আজ থেকে আবার সম্প্রচার সিরিয়ালের
তারকা থেকে কলাকুশলী সকলেই মাস্ক, স্যানিটাইজার, পিপিই কিটকে অস্ত্র করেই সামলাচ্ছেন করোনা পরবর্তী শুটিং পর্ব।
প্রায় তিন মাস পর খুলেছে টলিপাড়ার দরজা। লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশনের শব্দে গমগম করছে স্টুডিও। আর আজ, সোমবার থেকেই বাঙালির ড্রয়িংরুমে ফিরতে চলেছেন রাসমণি, জবা, সৌদামিনী, পারিজাত, ওঙ্কাররা। মাত্র কয়েক মাস, তাতেই আমূল বদলে গিয়েছে স্টুডিওপাড়া। তারকা থেকে কলাকুশলী সকলেই মাস্ক, স্যানিটাইজার, পিপিই কিটকে অস্ত্র করেই সামলাচ্ছেন করোনা পরবর্তী শুটিং পর্ব।
নতুন পর্ব দেখার জন্য সিরিয়ালপ্রেমীরা যেমন আকুল, আবার তাঁদের মন ভরাতে এই কঠিন পরিস্থিতিতেও পিছপা নন শিল্পীরা। সত্যি বলতে, ভয় আর একরাশ আনন্দ নিয়েই ফ্লোরে পা রেখেছেন অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। রিস্ক ফ্যাক্টর যে আছে, তা মানছেন তারকারা। তার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত টেলি স্টাররা। স্টার জলসা-র ধারাবাহিক ‘দুর্গা দুর্গেশ্বরী’-র ‘ওঙ্কার’ বিশ্বরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘করোনা এখনই নির্মূল হচ্ছে না। আমরা জেনেই গিয়েছি। তাই শ্যুটিং শুরু হওয়ার খুব দরকার ছিল। রুটি রুজিতে টান পড়ছিল। ভয় যে পাচ্ছি না, তা বলব না। বাবা-মাকে বলেছি, পুরুলিয়ার বাড়ি থেকে কলকাতায় পা রাখার পর আগামী দু-তিনমাস ভিডিও কল ছাড়া যোগাযোগ রাখব না।’
সান বাংলার ‘কনে বউ’ সিরিয়ালের নায়ক গৌরব মণ্ডল বললেন, ‘ক্যামেরার সামনে তো আর মাস্ক পরে থাকতে পারব না। তাই রিস্ক থেকেই যাচ্ছে। বহু মানুষ এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। শোচনীয় অবস্থা। শ্যুটিং শুরু নিয়ে যতটা উত্সাহ আছে, ততটাই ভয় হচ্ছে।’

‘চুনি পান্না’র নায়ক দিব্যজ্যোতি দত্ত স্পষ্ট বললেন, ‘আমাদের কাছে আর কোনও রাস্তা নেই। এতদিন ঘরে বসে লড়াই করেছি এবার বাইরে গিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করব।’
মেয়ের সুরক্ষার কথা ভেবে কিছুটা চিন্তায় আছেন সুস্মিলি আচার্যের বাবা-মা। জি বাংলার জনপ্রিয় মেগা ‘সৌদামিনীর সংসার’-এর সোদু পাকা গিন্নি হলেও আসলে বয়স তো মোটে ১২ বছর। ফোন করতেই সুস্মিলি বলল, ‘কাজ শুরু হওয়ায় ভালো লাগছে। তবে শ্যুটিং করতে করতে সামাজিক দূরত্ব কতটা মানা যাবে বুঝতে পারছি না। আর আমি তো নিজে মেকআপ করতেও পারি না।’
গৃহবন্দি থেকে ফের ব্যস্ত শিডিউল এর মধ্যে কিছুটা আশঙ্কার মেঘ দেখছেন টেলি দুনিয়ার প্রবীণ অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। প্রশ্ন উঠছে প্রবীণ অভিনেতারা কী করবেন? অনেকেই আবার ‘মুচলেকা’ দিয়ে অভিনয় করার প্রস্তাবে কিছুটা বিরক্ত। এত আশা আশঙ্কা থাকলেও ফ্লোরেই ফিরতে চাইলেন জনপ্রিয় প্রবীণ অভিনেতা সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায়। ‘ভয় পেয়ে বাড়িতে বসে থাকলে আমার চলবে না। যেহেতু আমার এটাই পেশা। বাড়িতে বসে থাকলেই যে করোনা হবে না, এমন কোনও গ্যারান্টিও তো নেই।’
সিরিয়াল থেকে আপাতত বিয়েবাড়ি, মেলার মতো দৃশ্য বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন জুনিয়র আর্টিস্টরা। তবে, সব আশঙ্কার জট কাটিয়ে শেষমেশ স্টুডিও পাড়ায় চোখে পড়ল শিল্পীদের হট্টগোল। ঢাকা পড়ে গেল করোনা সংক্রমণের ভয়।