চাঁচলের জমিদার বাড়ির ত্রিপুরা সুন্দরী পুজো – আজও অটুট দুই শতাব্দীর রেওয়াজ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৮:২৬: ডুমরো গ্রামের মিশ্র জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজোয় এখনও বজায় আছে দুই শতাব্দী প্রাচীন রেওয়াজ। নবমীর সকালে প্রথমে পুজো হয় কুলদেবী ত্রিপুরা সুন্দরীর, তারপরেই শুরু হয় দুর্গার আরাধনা। জমিদার গোলকনাথ মিশ্রের হাত ধরে শুরু হওয়া এই পারিবারিক পুজো আজ সর্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।
ডুমরো ছাড়াও কৃষ্ণনগর, ফুলবাড়ি, আলাদিপুর, জিতারপুর সহ আশপাশের গ্রামগুলোও এই পুজোর সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত। দেবীর মাহাত্ম্যে তাঁদের বিশ্বাস অটুট। পরিবার জানায়, গোলকনাথ মিশ্রের পুত্রবধূ কুসুমকামিনী দেবীর নামে জমিদারবাড়ির এক বৃহৎ পুকুরের নামকরণ হয়েছিল। সেই পুকুরেই আজও ঘটে পুজোর সব আচার। ঘট স্থাপন থেকে প্রতিমা বিসর্জন পর্যন্ত সবই হয় পুরনো রীতি অনুসারে। সারা বছর যেখানেই থাকুন না কেন, পুজোর সময়েই ডুমরোয় ফেরেন পরিবারের ছেলেমেয়েরা।
প্রবীণ সদস্যা মীরা মিশ্র বলেন, “যেদিন বিয়ে হয়ে এ বাড়িতে আসি, সেদিন থেকেই এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে গেছি। রেওয়াজ একটুও বদলায়নি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটা সারা গ্রামের হয়ে উঠেছে।”
এখানে সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত পালিত হয় ছাগ বলির রীতি। অষ্টমীতে ভক্তদের জন্য ভোগে পরিবেশিত হয় লুচি আর মিষ্টান্ন। তবে নবমীই সবচেয়ে মহোৎসবের দিন। সেদিন কয়েক হাজার মানুষ একসঙ্গে জমিদার বাড়ির আঙিনায় বসে খিচুরির ভোগ উপভোগ করেন।
দশমীতে মায়ের বিদায়ের সঙ্গে মিশে থাকে বেদনা, তবে তার সঙ্গে থাকে আনন্দও। কারণ, সেদিন বসে এলাকার অন্যতম বড় মেলা। স্থানীয়দের মতে, এই মেলা এখন জমিদারবাড়ির দুর্গোৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ, যা দশমীর বিষাদকে কিছুটা ভুলিয়ে দিয়ে সবাইকে উৎসবের রঙে রাঙিয়ে দেয়।