দিল্লির পথকুকুরদের ভবিষ্যৎ কী হবে? রায়দান স্থগিত শীর্ষ আদালতের
দিল্লির রাজপথ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে পথকুকুরদের, এমন নির্দেশ দেশের শীর্ষ আদালত থেকে আসতেই গর্জে ওঠেন পশুপ্রেমীরা।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:২৫: দিল্লির রাজপথ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে পথকুকুরদের, এমন নির্দেশ দেশের শীর্ষ আদালত থেকে আসতেই গর্জে ওঠেন পশুপ্রেমীরা। প্রশ্ন ওঠে, পথকুকুরদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রই তো তৈরি নেই। লোকালয় থেকে ধরার পরে কোথায় নিয়ে যাওয়া হবে তাদের? বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের নতুন বেঞ্চে মামলা শুনানিতে এই দাবিই জানালেন পশুপ্রেমীদের আইনজীবীরা। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশের উপর আংশিক স্থগিতাদেশেরও আর্জি জানান তাঁরা।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এন অঞ্জরিয়ার বেঞ্চে বৃহস্পতিবার মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে। কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়, কেউই পশুবিদ্বেষী নন। বলা হচ্ছে না কুকুরদের মেরে ফেলতে হবে। তাদের আলাদা করে রাখতে হবে। কেন্দ্রের তরফে আদালতে সওয়াল করেন সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা। এক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন তুলে ধরে সলিসিটর জেনারেলের দাবি, বছরে ৩৭ লক্ষ কুকুরের কামড়ের ঘটনা ঘটেছে। প্রতি দিনের হিসাবে তা প্রায় ১০ হাজার।
পশুপ্রেমী সংগঠনের হয়ে আদালতে সওয়াল করেন প্রবীণ আইনজীবী কপিল সিব্বল। তাঁর বক্তব্য, লোকালয় থেকে পথকুকুরদের ধরে নিয়ে গিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার কথা বলা হচ্ছে। দিল্লিতে এমন আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি থাকলে কোনও সমস্যা হত না। কিন্তু এমন কোনও আশ্রয়কেন্দ্রই তৈরি নেই দিল্লিতে। তাহলে পথকুকুরদের কোথায় ধরে নিয়ে যাওয়া হবে? সংশয় প্রকাশ করেন আইনজীবীরা। পথকুকুরদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা সিব্বলের।
সিব্বল আদালতে জানান, গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে ইতিমধ্যেই ৭০০ পথকুকুরকে ধরা হয়ে গিয়েছে। ওই পথকুকুরদের সঙ্গে কী হবে, তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের উপর আংশিক স্থগিতাদেশের আর্জি জানান তিনি। বৃহস্পতিবার কেন্দ্র এবং অন্য পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে রায়দান স্থগিত রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট।
উল্লেখ্য, রাজধানী দিল্লিতে জলাতঙ্ক সংক্রান্ত উদ্বেগ নিয়ে সম্প্রতি স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে সুপ্রিম কোর্ট। মামলাটি ছিল শীর্ষ আদালতের বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চে। গত সোমবারের শুনানিতে দুই বিচারপতির বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, রাজধানী দিল্লির লোকালয় থেকে পথকুকুরদের অন্যত্র সরিয়ে ফেলতে হবে। পথকুকুরদের জন্য নির্দিষ্ট আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থা করতেও বলা হয়। শীর্ষ আদালত জানায়, এই কাজের সঙ্গে কোনও আপস করা যাবে না। কোনও সংগঠন এই কাজে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপেরও নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক।