অসমে SR ঘোষণা, তৃণমূল-সহ বিরোধীদের চাপেই কি সিদ্ধান্ত কমিশনের?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৩৫: অসমেও শুরু হচ্ছে ভোটার তালিকার ‘বিশেষ সংশোধন’ (Special Revision)। সোমবার নির্বাচন কমিশনের (Election Commission of India) তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, রাজ্যে চালু হবে Special Revision বা SR। নাম আলাদা হলেও কার্যত এটি দেশের অন্যান্য রাজ্যে চলা বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা এসআইআর-এরই (SIR) সমতুল্য। ফলে এবার অসমেও (Assam) একই প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা সংশোধন হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ১৮ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরপর ২২ নভেম্বর থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিএলওরা (BLO) ভোটার তালিকা (Voter List) যাচাই, ভোটকেন্দ্র পুনর্বিন্যাস এবং ভোটার কার্ড (Voter Card) সংশোধনের কাজ করবেন। খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৭ ডিসেম্বর। অভিযোগ জানানোর সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে ২৭ ডিসেম্বর থেকে ২২ জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে আগামী ১০ ফেব্রুয়ারি। কমিশন জানিয়েছে, এই বিশেষ সংশোধনে ডি-ভোটার (D-Voter) বা ‘ডাউটফুল ভোটার’দের নাম-ঠিকানা পরিবর্তন করা হবে না। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনাল বা আদালতের নির্দেশ ছাড়া তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যাবে না।
নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার সাংবাদিক বৈঠকে জানান, “সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে অসমে এনআরসি প্রায় শেষের পথে। এছাড়া উত্তর-পূর্বের ওই রাজ্যের নিজস্ব বিধানও রয়েছে। তাই এসআইআর প্রক্রিয়া থেকে অসমকে বাদ রাখা হয়েছে। অসমের জন্য আলাদা করে নির্দেশিকা জারি করা হবে এবং পৃথক তারিখ ঘোষণা করা হবে।”
গত ২৭ অক্টোবর বাংলা-সহ ১২ রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এসআইআর (SIR) শুরু হলেও অসমকে বাদ রাখা হয়েছিল। সেই সময় নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar) জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) নজরদারিতে এনআরসি (NRC) প্রায় শেষের পথে এবং রাজ্যের নিজস্ব বিধান থাকায় আলাদা নির্দেশিকা জারি করা হবে। তিনি দাবি করেছিলেন, এনআরসির ৯৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকিটা শেষ হলেই বিশেষ সংশোধন ঘোষণা হবে। তবে এবারের ঘোষণায় এনআরসির কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে কি না, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক মহলের মতে, মাত্র ২১ দিনের ব্যবধানে এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যে বিরোধীদের চাপই মূল কারণ। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) অসমকে বাদ দেওয়ার প্রশ্ন তুলেছিলেন। দেশের অন্যান্য বিরোধী দলও কমিশনের সমালোচনা করে। সেই চাপের মুখেই এবার অসমে বিশেষ সংশোধন ঘোষণা করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।