ছাত্রদের সামনে রেখে হাসিনাকে গদিচ্যূত করার প্ল্যান দু’বছর ধরে চালিয়ে গেছে তারেক ও আইএসআই?

গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

August 8, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অন্তর্বর্তী সরকারের হাতেই আপাতত থাকবে বাংলাদেশ। তার প্রধান হিসাবে নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনুসের নামই প্রস্তাব করা হয়েছে। এই সরকারকে কারা থাকবেন সেই তালিকা ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতির হাতে তুলে দিয়েছেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে গত ৪৮ ঘণ্টা সেনার শাসনে থাকার পরেও কেন জ্বলছে বাংলাদেশ ? কেন লাফিয়ে বাড়ছে মৃত্যু মিছিল? কেন আওয়ামী নেতাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে পুলিশ? তাহলে কী ছাত্র আন্দোলনের পিছনে রয়েছে, অন্য কোনও হাত? গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

বাংলাদেশের কোটা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পাক গুপ্তচর সংস্থা ইন্টার সার্ভিস ইন্টেলিজেন্সের (আইএসআই) ‘অনুপ্রবেশ’ নিয়ে নিশ্চিত গোয়েন্দারা। ভুয়ো ‘ডিসপ্লে পিকচার’ (ডিপি) বানিয়ে, পড়ুয়া সেজে দু’মাস ধরে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাগাতার ‘উস্কানি’ দিয়ে গিয়েছে পাক চররা। আর এদের সাহায্য করেছে জামাতের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্র শিবির (আইসিএস)। সোশ্যাল মিডিয়ায় এরা কেউ ঢাকা, কেউ সিলেট, কেউ চট্টগ্রাম, কেউ জাহাঙ্গির আবার কেউ নিজেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হিসেবে পরিচয় দিয়েছে। এবং লাগাতার শেখ হাসিনা সরকার ও ভারত বিরোধী প্রোপাগান্ডা চালিয়ে গিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় এরকম ১৫-১৬ জন পাক চরের হদিশ পেয়েছেন গোয়েন্দারা।

এদের মধ্যে তিন-চারজন পাকিস্তানের হলেও বাকিরা বাংলাদেশের নাগরিক। পাশাপাশি গোয়েন্দারা জেনেছেন, আন্দোলন পর্বে আইএসআই তিনজন মহিলা সহ তার বেশ কয়েকজন ‘ডিপ অ্যাসেট’কে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তারা ছোট দলে ভাগ হয়ে তিন দফায় গত ১০ থেকে ১৬ জুলাইয়ের মধ্যে করাচি হয়ে ঢাকায় পৌঁছেছে। তারপরই বৈঠক করেছে বাংলাদেশের জামাত আমির শফিকুর রহমানের সঙ্গে। তবে হাসিনাকে উৎখাত এবং ভারত বিরোধিতার এই প্ল্যান গত দু’বছর ধরে লালিত হয়েছে লন্ডন নির্বাসিত খালেদাপুত্র তারেক রহমানের মাধ্যমে।
এই পর্বেই গোয়েন্দারা জেনেছেন, কোটা ও বৈষম্য বিরোধিতায় ছাত্রদের অংশগ্রহণ অনেকটাই ছিল স্বতঃস্ফূর্ত। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়েই ভারত বিরোধিতার বাড়তি ঝাঁঝ জুড়ে দিতে আইএসআই আসরে নামায় তাদের ঢাকা ডেস্ককে। ৭১’এর যুদ্ধে গোহারা হারার পর বাংলাদেশ তথা ভারত বিরোধী জিগির চালিয়ে যেতে স্পেশাল ডেস্ক বানিয়েছিল আইএসআই। ভারতের ক্ষেত্রে যা ‘অপারেশন টোপাজ’ আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ‘অপারেশন সাইক্লোন’। জনআন্দোলনের আড়ালে সেই অপারেশন সাইক্লোনকেই ফের সক্রিয় করেছে ইসলামাবাদ। যোগ্য সঙ্গত দিয়েছে জামাত এবং আইসিএস।

গোয়েন্দারা বলছেন, গত জানুয়ারি মাসে ‘বিতর্কিত’ নির্বাচন শেষে শেখ হাসিনা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসার পরই সক্রিয় হয়ে ওঠেন বিএনপির ‘প্রধান’ তারেক রহমান এবং প্যারিসে নির্বাসিত ডাঃ পিনাকী ভট্টাচার্য। আসরে নেমে পড়েন বিএনপির সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রধান জাকির হোসেনও। গোয়েন্দারা বলছেন, আইএসআইয়ের সঙ্গে বিএনপির যোগসূত্রের কাজ করতেন এই জাকির। জাকিরের মধ্যস্থতায় একবার জেড্ডা এবং চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে লন্ডনে আইএসআইয়ের দুই আধিকারিক প্রাক্তন পাক সেনা কর্তা জাভেদ মেহেদি এবং শাহিদ মেহেমুদ মহম্মদ শরিফের সঙ্গে বৈঠক করেন তারেক রহমান। সেখানেই ঠিক হয়, হাসিনাকে সমর্থন করার জন্য এবার ভারত বয়কটের আন্দোলন শুরু হোক। তারেকের নির্দেশে সমাজমাধ্যমে শুরু হয় ‘ইন্ডিয়া আউট’ এবং ‘বয়কট ইন্ডিয়ান প্রোডাক্টস’ অভিযান। প্যারিসে বসে যা সমাজমাধ্যমে শুরু করেছিলেন পিনাকী ভট্টাচার্য। তারপর থেকে ক্রিকেটই হোক, ফুটবল কিংবা বাণিজ্য, আইএসআইএয়ের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে বাংলাদেশিরা লিখতে শুরু করে ‘ইন্ডিয়া চুর’, ‘বয়কট ইন্ডিয়া’।

ভারতীয় গোয়েন্দাদের এই নয়া দাবি কার্যত ইঙ্গিত করছে ইসলামাবাদের দিকেই। গোয়েন্দাদের দাবি, কুমিল্লা থেকে যে আন্দোলন সংগঠিত হয়েছে তার পিছনে জঙ্গি যোগ স্পষ্ট। যার জের হাসিনা সরকারের পতনের পরেও রয়েছে বাংলাদেশে। এর ফলে গত শনিবার থেকে শুরু হওয়া উত্তেজনা মঙ্গলবারও চরমে ওঠে। বুধবারও হিংসার খবর পাওয়া যায় বেশ কিছু জেলা থেকে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen