‘ক্রিকেট খেলা হলে কনফারেন্সে আপত্তি কেন?’ সোনমের গ্রেপ্তারি নিয়ে উঠছে প্রশ্ন, লাদাখ নিয়ে সরব ওমরও

September 29, 2025 | 2 min read
Published by: Raj

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৭.৩০: কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাদাখে অশান্তি রুখতে কার্ফু চলছে। গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে যে চার জনের মৃত্যু হয়েছে, তার মধ্যে দু’জনের শেষকৃত্য সোমবারই সম্পন্ন হওয়ার কথা। তার আগে লাদাখের সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছেন লেফ্‌টেন্যান্ট গভর্নর (এলজি) কবীন্দ্র গুপ্ত।

অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সোনম ওয়াংচুকের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করল কার্গিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স। দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করে সংগঠনের নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, পাকিস্তানে জলবায়ু বিষয়ক একটি সম্মেলনে অংশ নেওয়ার কারণে কেন তাঁকে ‘পাকিস্তানপন্থী’ বলে অভিযুক্ত করা হচ্ছে? একইসঙ্গে তাঁরা কটাক্ষ করেছেন, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হলেও দুই দেশের মধ্যে ক্রিকেট খেলা চলছে, অথচ পরিবেশ সম্মেলনে যোগ দেওয়া নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।
কার্গিল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্সের নেতা সাজ্জাদ করগিলি বলেন, “ওই সম্মেলন ছিল জাতিসংঘের জলবায়ু আলোচনার অংশ। সেখানে যোগ দেওয়া অপরাধ হলে পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলা (India vs Pakistan Cricket) কেন চলবে? আমাদের আন্দোলনকে অন্যভাবে দেখানো হচ্ছে।” তিনি আরও দাবি করেন, ২৪ সেপ্টেম্বর লেহ-তে হওয়া হিংসার ঘটনায় নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রয়োজন।
লাদাখ পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল এস ডি সিংহ জামওয়াল ইতিমধ্যেই অভিযোগ তুলেছেন যে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াংচুক পাকিস্তানের দৈনিক ‘ডন’ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নেন এবং পাকিস্তানী এক গোয়েন্দার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। তাই এই সফরকেই ‘সন্দেহজনক’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
কিন্তু এই অভিযোগ সম্পূর্ণ নস্যাৎ করেছেন সোনম ওয়াংচুকের স্ত্রী গীতাঞ্জলী। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘চার বছর আগে থেকেই গোয়েন্দা আধিকারিকরা হুমকি দিতে শুরু করেছিলেন। বিদেশি অনুদান নেওয়ার লাইসেন্স মেলেনি। আমাদের সংস্থা হিমালয়ান ইনস্টিটিউট অব অল্টারনেটিভস, লাদাখ (এইচআইএএল) ও সেকমলকে টার্গেট করা হয়।’’ অভিযোগ, সরকারের তরফে তাঁর স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হয়রানি করা হচ্ছে।

লাদাখের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সোমবার রাজভবনে একটি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন এলজি। পিটিআই-এর প্রতিবেদন সূত্রে জানা গিয়েছে, লেহ শহরে এখনও স্থগিত রয়েছে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা। তা ছাড়া, কার্গিল-সহ একাধিক জায়গায় পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সমাবেশ নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক প্রশাসনিক কর্তা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, কার্ফু চলাকালীন গোটা এলাকায় পরিস্থিতি মোটামুটি শান্তিপূর্ণই ছিল। কোথাও নতুন করে কোনও অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। তবে সংবেদনশীল এলাকাগুলিতে এখনও মোতায়েন রয়েছে পুলিশ এবং আধাসামরিক বাহিনী। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সর্বক্ষণ নজরদারি চলছে।

অন্য দিকে, লাদাখের পরিস্থিতির জন্য আরও একবার কেন্দ্রকে দুষেছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। ওমরের অভিযোগ, জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখকে স্বতন্ত্র রাজ্যের মর্যাদা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে কেন্দ্র। দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের সঙ্গেই বিশ্বাসঘাতকতা করা হয়েছে। রবিবার এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে ওমর বলেন, ‘‘যখন আপনারা চেয়েছিলেন লাদাখ পার্বত্য কাউন্সিলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক, তখন আপনি তাদের সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলের আওতাভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ সবাই জানত যে লাদাখকে ষষ্ঠ তফসিলে সংযোজন প্রায় অসম্ভব। যে অঞ্চলের এক দিকে চিন এবং অন্য দিকে পাকিস্তানের সীমান্ত রয়েছে, সেখানে কড়া নিরাপত্তা প্রয়োজন। ফলে সেখানে ষষ্ঠ তফসিল অসম্ভব। অথচ, আপনারা সব জেনেও এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন!’’ পরিবেশকর্মী সোনম ওয়াংচুকের প্রতি কেন্দ্রের হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তনের সমালোচনাও শোনা গিয়েছে ওমরের মুখে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen