রক্তাক্ত স্বপ্নদীপকে ফেলে রেখে চলছিল পুলিশি জেরা সামলানোর পাঠ?

জরুরি ভিত্তিতে ডাকা হয় জেনারেল বডি মিটিং, জিবি মিটিংয়ের নামে পুলিশকে বয়ান দেওয়ার পাঠ দেওয়া হচ্ছিল

August 17, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: রক্তাক্ত অবস্থায় নিথর হয়ে পড়েছিলেন স্বপ্নদীপ, তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে চলছিল ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অনুশীলন। জরুরি ভিত্তিতে ডাকা হয় জেনারেল বডি মিটিং, জিবি মিটিংয়ের নামে পুলিশকে বয়ান দেওয়ার পাঠ দেওয়া হচ্ছিল। এমনই দাবি পুলিশের।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হতে পারে, এমনটা ধরে নিয়েই প্রাক্তনীরা টিউটোরিয়াল শুরু করেন। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, রীতিমতো মক ইন্টারোগেশনও হয়েছে। এমন তিনটি জিবির কথা জানা গিয়েছে। গোটা পরিকল্পনার নেপথ্যে ছিলেন ধৃত সৌরভ চৌধুরী। তাঁকে জেরা করে বুধবার সকালে আরও ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে যাদবপুর থানা। ধৃতদের মধ্যে তিনজন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া। তাঁরা হলেন মহম্মদ আরিফ, মহম্মদ আসিফ আজমল এবং অঙ্কন সর্দার। সপ্তক কামিল্যা, অসিত সর্দার ও সুমন নস্কর, এরা তিনজন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী। হস্টেলের সব ছাত্রের একই বয়ানে সন্দেহ হয় তদন্তকারীদের। জিজ্ঞাসাবাদে প্রত্যেকেই জানান তাঁরা জিবিতে হাজির ছিলেন। সেখানে ১৫ আগস্টের ফুটবল ম্যাচ নিয়ে আলোচনা চলছিল। সবার এক বয়ানে পুলিশ বুঝতে পারে, প্রত্যেকেই শেখানো বুলি আওড়ে যাচ্ছেন। জিবিতেই শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল, শেখানো বুলির বাইরে কেউ কিছু বলবে না।

জানা গিয়েছিল, জম্মু থেকে পড়তে আসা আরিফ স্বপ্নদীপকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, যদিও তদন্তে পুলিশ জানতে পারে সেটাও মিথ্যে। ঘটনার দিন রাতে হস্টেলের ৬৮, ৭৫ ও ৭৩ নম্বর রুমে স্বপ্নদীপের উপর যখন মানসিক অত্যাচার চলছিল, সেখানেই আরিফ উপস্থিত ছিলেন বলেই জানা গিয়েছে তদন্তে। এরপর দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির অসিত সর্দার, মন্দিরবাজার থেকে সুমন নস্কর ও পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা থেকে সপ্তক কামিল্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের দুই ছাত্র মহম্মদ আরিফ ও অঙ্কন সর্দার এবং ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহম্মদ আসিফ আজমলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ধৃতদের আলিপুর আদালতে তোলা হয় বুধবার, সরকারি আইনজীবী রাধানাথ রং বলেন, এঁদের কাছ থেকে পাঁচটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ধৃতদের মধ্যে আরিফ জম্মুর বাসিন্দা। বিচারক ছ’জনকেই ২৮ আগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।  
বুধবার রেজিস্টার স্নেহমঞ্জু বসু ও ডিন অব স্টুডেন্ট রজত রায়কে লালবাজারে ডাকা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘেরাও থাকায় রজতবাবু যেতে পারেননি। তবে রেজিস্ট্রার গিয়েছিলেন। তাঁর দাবি, পুলিশ আধিকারিকরা তাঁর কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠনতন্ত্র সম্পর্কে জেনেছেন। পূর্বতন অ্যান্টি র‌্যাগিং কমিটি কেন ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, ইউজিসির গাইডলাইন অনুযায়ী সিসিটিভি কেন নেই—ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন জুটার প্রতিনিধি হিসেবে পার্থপ্রতিম রায়কে লালবাজারে ডাকা হয়েছিল। রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের একটি প্রতিনিধি দলও ক্যাম্পাসে গিয়ে আধিকারিক, শিক্ষক এবং পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen