ঠাকুরবাড়িতে সংঘর্ষে ধৃত ১: পুলিশি পদক্ষেপে খুশি মমতাবালা, বাকি ১২ জনের গ্রেপ্তারের দাবি
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:২১: ঠাকুরবাড়িতে মারপিট ও অশান্তির ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করলেন তৃণমূল সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর (Mamata bala Thakur)। বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই বরুণ বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে গাইঘাটা থানার পুলিশ। বাগদা থানা এলাকার বাসিন্দা বরুণ বিজেপি (BJP) সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের অনুগামী বলেই পরিচিত। তবে শুধু একজন নয়, এফআইআর-এ (FIR) নাম থাকা অভিযুক্ত ১৩ জনকেই গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছেন মমতাবালা।
ঠাকুরবাড়ি চত্বরে নজিরবিহীন অশান্তির ঘটনার পর বৃহস্পতিবার প্রশাসনের প্রশংসা করে মমতাবালা বলেন, ‘‘প্রশাসন প্রচণ্ড ভাল কাজ করেছে। যে ঘটনা ঘটেছে, তা ন্যক্কারজনক। যে ১৩ জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে, আমরা চাই সেই ১৩ জনই যেন গ্রেপ্তার হন।’’ তিনি সরাসরি অভিযোগ করেন, অভিযুক্তরা সকলেই শান্তনু ঠাকুরের অনুগামী এবং তাঁর উস্কানীতেই এই ঘটনা ঘটেছে। মমতাবালার কথায়, ‘‘শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বেই এগুলি হল। তাঁর বাড়িতে হয়েছে যখন, সেই তো এদের ডেকে নিয়ে এসেছেন। না হলে তাঁরা আসবেন কেন! ঠাকুরবাড়িতে আগেও বহু গোলমাল হয়েছে, কিন্তু এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি।’’
তৃণমূল (TMC) সূত্রে খবর, ঘটনার সময়ের ভিডিও ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারা কারা মারধরে যুক্ত ছিলেন, ফুটেজ দেখে তাঁদের চিহ্নিত করার প্রক্রিয়া চলছে। আগামী দিনে আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হতে পারে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন মমতাবালা।
প্রসঙ্গত, এই অশান্তির সূত্রপাত দিন দুয়েক আগে শান্তনু ঠাকুরের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। সিএএ (CAA) ও এসআইআর (SIR) প্রসঙ্গে বাগদার এক সভায় শান্তনু (Shantanu Thakur) বলেছিলেন, ‘‘৫০ লক্ষ রোহিঙ্গা, বাংলাদেশি মুসলমান, পাকিস্তানি মুসলমানকে বাদ দিতে যদি আমার সম্প্রদায়ের এক লক্ষ মানুষকে ভোটদান থেকে বিরত থাকতে হয়, তাতে কোনটা লাভ?’’ মতুয়াদের (Matua) ভোটাধিকার নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে সম্প্রদায়ের অন্দরেই ক্ষোভ ও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
শান্তনুর এই মন্তব্যের প্রতিবাদেই বুধবার তাঁর বাড়ি ঘেরাও অভিযানের ডাক দিয়েছিলেন মমতাবালা ঠাকুর। অভিযোগ, মমতাবালার অনুগামীরা মিছিল করে শান্তনুর বাড়ির সামনে পৌঁছলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। মিছিলের ওপর চড়াও হওয়া এবং মারধরের অভিযোগ ওঠে শান্তনুর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। যদিও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পাল্টা দাবি, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে এবং বহিরাগতদের এনে বাড়িতে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছেন মমতাবালা।
আপাতত ১ জন গ্রেপ্তার হলেও, ঠাকুরবাড়ির পরিস্থিতি এখনও থমথমে। পুলিশি তদন্তের দিকেই এখন তাকিয়ে উভয় পক্ষ।