ভূস্বর্গ ভয়ংকর! ভারীবৃষ্টি-ধসে বিপর্যস্ত বৈষ্ণোদেবী, মৃত বেড়ে ৩৬, জখম বহু

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৯:১০: প্রবল বর্ষণে ভয়াবহ ভূমিধসে বিপর্যস্ত জম্মু-কাশ্মীরের বৈষ্ণোদেবী যাত্রাপথ। বুধবার সকাল থেকে কাটরার অর্ধকুমারী এলাকায় একের পর এক ধস নেমে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৩৬ জনের। ধ্বংসস্তূপ থেকে একের পর এক নিথর দেহ উদ্ধার হচ্ছে। গুরুতর আহত অবস্থায় এখনও পর্যন্ত ২৩ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, আরও বহু যাত্রী ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছেন।
উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনা, এনডিআরএফ, এসডিআরএফ এবং স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা। রাতভর চলছে অভিযান। মঙ্গলবার পর্যন্ত সাতজনের মৃত্যুর খবর মিললেও বুধবার সকাল থেকে মৃতের সংখ্যা হু-হু করে বাড়তে থাকে।
শুধু বৈষ্ণোদেবী নয়, প্রবল বর্ষণে বিপর্যস্ত পুরো জম্মু-কাশ্মীর। একাধিক জেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত ৩,৫০০-র বেশি মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে নিরাপদ আশ্রয়ে। জম্মু শহরে ২৪ ঘণ্টায় ২৯৬ মিমি বৃষ্টি হয়ে ভেঙেছে ১৯৭৩ সালের রেকর্ড। উধমপুরে ৬২৯ মিমি বৃষ্টির নজিরবিহীন পরিসংখ্যান সামনে এসেছে।
প্রবল স্রোতে ভেসে গিয়েছে সেতু, বিদ্যুতের খুঁটি, টেলিফোন টাওয়ার। অনেক জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ঝিলম নদীর জল বিপদসীমা ছুঁয়ে যাওয়ায় দক্ষিণ কাশ্মীরে জারি হয়েছে বন্যা সতর্কতা।
প্রশাসনের তরফে জম্মুর স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাতিল হয়েছে বোর্ডের পরীক্ষাও। রেল চলাচল ব্যাহত, বহু ট্রেন বাতিল বা সংক্ষিপ্ত রুটে চালানো হচ্ছে। আকাশপথেও ভোগান্তি, লেহ বিমানবন্দর বন্ধ থাকলেও ধীরে ধীরে চালু হয়েছে জম্মু বিমানবন্দর থেকে পরিষেবা।
আবহাওয়া দপ্তরের দাবি, সক্রিয় পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে উত্তর-পশ্চিম ভারতে প্রবল বর্ষণ চলছে। আগামী কয়েকদিনও পরিস্থিতি একই রকম থাকতে পারে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা প্রশ্ন তুলেছেন, ২০১৪ সালের ভয়াবহ বন্যার পরও রাজ্য প্রশাসন কেন প্রস্তুতি নেয়নি। অন্যদিকে, লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিং দ্রুত বিদ্যুৎ, জল ও যোগাযোগ পরিষেবা স্বাভাবিক করার নির্দেশ দিয়েছেন। নিহতদের পরিবারকে রাজ্য প্রশাসন, তীর্থক্ষেত্র বোর্ড এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দপ্তরের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করা হয়েছে।