ট্রাম্পের নতুন হুমকি: বিদেশে তৈরি সিনেমার ওপর ১০০% শুল্ক আরোপের ঘোষণা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:৩০: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও বিদেশে তৈরি সিনেমার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, অন্যান্য দেশ মার্কিন চলচ্চিত্র শিল্পকে “চুরি” করছে। বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়ার সিনেমা শিল্প এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ট্রাম্প মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্প সোমবার তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম Truth Social-এ লিখেছেন, “আমাদের সিনেমা শিল্পকে অন্যান্য দেশ চুরি করছে, একেবারে শিশুর কাছ থেকে মিষ্টি চুরির মতো। ক্যালিফোর্নিয়ার দুর্বল ও অযোগ্য গভর্নরের কারণে এই ক্ষতি আরও বাড়ছে।” তিনি বলেন, বিদেশে তৈরি সব সিনেমার ওপর এই শুল্ক আরোপ করা হবে, তবে কখন থেকে তা কার্যকর হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে কানাডার ব্যবসায়িক সম্প্রদায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কানাডিয়ান চেম্বার অফ কমার্স জানিয়েছে, অনেক মার্কিন প্রোডাকশন হাউস কানাডার সেট, ক্রু এবং ট্যালেন্টের ওপর নির্ভর করে। শুল্ক আরোপ হলে এতে উৎপাদন খরচ বাড়বে, বিনিয়োগ কমবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সহযোগিতার ফলে তৈরি হওয়া প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিনিয়োগ বিশ্লেষক ড্যান কোটসওয়ার্থ বলেছেন, সিনেমার ওপর শুল্ক আরোপের প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা কঠিন। কারণ আজকাল অনেক সিনেমা অন্যান্য দেশে শুটিং হচ্ছে কর-উদ্যোগ এবং সুবিধার কারণে। এছাড়াও বিদেশি অভিনেতা, পরিচালক থাকলে কোন সিনেমাকে “মার্কিন তৈরি” বলা হবে, তা স্পষ্ট নয়।
এর আগে ট্রাম্প নতুন শুল্কের ঘোষণা করেছিলেন, যার মধ্যে ছিল ১০০ শতাংশ শুল্ক ব্র্যান্ডেড ও পেটেন্টযুক্ত ঔষধে এবং ৫০ শতাংশ শুল্ক রান্নাঘর ও বাথরুমের কেবিনেটে। এ ছাড়া তিনি ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন সফটউড টিমবার ও কাঠজাত সামগ্রীর ওপর এবং ২৫ শতাংশ শুল্ক কিছু কাঠের আসবাবপত্রের ওপর। এই শুল্ক ১৪ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে।
চলচ্চিত্র গবেষণা সংস্থা ProdPro-এর তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র এখনও বৈশ্বিক চলচ্চিত্র উৎপাদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। গত বছরে দেশটি ১৪.৫৪ বিলিয়ন ডলারের প্রোডাকশন ব্যয় করেছে, তবে এটি ২০২২ সালের তুলনায় ২৬% কম। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা এবং যুক্তরাজ্য সিনেমা শিল্পে বিনিয়োগ বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।
যুক্তরাজ্য সরকারও মার্কিন শুল্কের বিস্তারিত খোঁজ করছে, যেহেতু তা ব্রিটিশ চলচ্চিত্র শিল্পের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। সরকার সূত্র জানিয়েছে, দেশটির চলচ্চিত্র শিল্প কোটি কোটি ডলার আয় এবং লাখ লাখ মানুষকে কর্মসংস্থান দিচ্ছে।