বিহারে শূন্যে জন সুরাজ, রাজনীতি ছাড়ছেন প্রশান্ত কিশোর! কী বললেন পিকে?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:৫০: বিহার নির্বাচনে (Bihar Assembly Elections) জেডিইউ (JDU) ২৫ পার করলে সন্ন্যাস নেবেন বলে জানিয়েছিলেন ‘ভোট কুশলী’ প্রশান্ত কিশোর। তবে তাঁর সেই ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যে প্রমাণ করে জেডিইউ পেয়েছে ৮৫ আসন। অন্যদিকে পিকের দল ২৩৮টি আসনে লড়ে পেয়েছে শূন্য। এই আবহে মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন পিকে। তিনি নিজের সন্ন্যাস নেওয়ার দাবি থেকে ইউটার্ন করে অভিযোগ করেন, ‘বিহারে টাকা দিয়ে ভোট কিনেছেন নীতীশ কুমার।’
প্রশান্ত কিশোর বলেন, “যাঁরা মনে করছেন আমি বিহার ছাড়ব, তাঁরা ভুল ভাবছেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত কেউ নিজেকে লড়াই থেকে সরিয়ে নিচ্ছে, তাকে পরাজিত বলা যায় না।” তিনি ফের স্পষ্ট করে দেন, জেডিইউকে (JDU) নিয়ে তাঁর আগের মন্তব্যে তিনি অনড়। তাঁর কথায়, “ভোটের আগে করা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী যদি নীতীশ কুমার ১.৫ কোটি মহিলাকে মাথাপিছু দুই লক্ষ টাকা দেন এবং ভোট কিনে জয়ী না হওয়ার বিষয়টি প্রমাণ করেন, সেই ক্ষেত্রে আমি রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াব।”
জন সুরাজের ব্যর্থতা প্রসঙ্গে পিকে জানান, “আমরা আমাদের তরফে সব চেষ্টা করেছি। আমরা সরকার পরিবর্তন করতে পারিনি। আমি সমস্ত দায় নিজের উপরে নিলাম। আমরা আত্মসমীক্ষা করব। আমাদের সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার জন্য আমরা দুঃখিত।”
জেডিইউকে ২৫টি আসনও পেতে না দেওয়ার দাবি নিয়ে বিতর্কের প্রসঙ্গেও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেন পিকে। বলেন, “আমি বলেছিলাম জেডিইউ ২৫টির কম আসন পাবে এবং জন সুরজ হয় শীর্ষে অথবা সবচেয়ে নিচে পৌঁছবে। আমার দ্বিতীয় মন্তব্যটি সত্য প্রমাণ হয়েছে।”
ব্যর্থতার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পিকে বলেন, “আমরা সৎভাবে চেষ্টা করেছি। কিন্তু প্রচেষ্টা পুরোপুরি ব্যর্থ। জনগণ আমাদের সমর্থন দেয়নি, তার দায় ১০০ শতাংশ আমার।” আরও যোগ করেন, “ভোটারদের সঙ্গে আমাদের যে যোগাযোগ হওয়া উচিত ছিল, সে জায়গায় আমিই ব্যর্থ হয়েছি।” এই ব্যর্থতার প্রায়শ্চিত্ত হিসেবেই ২০ নভেম্বর ভিটিহারওয়া আশ্রমে একদিনের নীরব উপবাসে বসার ঘোষণা করেন তিনি।
বিহার ভোটে চিত্র স্পষ্ট। এনডিএ (NDA) পেয়েছে তিন-চতুর্থাংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। বিজেপি (BJP) ৮৯, জেডিইউ ৮৫, এলজেপি (LJP) (আরভি) ১৯, হাম ৫, আরএলএম ৪। অন্যদিকে মহাগঠবন্ধনের ঝুলিতে মাত্র ৩৪টি আসন। আরজেডি পেয়েছে ২৫, কংগ্রেস ৬, বামফ্রন্টের তিনটি দল মিলিয়ে ৩।
প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরাজ পেয়েছে ৩.৪৪ শতাংশ ভোট, একটিও আসন নয়। ৬৮টি আসনে নোটাকেও পেরোতে পারেনি। তবু লড়াই ছাড়তে নারাজ তিনি। পিকে জানান, “পিছিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই নেই। বিহারকে বদলানোর যে অঙ্গীকার করেছি, তা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। আগের তিন বছরের তুলনায় এখন আরও দ্বিগুণ পরিশ্রম করব।”