বাংলায় বিদ্যুৎ-বরাদ্দ কমে ১২ ভাগের ১ ভাগ! অভিষেকের প্রশ্নের উত্তরে প্রকাশ্যে কেন্দ্রের বঞ্চনা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:৪১: ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনা বা স্বাস্থ্য, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ‘বঞ্চনা’র অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলো বিদ্যুৎ পরিষেবাও। বাংলার প্রতি বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ তুলে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হলো তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের জন্য বিদ্যুতের বরাদ্দ কমিয়ে একেবারে তলানিতে নিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকার। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) একটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক যে পরিসংখ্যান পেশ করেছে, তাতেই এই ‘বৈষম্য’ স্পষ্ট হয়েছে বলে দাবি শাসকদলের।
লোকসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন, বাংলার জন্য বিদ্যুতের বরাদ্দ (Electricity allocation) কত এবং অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় তা কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ? এই প্রশ্নের লিখিত উত্তরে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীপদ নায়েক যে হিসাব পেশ করেছেন, তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘রিভাম্পড ডিস্ট্রিবিউশন সেক্টর স্কিম’ (RDSS)-এর আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বাংলার জন্য বরাদ্দ ছিল ৬০১ কোটি টাকা। অথচ, ২৮ নভেম্বরের হিসাব অনুযায়ী ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের জন্য সেই বরাদ্দ কমিয়ে করা হয়েছে মাত্র ৪৯ কোটি টাকা। অর্থাৎ, মাত্র এক বছরের ব্যবধানে বাংলার বরাদ্দ কমে দাঁড়িয়েছে পূর্বের ১২ ভাগের ১ ভাগে। ৫০ কোটি টাকারও নিচে নেমে এসেছে এই কেন্দ্রীয় সাহায্য।
বাংলার ক্ষেত্রে যখন বরাদ্দের এই করুণ দশা, তখন বিজেপি (BJP) শাসিত ‘ডবল ইঞ্জিন’ (Double engine) রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে চিত্রটা সম্পূর্ণ বিপরীত। অভিষেকের প্রশ্নের উত্তরে উঠে এসেছে সেই তথ্যও। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গুজরাট, হরিয়ানা বা ছত্তিশগড়ের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে বিদ্যুতের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কয়েকশো কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ (Madhya Pradesh)। সে রাজ্যের জন্য কেন্দ্র বরাদ্দ করেছে ১,২৩৫ কোটি টাকা।
স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রের এই উত্তরের পর রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বাংলা-বিরোধিতার কারণেই এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংসদের চলমান শীতকালীন অধিবেশনে এই ইস্যুতে মোদী সরকারের (Modi government) বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। দলের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আবাসন বা ১০০ দিনের কাজের মতোই বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও এই বঞ্চনার জবাব গণতান্ত্রিক পথেই দেবে বাংলার মানুষ।