মোদী ম্যাজিক বা দলবদলু নেতা নয়, বঙ্গবিজয়ে সঙ্ঘঘনিষ্ঠকেই তুরুপের তাস করার ভাবনা RSS-র

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:২৭: ক্যালেন্ডার বদলালেই বাংলায় শুরু হবে নীল বাড়ি দখলেই লড়াই। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে মোদী-শাহের বিজয়রথ রুখে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে কেবল বাংলায় ভোটে ধাক্কাই জুটছে বিজেপির কাপলে। কালীগঞ্জেও গোহারা হেরেছে বিজেপি। বারবার প্রশ্ন উঠেছে বঙ্গ বিজেপি তথা সুকান্ত, শুভেন্দুদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে। শোনা যাচ্ছে, এবার মাঠে নামছে সঙ্ঘ(RSS)। মোদী ম্যাজিক, দলবদলু নেতাদের আর ভরসা নয়? প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে যে, বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী মুখ সামনে রেখেই লড়াইয়ে নামবে গেরুয়া শিবির। বার্তা পৌঁছে গিয়েছে বঙ্গ বিজেপিতেও।
আরএসএস (RSS) কার্যত হুকুম দিয়েছে, সঙ্ঘের ‘লোক’কেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করতে হবে। তা না হলে সংশ্লিষ্ট মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থীর নামে অনুমোদনই দেবে না সঙ্ঘ। সাফ কথায়, সঙ্ঘঘনিষ্ঠ কাউকে সামনে রেখে বাংলায় বিধানসভা ভোটে লড়তে হবে বিজেপিকে। সূত্রের খবর, বঙ্গের গেরুয়া নেতাদের সাফ বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী নির্বাচনে নিজের কেন্দ্রে ভাল ফল করার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে বিবেচ্য হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। সঙ্ঘের দায়িত্ব সামলানোর অভিজ্ঞতাই হবে আসল মাপকাঠি। সঙ্ঘের ফরমানে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
সঙ্ঘ যা শর্ত চাপিয়েছে তাতে প্রথমেই বাদ পড়বেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এ জল্পনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে রাজ্য বিজেপির অন্যতম সহ-সভাপতি তথা সাংসদ এবং সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠ জগন্নাথ সরকারের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য। দিল্লিতে দাঁড়িয়ে তিনি বলেছেন, “বিজেপি আদর্শবাদী দল। বিধানসভা নির্বাচনে মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসেবে যদি কাউকে বেছে নেওয়ার পরিকল্পনা হয়েও থাকে, তবে তা বিজেপির ঘরানা মেনে হওয়াই প্রয়োজন। বিজেপি তথা সঙ্ঘের একটি নির্দিষ্ট পরিচয় আছে।
তা কোনওমতেই ক্ষুণ্ণ হওয়া উচিত নয়। যিনি সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন, তাঁর রাজনৈতিক স্বচ্ছতাও থাকতে হবে। সাধারণ মানুষকে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপির ফারাক বোঝাতে হবে। দল এবং সঙ্ঘের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা নিশ্চয়ই সবদিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, কোনও ব্যক্তিকে মুখ না-করে লড়লে ভোটে দাঁড়াতেই পারবে না বিজেপি। উল্টোদিকে রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখের অভিঘাত। খোদ মোদীও তাঁর সামনে দাঁড়াতে পারেননি। ভোট দিতে যাওয়ার সময় বাংলার মানুষ গ্রহণযোগ্য মুখ দেখতে চায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য মুখ বাংলায় এখনও নেই। সঙ্ঘঘনিষ্ঠ, মমতার বিকল্প এবং বাঙালির মন জিততে পারে এমন মুখ খোঁজা কার্যত অসম্ভব বলেই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। তবে কি এবারেও অসম লড়াইয়ে নামবে বিজেপি? অন্যদিকে, এই সিদ্ধান্তের পর শুভেন্দু কি রাজনৈতিক সক্রিয়তা কমাবেন? তাঁর গতিপ্রকৃতির দিকে নজর থাকবে।