রক্ষাকবচে ‘না’, আরজি করের আন্দোলনকারী ডাক্তারদের নিয়ে কড়া বার্তা সুপ্রিম কোর্টের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:৩৩: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে নির্যাতিত তরুণী চিকিৎসকের বিচারের (RG Kar Case) দাবিতে আন্দোলনরত ডাক্তারদের রক্ষাকবচ দিতে অস্বীকৃতি জানাল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) । বুধবার সকালে বিচারপতি এমএম সুন্দরেশ এবং সতীশ চন্দ্র শর্মার বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়, দিল্লি থেকে কলকাতার আন্দোলনে নজরদারি চালানো সম্ভব নয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিলে তা পুলিশ প্রশাসনের এক্তিয়ারে হস্তক্ষেপের সমান হবে।
বেঞ্চের মন্তব্য, “আমাদের অনেক কিছু সামলাতে হচ্ছে। এর কোনও শেষ নেই। বরং কলকাতা হাইকোর্ট এই বিক্ষোভ-আন্দোলনে নজরদারি চালাক। দিল্লিতে বসে কলকাতার প্রতিবাদে নজরদারি করা কি সম্ভব? ডাক্তারদের সার্বিক নিরাপত্তার নির্দেশ কীভাবে দেব? পুলিশ কাউকে তলব করতেই পারে, সেই অধিকার তাদের আছে।”
এদিন আদালতে জুনিয়র ও সিনিয়র চিকিৎসকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ আইনজীবী করুণা নন্দী। তিনি জানান, আন্দোলনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকদের পুলিশ বারবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠাচ্ছে এবং হেনস্তা করছে। ডাক্তারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদালতের হস্তক্ষেপ চান তিনি। তবে বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, এই মামলাগুলি কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) পেশ করতে হবে। শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট, ভবিষ্যতে এই মামলা কলকাতা হাইকোর্টেই স্থানান্তরিত হবে। শুনানি হবে শীতকালীন ছুটির পরে।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৯ আগস্ট আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের (RG Kar Medical College) চারতলার সেমিনার রুমে এক তরুণী চিকিৎসকের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। তিনি স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়া ছিলেন। কর্তব্যরত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। অভিযোগ ওঠে, তাঁকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছে। পরদিনই হাসপাতালের সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেপ্তার করা হয়। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি শিয়ালদা আদালত সঞ্জয় রায়কে (Sanjay Roy) একমাত্র দোষী সাব্যস্ত করে আজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়।
এই নৃশংস ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য, দেশ তথা বিদেশের চিকিৎসকরা আন্দোলনে নামেন। কলকাতায় জুনিয়র ডাক্তারদের ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় (D Y Chandrachud) এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করেছিলেন। গত বছরের ২০ আগস্ট গঠিত হয় ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স (National Task Force) (NTF), যার উদ্দেশ দেশের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রোটোকল তৈরি করা।