বঞ্চনা জারি মোদী সরকারের, হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়সীমাতেও বাংলায় চালু হল না ১০০ দিনের কাজ!
জবকার্ড হোল্ডাররা কিছু টাকা পেতেন মাসান্তে। আশা ছিল, ফের কাজ পাবেন তাঁরা। কিন্তু কেন্দ্রের ভূমিকায় তাঁরা আশাহত, ক্ষুব্ধ।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১০:০০: বাংলাকে বঞ্চিত করার পথ থেকে কিছুতেই সরে আসছে না মোদী সরকার? কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের নির্দেশ ছিল, পয়লা আগস্ট থেকে কেন্দ্রকে বাংলায় ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পটি পুনরায় চালু করতে হবে। ১৮ জুন এই নির্দেশ দেয় কলকাতা উচ্চ আদালত। তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় দেড় মাস। আজও মোদী সরকার কোনও উচ্চবাচ্য করছে না। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তরফেও কিছু জানানো হয়নি। সাফ কথায়, হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করল কেন্দ্র। গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষের প্রতি বঞ্চনার পন্থা থেকে সরল না বিজেপি শাসিত কেন্দ্র সরকার।
আম জনতার গলায় কেবল আক্ষেপের সুর। জবকার্ড হোল্ডাররা কিছু টাকা পেতেন মাসান্তে। আশা ছিল, ফের কাজ পাবেন তাঁরা। কিন্তু কেন্দ্রের ভূমিকায় তাঁরা আশাহত, ক্ষুব্ধ। প্রশ্ন, আদৌ কি কাজ মিলবে? নাকি ন্যায্য প্রাপ্য থেকে আগাগোড়াই বঞ্চিত থেকে যাবে বাংলার মানুষ? কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও কীভাবে বাংলার প্রান্তিক মানুষকে ১০০ দিনের কাজের মতো রোজগারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রাখতে পারে মোদী সরকার?
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকে বাংলার ১০০ দিনের কাজের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার। বর্তমানে এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের বকেয়া ৪৪ হাজার ৯১৬ কোটি টাকা। হাইকোর্ট সাফ জানিয়েছিল, এই প্রকল্পের কাজ চালু রাখতে হবে। কারণ মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা আইনে কোথাও বলা নেই যে, অর্থের অনিয়ম হলে অনির্দিষ্টকাল প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকবে। তাতেও কর্ণপাত করল না মোদী সরকার।
হাইকোর্টের নির্দেশের পর কাজ পাওয়ার আশায় বুক বেঁধেছিলেন অনেকে। বিভিন্ন জেলার জবকার্ড হোল্ডাররা আবেদন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু, কোনও হেলদোলই নেই কেন্দ্রীয় সরকারের। সম্প্রতি বীরভূমের প্রশাসনিক সভা থেকে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের এই বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, কেন্দ্র রাজ্যের দেওয়া তথ্য-পরিসংখ্যান মেনে নিয়েও টাকা দেননি। এখন কলকাতা হাইকোর্টের রায়কেই গ্রাহ্য করছে না। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষ্কার করে কিছু বলছেন না। পরপর ভোটে হারের বদলা নিতেই যে টাকা আটকে রেখেছে, এটা স্পষ্ট।
জানা গিয়েছে, একশো দিনের কাজ চালু করতে আইনি লড়াই লড়া পশ্চিমবঙ্গ খেতমজদুর সমিতি, শুক্রবারই হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে এই আদালত অবমাননার বিষয়টি তুলে ধরবে। কেন্দ্র সরকারের উদাসীন মনোভাবের কথাও জানানো হবে।