৭৫০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করে আয় মাত্র ৬৬৪ টাকা! ডবল ইঞ্জিন মহারাষ্ট্রের কৃষক সমাজে শুধুই হাহাকার

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:১৫: বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রের পুনে (Pune) জেলার পুরন্ধর এলাকার কৃষক সুদাম ইঙ্গেল। প্রায় ৬৬ হাজার টাকা খরচ করে দেড় একর জমিতে পেঁয়াজ (onions) চাষ করেছিলেন তিনি। অতিবৃষ্টির কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পরেও ৭৫০ কেজি পেঁয়াজ তুলতে সক্ষম হন। কিন্তু বাজারে সেই ফসল বিক্রি করে তাঁর হাতে আসে মাত্র ৬৬৪ টাকা।
এই ঘটনায় শুধু সুদাম নয়, গোটা মহারাষ্ট্রের কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। বৃষ্টির ধাক্কা সামলানোর পর এবার দামের পতনের ধাক্কায় বিপর্যস্ত কৃষক সমাজ। শুধু পেঁয়াজ নয়, টমেটো, আলু, সোয়াবিন-সহ একাধিক ফসলের দামও তলানিতে। দীপাবলির উৎসবের সময়েও কৃষকদের ঘরে নেই আনন্দ, আছে শুধুই হাহাকার।
লাসালগাঁও এপিএমসি, যা এশিয়ার বৃহত্তম পেঁয়াজ বাজার, সেখানেও দীপাবলির (Diwali) আগে পেঁয়াজের দাম ছিল গড়ে ১০৫০ টাকা কুইন্টাল। কিন্তু হঠাৎই সেই দামে ভয়াবহ পতন দেখা দেয়। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, গ্রীষ্মকালে বাম্পার ফলনের পর অনেক কৃষক সংরক্ষিত পেঁয়াজ এখন বিক্রি করছেন, যার বেশিরভাগই নিম্নমানের এবং বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত।
সুদাম জানিয়েছেন, ক্ষেত প্রস্তুত থেকে শুরু করে ফসল কাটা ও বাজারে পাঠানো পর্যন্ত খরচ হয়েছে বিপুল পরিমাণে। কিন্তু ৯০ শতাংশ পেঁয়াজ মাত্র ২-৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হয়েছে। অল্প কিছু পেঁয়াজ ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে হাতে এসেছে মাত্র ৬৬৪ টাকা।
এই পরিস্থিতির জন্য কৃষকরা সরকারের নীতিকেই দায়ী করছেন। তাঁদের অভিযোগ, খুচরো বাজারে পেঁয়াজের দাম ভালো হলেও মধ্যস্বত্বভোগীরা লাভের বড় অংশ নিয়ে নিচ্ছে। কোল্ড স্টোরেজের দুরবস্থা এবং রপ্তানি নীতির অস্থিরতা কৃষকদের আরও বিপদে ফেলেছে। ২০২৩ সালে রপ্তানি নিষিদ্ধ করার ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। পরে নিষেধাজ্ঞা উঠলেও ক্ষতি পূরণ হয়নি।
কৃষকদের দাবি, বাজারে দাম কমলে সরকার যেন সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ন্যায্য দামে পেঁয়াজ কেনে। নীতিগত স্থিতিশীলতা এবং কৃষকবান্ধব পদক্ষেপ ছাড়া এই সংকট কাটানো সম্ভব নয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।