দশমীতে বিসর্জনের আগে কেন নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানো হত?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ০৮:০০: নীলকণ্ঠ, যার পোশাকি নাম ‘ইন্ডিয়ান রোলার’। শাস্ত্র মতে, বিজয়া দশমীতে এই পাখির দর্শন পাওয়া নাকি শুভ। বলা হয়, রাবণবধের আগে এই পাখির দর্শন পেয়েছিলেন শ্রীরামচন্দ্র। অন্য একটি মতে, রামচন্দ্র ও তাঁর বাহিনীকে নীলকণ্ঠ পাখি পথ দেখিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
বাংলার সংস্কৃতির সঙ্গে এই পাখি গভীরভাবে জড়িয়ে। নীলকণ্ঠ পাখি জড়িয়ে গিয়েছে পৌরাণিক আখ্যানের সঙ্গেও। নীলকন্ঠ পাখিকে শিবের দূত হিসাবে ভাবা হয়। শিবের আর এক নাম নীলকন্ঠ। সমুদ্রমন্থনের সময় বিষ উঠেছিল, সৃষ্টিকে রক্ষা করতে সেই বিষ ধারণ করেন স্বয়ং মহাদেব। সেই বিষের জ্বালায় নীল হয়ে ওঠে মহাদেবের গলা। সেই থেকে তাঁর নাম নীলকন্ঠ। এই পাখির নামও তাঁর নামে। নীল গড়নের কারণেই পাখির নাম নীলকণ্ঠ।
দশমীতে এই পাখি নাকি উড়ে গিয়ে কৈলাসে মহাদেবকে জানায়, সপরিবারে মা দুর্গা ফিরছেন। মূলত বনেদি বাড়ির পুজোতেই নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর রেওয়াজ ছিল। এখন সে সব বাড়িতে নীলকণ্ঠ পাখির মূর্তি বানানো হয়।
এই প্রথার কারণে নির্বিচারে মারা পড়ত নীলকন্ঠ পাখি। পুজোর আগে রীতি পালনের উদ্দেশ্যে পাখি ধরতে গিয়ে অনেক সময় আহত হত পাখিরা। আহত পাখিই খাঁচায় বন্দি করে রাখা হত। দশমীর দিন আহত পাখিদের জোর করে উড়িয় দেওয়া হত। অন্য শিকারি পাখিদের কবলে পড়ে প্রাণ হারাত নীলকন্ঠরা। আইন করে নীলকন্ঠ পাখি ধরার চল বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাই এখন মাটির পাখি তৈরি করা হয়।