SIR আতঙ্কে শেওড়াফুলিতে অপমৃত্যু যৌনকর্মীর, রাজ্যে মৃত বেড়ে ১৬

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:০৮: SIR আতঙ্কে রাজ্যজুড়ে চলছে মৃত্যুর মিছিল। শুক্রবার হুগলির (Hoogly) শেওড়াফুলিতে এক যৌনকর্মীর অপমৃত্যু এবং আরও তিন জেলায় মৃত্যুর ঘটনায় ফের প্রশ্ন উঠছে এই SIR-র কার্যকারিতা নিয়ে।
শেওড়াফুলি স্টেশন লাগোয়া গড়বাগান যৌনপল্লির বাসিন্দা বিতি দাস (Biti Das) (৪৯)-এর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রতিবেশীদের দাবি, সকাল থেকে সাড়া না পেয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ দরজা ভেঙে দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় কাউন্সিলর ও তৃণমূল (TMC) নেতারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। অভিযোগ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় (Voter List 2002) বিতির নাম না থাকায় তিনি আতঙ্কিত ছিলেন। এসআইআর ফর্ম (SIR Form) জমা দেওয়ার পর থেকেই মানসিক চাপ বাড়ে বলে দাবি।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপির ঢোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের কালীচরণপুর গ্রামের বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন পাইক (৪৫) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরিবারের দাবি, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নিজের ও স্ত্রীর নাম না-থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই তিনি মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন। উপরন্তু, স্ত্রীর নথিতে গরমিল ধরা পড়ায় তাঁর আতঙ্ক আরও বেড়ে যায়। এই চাপের মধ্যেই বৃহস্পতিবার সকালে তিনি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন। প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরে তাঁকে ডায়মন্ড হারবার গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বীরভূমের সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিমান প্রামাণিকের মৃত্যুও এসআইআর আতঙ্কের সঙ্গে জড়িত বলে দাবি পরিবারের। জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর ও দিদি মল্লিকার পদবি ‘প্রামাণিক’-এর বদলে ‘পাল’ লেখা হয়েছিল। এই ভুল নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত ছিলেন এবং স্থানীয় কাউন্সিলর ও বিএলও-র সঙ্গে যোগাযোগও করেছিলেন। যদিও আশ্বাস পেয়েছিলেন, কিন্তু উদ্বেগ কাটেনি। বুধবার সন্ধ্যায় আচমকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাঁকে সাঁইথিয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে ততক্ষণে তাঁর মৃত্যু হয়।
জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি মহকুমার বারঘরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিণ ডাঙা পাড়ার বাসিন্দা লালুরাম বর্মণের মৃত্যুও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, তাঁর বাড়িতে বিএলও এসে এনুমারেশন ফর্ম দিয়ে যাওয়ার পরই তিনি আত্মহত্যা করেন। জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ছিল না, এবং সেই কারণেই তিনি মানসিক চাপে ছিলেন।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) নির্দেশে কুলপিতে মৃতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে যান বিধায়ক ও সাংসদ। তাঁদের দাবি, “এসআইআর নিয়ে রাজ্যজুড়ে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। এর দায় কেন্দ্র ও নির্বাচন কমিশনের।”