মিছিল বন্ধ, স্লোগান-যুদ্ধ এখন টুইটের হ্যাশট্যাগে

মিটিং-মিছিল প্রায় দু’মাস বন্ধ। তা বলে রাজনীতির লড়াই তো আর থেমে নেই। লড়াই এখন হ্যাশট্যাগে। সেখানেই চলছে স্লোগানের যুদ্ধ। প্রতিপক্ষকে জবাব দিতে মগজ খাটিয়ে নেট-দুনিয়াতেই এখন নিত্যনতুন স্লোগানের জন্ম দিয়ে চলেছে দলগুলি। এ রাজ্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোরে প্রায় রোজই টুইটারে নতুন নতুন হ্যাশট্যাগ স্লোগান ছড়িয়ে পড়ছে। যা কখনও তীর্যক, কখনও চটুলও।

May 16, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মিটিং-মিছিল প্রায় দু’মাস বন্ধ। তা বলে রাজনীতির লড়াই তো আর থেমে নেই। লড়াই এখন হ্যাশট্যাগে। সেখানেই চলছে স্লোগানের যুদ্ধ। প্রতিপক্ষকে জবাব দিতে মগজ খাটিয়ে নেট-দুনিয়াতেই এখন নিত্যনতুন স্লোগানের জন্ম দিয়ে চলেছে দলগুলি। এ রাজ্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূল-বিজেপির চাপানউতোরে প্রায় রোজই টুইটারে নতুন নতুন হ্যাশট্যাগ স্লোগান ছড়িয়ে পড়ছে। যা কখনও তীর্যক, কখনও চটুলও।

বহু আগে কবিগানে একে অন্যের যুক্তি কাটতেন বাঁধনদাররা। বছর দশেক আগেও ভোট এলে পাড়ার দেওয়ালে ছন্দের-যুদ্ধ দেখত লোকে। এখন সে-সব দিন গিয়েছে। নেট দুনিয়ায় বছরভরই ডিজিটাল প্লেটে প্রতিপক্ষকে বেঁধার প্রবণতা বেড়েছে গত কয়েক বছরে। এই লকডাউন-পর্বে রাস্তার লড়াই একেবারেই বন্ধ থাকায় ঘরে বসে প্রতিপক্ষকে আক্রমণে ‘শিল্পকর্ম’ দেখানোর ঝোঁক আরও বেড়েছে। তবে সব সময় যে লড়াইয়ের জন্যই স্লোগান তৈরি হচ্ছে, এমন নয়। নিজের দল বা সরকারের মহিমা গাইতেও তৈরি হয়েছে অজস্র স্লোগান।

তৃণমূলকে বিঁধতে বিজেপি চালু করেছিল,‘ভয় পেয়েছে মমতা’। এই তিনটি শব্দকে হাতিয়ার করে সকাল থেকে রাত বিজেপির ছোট-বড়-মাঝারি নেতারা কয়েক দিন তৃণমূলকে ক্রমাগত আক্রমণ শানিয়েছেন। পরে তৃণমূলের ডিজিটাল থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক চালু করে দেয়, ‘ভাট বকছে বিজেপি।’ একেবারে আড্ডার বাংলায় এই হ্যাশট্যাগ স্লোগান মনে ধরেছে অপেক্ষাকৃত তরুণ প্রজন্মের ঘাসফুল-ভক্তদের। বিজেপিকে উপেক্ষায় টুইটারে তাঁরা দেদার ব্যবহার করেছেন এই স্লোগান।

মিছিল বন্ধ, স্লোগান-যুদ্ধ এখন টুইটের হ্যাশট্যাগে

করোনার আবহে এখন খুব চলছে, ‘চিন্তা নেই দিদি আছে।’ কেউ আবার এটাকেই উল্টে দিয়ে লিখছেন, ‘দিদি আছে চিন্তা নেই।’ মাঝে কিছুদিন বিজেপি চালু করেছিল, ‘কোথায় আছে মমতা’? এই ভাবে পদ্ম-শিবির প্রচার করতে চেয়েছিল, করোনা মোকাবিলায় ‘ব্যর্থ’ হয়ে মুখ্যমন্ত্রী আর জনসমক্ষে আসছেন না। শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়র মতো জাতীয় স্তরের বিজেপি নেতারাও তাঁদের প্রতিটি টুইটে এই হ্যাশট্যাগ ঘন-ঘন ব্যবহার করছিলেন বেশ কয়েক দিন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করাতে বড় সব প্রকল্প নিয়ে হাজির হতেই বিজেপির সেই জিজ্ঞাসা-সূচক স্লোগান অপ্রাসঙ্গিক হয়েছে। পাল্টা তৃণমূল চালু করেছে, ‘মানুষের পাশে দিদি।’

হাত গুটিয়ে বসে নেই বিজেপিও। শুক্রবার দিনভর বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে টুইটের হিড়িক পড়ে ফের। মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধে গেরুয়া শিবিরের নেতা-কর্মীরা টুইটে লেখেন, ‘মমতা ডাহা ফেল।’ বিজেপি সূত্রের খবর, করোনা-আবহে সপ্তাহে অন্তত দু’তিন দিন টুইটারে তৃণমূলকে এ ভাবেই আক্রমণ শানানো হবে। সম্প্রতি ভিডিয়ো কনফারেন্স করেও বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দলের আইটি সেলের নেতাদের জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু চমকপ্রদ ক্যাচলাইন তৈরি করে রাখতে। কেননা, যতদিন পথে নামা বা সরাসরি সাধারণ মানুষের বাড়ি-বাড়ি পৌঁছনো যাচ্ছে না, ততদিন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেই দলের কথা মানুষের ফোনে ফোনে পৌঁছে দিতে হবে।

ফেসবুক, টুইটারে তৃণমূল-সমর্থকদের অ্যাকাউন্টও অবশ্য দিন-দিন বাড়ছে। কয়েকদিন আগে তৃণমূলনেত্রী তাঁর দলকে বিজেপির বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় আরও সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেন। তার পর থেকে তৃণমূল সমর্থকদের অ্যাকাউন্টগুলিতে বিজেপি-বিরোধী সক্রিয়তা বেড়েছে বহু গুন। মুখ্যমন্ত্রীর একটি করে নতুন প্রকল্পের কথা তুলে ধরে তাঁরা হ্যাশটাগে লিখছেন ‘মিথ্যেবাদী বিজেপি’। ডিজিটাল প্লেটের পাশাপাশি চল বেড়েছে নানা রংয়ের স্কেচেরও।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen