বিদায় সৌমিত্র – যে দশটি ছবি রয়ে যাবে আমাদের হৃদয়ে

আজও ছবিতে তাঁর উপস্থিতি দর্শক মহলের কাছে এক ভিন্ন আবেগ। তাঁর বিদায়লগ্নে দেখে নেওয়া যাক পর্দায় সেরার সেরা দশ ছবি।

October 13, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

চলে গেলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বাংলা সিনেমা আজ অভিভাবকহীন। রুপোলি পর্দার এভারগ্রীন নায়ক সৌমিত্র। কখনও ফেলুদা কখনও আবার দেবদাস, পর্দায় প্রতিটি চরিত্রেই নিজেকে ভেঙে গড়েছেন নিজেকে। আজও ছবিতে তাঁর উপস্থিতি দর্শক মহলের কাছে এক ভিন্ন আবেগ। তাঁর বিদায়লগ্নে দেখে নেওয়া যাক পর্দায় সেরার সেরা দশ ছবি। 

অপুর সংসার

ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৯ সালে। সত্যজিৎ রায় পরিচালিত এই ছবির মধ্যে দিয়েই পর্দায় হাতেখড়ি হয়েছিল সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। ‘পথের পাঁচালী’র ছোট্ট অপুর জীবন থেকে ‘অপুর সংসার’-এর বাবার চরিত্রে অপু এবং তার ছেলে কাজলের চরিত্রের মাঝে দিয়ে ছোট্ট অপু থেকে ছোট্ট কাজল, যেন একটি জীবনের চক্র পূরণ হয়েছে, প্রতিটি জীবনের মতোই।

অশনি সংকেত

ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৩ সালে। এই ছবিটির পরিচালনাতেও ছিলেন সত্যজিৎ রায়। এক ভিন্নঘরানার চরিত্রে অভিনয় করে সকলের নজর কেড়েছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। অশনি সংকেতের আগেই তিনি বিশ্বখ্যাত পরিচালক, দেশে বিদেশে অনেক সম্মানপ্রাপ্তি ঘটেছে। 

চারুলতা

ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৪ সালে। এই ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। এই গল্পে তথাকথিত সমাজে এক নারীর অগ্রণী ভুমিকাই ফুঁটে উঠেছিল পরতে-পরতে। উপন্যাস থেকে চারুলতা যখন পর্দায় প্রাণ পেল, তখন তা সকলের নজরে এক উদাহরণ হয়ে রইল। 

জয় বাবা ফেলুনাথ

এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৮ সালে। সত্যজিৎ রায়ের লেখা গল্প তাঁরই পরিচালনাতে তৈরি এই ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দর্শকেরা পেয়েছিলেন এক ভিন্ন লুকে। এই কাহিনী আবর্তিত হয়েছে কাশী শহরকে ঘিরে। একটি গণেশ মূর্তিকে ঘিরে ফেলুদার রহস্য রোমাঞ্চের এই গল্প মন কেড়েছে সকলের। 

বসন্ত বিলাপ

এই ছবিটি মুক্তি পয়েছিল ১৯৭৩ সালে। দিনেন গুপ্ত পরিচালিত এই ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন অপর্না সেন। শহরের বসন্ত বিলাপ নামক একটি হোস্টেলের মেয়েদের সাথে পাশ্ববর্তী একটি ছেলেদের হোস্টেলের ছেলেদের একে অপরের প্রতি বিদ্বেষ ও আক্রোশকে কেন্দ্র করে ঘটনা প্রবাহ এগিয়ে চলে। 

সাত পাকে বাঁধা

১৯৬৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল সাত পাকে বাঁধা ছবিটি। এই ছবিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন সুচিত্রা সেন। সাত পাকে বাঁধা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে নায়িকা সুচিত্রা সেন “সিলভার প্রাইজ ফর বেস্ট অ্যাকট্রেস” জয় করেন।

সোনার কেল্লা

১৯৭৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল এই ছবি। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে এই ছবিতে দর্শকেরা পেয়েছিলেন ফেলুদার চরিত্রে। মরু প্রদেশে একটি জাতিস্মর বালককে ঘিরে যে টানটান উত্তেজনার গল্প, তা মুগ্ধ করে আট থেকে আশি সকলকে।

হীরক রাজার দেশে

গুপি বাঘা সিরিজের এই গল্পে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে এক বিশেষ ভূমিকাতে দেখা গিয়েছিলে। রুপকের আশ্রয় নিয়ে চলচ্চিত্রটিতে কিছু ধ্রুব সত্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মূল শিল্পীদের সকল সংলাপ ছড়ার আকারে করা হয়েছে। তবে কেবল একটি চরিত্র ছড়ার ভাষায় কথা বলেননি। তিনি হলেন শিক্ষক সৌমিত্র। এ দ্বারা বোঝানো হয়েছে একমাত্র শিক্ষক মুক্ত চিন্তার অধিকারী, বাদবাকি সবার চিন্তাই নির্দিষ্ট পরিসরে আবদ্ধ। 

ঝিন্দের বন্দি 

তপন সিন্হা পরিচালিত এই ছবিতে নিজের ইমেজ ভেঙে সৌমিত্র অভিনয় করেন এক লম্পট ভিলেনের চরিত্রে। রোম্যান্টিক অভিনেতা হিসেবে জনপ্রিয় এই নায়ককে এই চরিত্রে দর্শকরা মেনেও নিয়েছিলেন। কালজয়ী এক ছবি হিসেবে তাই আজও স্মরণীয় ‘ঝিন্দের বন্দি’।

কোনি 

১৯৮৬ সালে মুক্তি পায় এই ছবি। সরোজ দে পরিচালিত এই সিনেমায় মুখ্য ভূমিকায় দেখা যায় সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও শ্রীপর্ণা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।  জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এই ছবির সংলাপ ‘ফাইট কোনি ফাইট’ আজও দর্শকদের মুখে মুখে ফেরে। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen