সিনেমা হলগুলিতে ‘প্রাইম টাইমে’ বাংলা ছবি দেখাতেই হবে, নির্দেশ রাজ্যের
বাংলা ছবির শো পাওয়া নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সেই বৈঠকে বাংলা ছবির মুক্তি নিয়েও এক প্রস্তাব রাখা হয় ‘ইম্পা’র তরফে।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৩৭: বৈষম্যের শিকার বাংলা ছবি। কয়েক বছর ধরেই বাংলা ছবি নিজের রাজ্যেই কদর পায় না। বলিউডের বিগ বাজেট ছবির দাপটে প্রাইম টাইমে শো দেওয়া হয় না বাংলা ছবিকে। ফলে মুক্তির পর দ্বিতীয় সপ্তাহ পৌঁছানোর আগেই প্রেক্ষাগৃহ থেকে নামিয়ে দেওয়া হয় বহু ছবি। এরকম একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে মিলিতভাবে সরাসরি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, দেব, শ্রীকান্ত মোহতা, নিসপাল সিং রানে, কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়রা। নন্দনে রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, বৈঠকের ডাক দেন প্রসেনজিৎদের। বাংলা ছবির শো পাওয়া নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সেই বৈঠকে বাংলা ছবির মুক্তি নিয়েও এক প্রস্তাব রাখা হয় ‘ইম্পা’র তরফে।

এরপর রাজ্যের তরফ থেকে নির্দেশিকা জারি করা হয়। যেখানে বলে দেওয়া আছে বেশ কিছু নিয়ম। এবার থেকে, প্রতিটি সিনেমা হলে এবং এই রাজ্যে অবস্থিত প্রতিটি মাল্টিপ্লেক্সের সমস্ত স্ক্রিনে (প্রতিটি স্ক্রিনে) ৩৬৫ টি প্রাইম টাইম শো/স্ক্রিনিং বাধ্যতামূলকভাবে চালাতে। অর্থাৎ বছরের ৩৬৫ দিন রোজ কমপক্ষে একটি করে বাংলা শো রাখতে হবে। প্রাইম টাইম শো অর্থাৎ বিকেল ৩:০০ টা থেকে রাত ৯.০০ টা পর্যন্ত।
একই সময় বাংলা ছবি ও হিন্দি ছবি মুক্তি পেলে, এ রাজ্যে টলিউডকেই পিছনে ফেলে দেয় বলিউড। প্রাইম টাইমে শো দেওয়া হয় না বাংলা ছবিকে। এই সমস্যার সমাধানের আশায় একজোট হন টলিউড তারকারা। সেদিনের বৈঠকের পরে দেব বলেন, “সমস্ত ডিস্ট্রিবিউটর ও এক্সিবিটর অর্থাৎ সিনেমা হলের মালিকদের ধন্যবাদ জানাই। হিন্দি ছবি এলেই বলে বাংলা ছবি চালাতে দেব না। আমাদের মনে হয় এটা বন্ধ হওয়া উচিত। কারণ এই নিয়ম ভারতবর্ষের কোথাও নেই। দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রি হোক পঞ্জাব, এই নিয়ম কোথাও নেই। আমাদের উপর জোর করে চাপিয়ে দিতে চাইছে। এটা আমি ফেস করেছি ‘টনিক’ মুক্তির সময় ‘৮৩’ এসেছিল।”
উৎসবের মরসুমে একগুচ্ছ বাংলা ছবি মুক্তি পাওয়া এ যেন খুব চেনা ছবি। এবার তাতেই বেশকিছুটা বদল আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে ‘ইম্পা’র তরফে। বাঙালির বার মাসে তেরো পার্বণ। আর সেই পার্বণগুলির মধ্যে মোট ছ’টি পার্বণে বাংলা ছবি মুক্তির রমরমা থাকে। একগুচ্ছ বাংলা ছবি মুক্তি পাওয়ার বিষয়ে এবার বেশ কিছুটা বদল হতে চলেছে। ‘ইম্পার’ তরফে জানানো হয়েছে যে কোনও ছ’টি উৎসবের মধ্যে দু’টি উৎসবেই যে কোনও প্রযোজনা সংস্থা তাদের ২টি ছবিই রিলিজ করতে পারবে। বছরের অন্যান্য সময়ে ছবি মুক্তি পেলে তা যদিও এই তালিকায় থাকবে না। তবে সব উৎসবেই সমস্ত প্রযোজনা সংস্থা ছবি মুক্তি দিতে পারবে না। যে কোনও প্রযোজনা সংস্থাকে তার জন্য বেছে নিতে হবে দু’টি উৎসব। তবে সেক্ষেত্রে প্রশ্ন থেকেই যায় যে চলতি বছরের শুরুতে অর্থাৎ ২৩ জানুয়ারি মুক্তি পেয়েছিল এসভিএফ এর ছবি ‘সত্যি বলে সত্যি কিছু নেই’। অন্যদিকে একইসময়ে মুক্তি পেয়েছিল দেবের প্রযোজনা সংস্থার ছবি ‘বিনোদিনী একটি নটীর উপাখ্যান’।
অন্যদিকে আগামিকাল অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে মুক্তি পাচ্ছে দেবের আরও এক ছবি ‘ধূমকেতু’। অন্যদিকে এসভিএফ ও দেবের যৌথ প্রযোজনায় আসছে এই পুজোতে ‘রঘু ডাকাত’। শুধু তাই নয় পয়লা বৈশাখে মুক্তি পেয়েছিল ‘কিলবিল সোসাইটি’। এছাড়াও বড়দিনে ফের মুক্তি পাবে এসভিএফের দু’টি ছবি ‘লহ গৌরাঙ্গের নাম রে’ এবং ‘কাকাবাবু’ অবলম্বনে ‘বিজয়নগরের হীরে’ একইসঙ্গে দেবের প্রযোজনা সংস্থার আরও এক ছবি ‘প্রজাপতি ২’।