য গোষ্ঠীর কোন্দল চলে আসছে। সেই কোন্দল প্রকাশ্যে আসে ২১ জানুয়ারি। বিক্ষুব্ধ আদি নেতারা জেলা সভাপতি সন্দীপ-সহ বেশকিছু নেতার অপসারণের দাবি জানান। যা নিয়ে ঘোড়দৌড়চটিতে থাকা বিজেপির জেলা অফিসে তাণ্ডব চলে। দলের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর হামলায় অগ্নিগর্ভ হয় পরিস্থিতি। ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী বিক্ষুব্ধদের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পর প্রায় এক মাস কেটে গেলেও দলের তরফে শো-কজ ছাড়া, কোনও পক্ষের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ওই ঘটনায় জেলা সভাপতি সহ মোট ১৪ জনকে শো-কজ করেছিলেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। শো-কজের উত্তর দেন নেতারা। তারপর প্রায় তিন সপ্তাহ কেটেও গিয়েছে। কিন্তু, আদি কর্মীদের এখনও কোনও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে ফের তাঁরা অভিযোগ তুলেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির ক্ষতিপূরণের দাবি করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু, কোনও ভ্রুক্ষেপ করেনি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। বাধ্য হয়েই নিজেদের দলের বিরুদ্ধেই প্রার্থী দিচ্ছে বিক্ষুব্ধরা। সেই পরিকল্পনা নিয়েই দেওয়াল দখল করেছে তারা। 
যদিও বিজেপির বর্ধমান (সদর) জেলা সম্পাদক শ্যামল রায় বলেন, বিজেপির দখল করা দেওয়ালে তৃণমূল রাতের অন্ধকারে আদি লিখে দিচ্ছে। বিজেপির মধ্যে গোষ্ঠীর সমস্যা প্রমাণ করতেই তারা এই কাজ করছে। আর যদি কোনও আদি নেতা নির্দলে প্রার্থী দিয়ে জিততে পারে, জিতবে। জিতে যদি পরবর্তীতে তারা বিজেপিতে আসতে পারে আসবে। নির্বাচন ঘোষণা হলেই সব বোঝা যাবে।
তৃণমূল অবশ্য এই অভিযোগ হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে। রাজ্যের মন্ত্রী তথা পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূল সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, আগে ওরা নিজেদের কোন্দল সামাল দিক, তারপর তো বাংলা দখল করার চিন্তা করবে। গলসিতে নিজেদের দলের আদি কর্মীরাই দেওয়াল দখল করে রাখছে, যাতে বিজেপি প্রার্থীরা পরে প্রচার করতে না পারে। নিজেদের অফিস ভাঙচুর করেছে, সেদিন পুলিস না থাকলে তো প্রাণহানি ঘটে যেত। ওরা আগে এসব সুষ্ঠুভাবে সামাল দিক। তারপর ভাবা যাবে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen