ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীই ডুয়ার্সের আতঙ্ক! কী করছে কেন্দ্র সরকার?

ভুটান পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি হলে বা কখনও হড়পা বান এলে ডুয়ার্সের বহু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা সেচদপ্তরের আধিকারিকদের

August 24, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সাম্প্রতিক অতীতে বারবার প্রকৃতির রোষে পড়েছে গোটা দেশের পাহাড়ি এলাকাগুলো। এবার ডুয়ার্স নিয়ে আতঙ্কের খবর শোনা যাচ্ছে। রেতি, সুকৃতি, তোর্সা, পানা, বাসরা, রায়ডাক…ছোট বড় মিলিয়ে অন্তত ২৫টি নদী ও ঝোরা ভুটান পাহাড় থেকে নেমে এসেছে। এই নদীগুলোকে ঘিরেই ডুয়ার্সের অশনি সংকেত দেখছে সেচদপ্তর। সিমেন্ট থেকে খনি, ভুটানের যাবতীয় ফ্যাক্টরির বর্জ্য নেমে আসছে এইসব নদী দিয়ে। বুজে যাচ্ছে নদীখাত। ভুটান পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি হলে বা কখনও হড়পা বান এলে ডুয়ার্সের বহু গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা সেচদপ্তরের আধিকারিকদের। সেচ দপ্তরের উত্তরপূর্ব বিভাগ রাজ্যে রিপোর্ট পাঠাচ্ছে।

সেচ দপ্তরের উত্তরপূর্বের দায়িত্বপ্রাপ্ত চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা নদীগুলির অবস্থা ভাল নয়। প্রচুর বর্জ্য বহন করে নীচে নামার জেরে প্রতিটি নদীর তলদেশ উঁচু হয়ে যাচ্ছে। জয়গাঁ, চামুর্চির মতো জনপদ নদী থেকে প্রায় ২০ ফুট নিচু হয়ে গিয়েছে। বড় বিপর্যয় হলে গোটা এলাকা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজ্যকে জানাচ্ছে সেচ দপ্তর। তোর্সা, বাসরা, রায়ডাক-সহ ভুটান পাহাড় থেকে নেমে আসা ১৪টি নদী নিয়ে সম্প্রতি সমীক্ষা চালায় সেচ দপ্তর। দেখা গিয়েছে, প্রতিটি নদীই নাব্যতা হারিয়েছে। তাই তারা ঘনঘন গতিপথ বদল করছে। জনবসতি, চা বাগান ও কৃষিজমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অভিযোগ, ভুটান লাগাতার মাইনিং করছে। পাহাড় কাটার পর তারা পাথরগুলো সরাচ্ছে না। বৃষ্টিতে সেই পাথর এসে পড়ছে নদীতে। নদী তা বহন করে আনছে ডুয়ার্সে। ঘনাচ্ছে বিপদ। সেচদপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য, ইন্দো-ভুটান নদী নিয়ে যে কমিটি রয়েছে, তা মূলত টেকনিক্যাল কমিটি। এই কমিটি প্রস্তাব দিতে পারে। কিন্তু কার্যকর করতে কমিটিতে মন্ত্রী বা প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের যুক্ত করা দরকার। রাজ্যের দাবি, ব্রহ্মপুত্র রিভার কমিশনের মতো ইন্দো-ভুটান নদী কমিশন দরকার। কেন্দ্রকে এগিয়ে আসতে হবে।

ইন্দো-ভুটান নদী কমিটির নিয়মিত বৈঠক হয় না বলেও অভিযোগ। ২০২০ সালের পর শেষ বৈঠক হয়েছে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে। দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাজ্যের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন সেচদপ্তরের উত্তরপূর্বের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক। তিনি বলেন, প্রতিটি বৈঠকে ভুটানকে বারবার বলা হয়, নদীতে যাতে বোল্ডার, নুড়ি-পাথর না পড়ে। সেজন্য যেন উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয় তারা। তা হয় না। ব্রহ্মপুত্র নদী কমিশনে বছরে দু’বার বৈঠক হয়। ইন্দো-ভুটান নদীর ক্ষেত্রে বছরে একবারও বৈঠক হচ্ছে না। বুধবার সেচমন্ত্রী মানস ভুঁইয়ার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না করলে বিপদের মুখে পড়তে পারে আলিপুরদুয়ার ও ডুয়ার্সের বড় অংশ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen