ভারতীয় মুদ্রার রেকর্ড পতন, উদ্বেগ বাড়িয়ে ডলারের দাম ৮২টাকা পেরিয়ে গেল

পাইকারি বাজার দর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে, পণ্য উৎপাদনকারীরা ধাক্কা খান। পণ্যের দামে বোঝা চাপে। সেই বোঝা খুচরো বাজারে ক্রেতার উপরে বসে। আদপে গোটা শৃঙ্খলটাই ভেঙে পড়ে।

October 7, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মোদী সরকারের ভ্রান্ত আর্থিকনীতি আর সেই সঙ্গে কোভিডের ধাক্কায় থমকে গিয়েছে ভারতের অর্থনীতি। বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি আর সেই সঙ্গে মাত্রাতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধির দৌলতে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। খুচরোর মতোই পাইকারি বাজারের মূল্যবৃদ্ধিও চাপ বাড়াচ্ছে। সংখ্যাতত্ত্বের হিসেবে তা কমলেও জিনিসের দাম কমছে না।

গোদের উপর বিষফোঁড়া হল টাকার (Rupee) দরের রেকর্ড পতন। এবার মার্কিন ডলারের দাম পেরিয়ে গেল ৮২ টাকা। শুক্রবার সকালে বাজার খুলতেই ৩৩ পয়সা পড়ে যায় টাকার দাম। শতকরা হিসাবে সেটা ০.৪১ শতাংশ। এই বিরাট পতনের ফলে টাকার নতুন দাম দাঁড়ায় ৮২ টাকা ২২ পয়সা। কমতে কমতে একটা সময় ডলারের তুলনায় টাকার দাম দাঁড়ায় ৮২ টাকা ৩৩ পয়সা। এই প্রথমবার ৮২ টাকা পেরল ভারতীয় মুদ্রার দাম।

গত ১৪ জুলাই এক ডলারের (US dollar) মূল্য ৮০ টাকা ছুঁয়েছে। সেই সময়ই আশঙ্কা করা হয়েছিল টাকার দর আরও পড়তে পারে। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের ব্যারেল প্রতি দর কমে ৯৭ ডলারে পৌঁছলেও আমজনতা তার সুফল পাচ্ছে না। ফলে ভারতে রান্নার গ্যাস থেকে শুরু করে পেট্রল-ডিজেলের দাম কমার কোন সম্ভাবনাই নেই। অপরিশোধিত তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস খাতে ৭৭.২৯%, জ্বালানি এবং বিদ্যুতে ৪০.৩৮% মূল্যবৃদ্ধির বাড়তি বোঝা রয়েছে।

ইউপিএ আমলে টাকার মূল্যের পতন নিয়ে, সরকারকে নিত্যদিন আক্রমণ করত বিজেপি (BJP)। এবারে বিজেপির আমলে পরিস্থিতি আরও খারাপ, বিরোধীরা মোদী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করছেন। খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার বাড়লে সাধারণ মানুষ সরাসরি বিপদের সম্মুখীন হন। মূল্যবৃদ্ধির জেরে পকেটে টান পড়ে। আর দেশে একই সঙ্গে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির জোড়া ফলার আক্রমণে সাধারণ মানুষ একেবারেই খাদের কিনারে এসে দাঁড়িয়েছে। ক্রয় ক্ষমতা দেশের অধিকাংশ মানুষের নাগালের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে।

উদ্বেগের অবশ্য এখানেই শেষ নয়। আরও দুঃসংবাদ রয়েছে অর্থনীতির বাজারে। পরিষেবা ক্ষেত্রে দেশের বৃদ্ধির হার গত ছ’মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন অঙ্কে নেমে গিয়েছে সেপ্টেম্বর মাসে। মুদ্রাস্ফীতি (Inflation), প্রতিযোগিতা এবং জনমুখী নয় এমন কিছু নীতির কারণেই বৃদ্ধির গত রোধ হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। গত মার্চের পর এত নিচে বৃদ্ধির গতি আর আসেনি। গ্লোবাল ইন্ডিয়া সার্ভিস পারচেজ ম্যা নেজার ইনডেক্স-এর সূচকেই এই পরিসংখ্যাান ধরা পড়েছে। গত আগস্টে এই সূচক ছিল ৫৭.২ অঙ্কে। সেপ্টেম্বরে তা নেমে দাঁড়ায় ৫৪.৩-এ। আগস্ট মাসেই দেশে কর্মসংস্থানে জোয়ার আসছে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু পরিষেবা ক্ষেত্রে বৃদ্ধির গতি রোধ হওয়ায় কর্মসংস্থানেও টান পড়েছে।

পাইকারি বাজার দর বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে, পণ্য উৎপাদনকারীরা ধাক্কা খান। পণ্যের দামে বোঝা চাপে। সেই বোঝা খুচরো বাজারে ক্রেতার উপরে বসে। আদপে গোটা শৃঙ্খলটাই ভেঙে পড়ে। যার ফল অর্থনৈতিক দৈনদশা, সেই আঁধারের ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে দেশ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen