ব্যাঙ্ক ফ্রড হলে গ্রাহকদের প্রতি ব্যাঙ্কের কোনও দায়িত্ব থাকবেনা কেন? প্রশ্ন তুলে ব্যাঙ্ককেই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের

ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলে সাইবার জালিয়াতির শিকার হতে পারেন যে কেউ।

February 10, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থাকলে সাইবার জালিয়াতির শিকার হতে পারেন যে কেউ। গ্রাহকের অসাবধানতায় ‘অ্যারেস্ট’ হতে পারে তার অ্যকাউন্ট। এবং হ্ত হলে, ব্যাঙ্ক নয়, বড়সড় মাশুল চোকাতে হবে গ্রাহককেই। হানিফ আলি মোল্লা নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ক্ষেত্রে সাইবার জালিয়াতির ঘটনা ঘটার পর বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্টকেও শেষ পর্যন্ত সাবধান বাণী শোনাতে হয়েছে খোদ ব্যাঙ্ককেই।

ব্যাঙ্কের তরফে পাল্টা দাবি করা হয়, মামলাকারীর ভুলেই এমনটা হয়েছে। জালিয়াতদের তিনি ওটিপি দিয়েছিলেন। যদিও বারাসত সাইবার থানা স্পষ্ট জানায়, এক্ষেত্রে মামলাকারী কিছুই জানেন না। বিহারের একটি আই ফোন থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। এই বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘এক্ষেত্রে গ্রাহকদের প্রতি ব্যাঙ্কের কোনও দায়িত্ব নেই? তারা কেন নিজস্ব তদন্ত করবে না? কোথায় ওই টাকা জমা হয়েছে, তা কেন যাচাই করবে না ব্যাঙ্ক? পুলিস কেস হয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে, মামলাকারী কোনওভাবেই জড়িত নয়। তাহলে কেন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করবে না?’ এরপরই নির্দেশে বিচারপতি জানিয়ে দেন, অবিলম্বে মামলাকারীর ওই স্যালারি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে নতুন স্যালারি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্ককেই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। মামলাকারীকে ভবিষ্যতে সাবধান থাকার পরামর্শ দিয়েছে আদালত।

মামলা সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতের মাদ্রাসা শিক্ষক হানিফ আলি মোল্লার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বারাসত কলোনি মোড় শাখায় স্যালারি অ্যাকাউন্ট ছিল । অভিযোগ করা হয় যে গত বছরের ২১ অক্টোবর সন্ধ্যা সোয়া ৮টা নাগাদ তিনি এসএমএসে দেখতে পান, তাঁর স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে একটি লোন অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এবং ওই লোন অ্যাকাউন্টে জমা পড়েছে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ টাকা। এর কিছুক্ষণের মধ্যে ওই লোন অ্যাকাউন্ট থেকে ধাপে ধাপে পুরো টাকাই উধাও হয়ে যায়। ঘটনার দিনই সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক ও বারাসত সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন হানিফ। কিন্তু সেই ঘটনা ব্যাঙ্ক কে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ করেন মামলাকারী। এরপরেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তিনি।

এরপর হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে মামলাকারীর আইনজীবী দাবি করেন, তাঁর মক্কেলের অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হলেও তিনি কিছুই জানেন না। এখন ব্যাঙ্কের তরফে বলা হয়েছে, তাঁকেই সুদ সহ মোট সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা মেটাতে হবে। সেই হিসেবে প্রতি মাসের ২৩ তারিখ ইএমআই বাবদ সাড়ে ১৪ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে। এমনকী, মাসের প্রথমে বেতন জমা পড়ার পরও মামলাকারীকে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। ইএমআই’র টাকা কাটার পরই তিনি তা ব্যবহার করতে পারছেন।

শুনানির পর বিচারপতি নির্দেশে দেন, অবিলম্বে মামলাকারীর ওই স্যালারি অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে নতুন স্যালারি অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্ককেই ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen