সাড়ে ১১ লাখ মানুষ চিকিৎসা করিয়েছেন স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এত মানুষের পরিষেবা প্রাপ্তিকে বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল।

September 4, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

বিনা পয়সায় চিকিৎসা? তাও আবার নার্সিংহোমে! হয় নাকি কখনও? সত্যি সত্যিই যে হয়, তা অনেক আগেই প্রমাণ করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একটা সময় গরিব নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে নার্সিংহোমে গিয়ে চিকিৎসা করানোটা ছিল স্বপ্নের মতো। স্বাস্থ্যসাথীর হাত ধরে সেই স্বপ্ন বাস্তাবায়িত হল। রাজ্যের ১১ লক্ষ ৪৮ হাজার ৯৬৮ জন এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। তার জন্য সরকারি কোষাগার থেকে খরচ হয়েছে ১১৫৫ কোটি ৪৫ লক্ষ ৬১ হাজার ৯৯০ টাকা। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও এত মানুষের পরিষেবা প্রাপ্তিকে বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছে সংশ্লিষ্ট মহল।

স্বাস্থ্যসাথীর পরিষেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে বাঁকুড়া জেলা। এই জেলার এক লক্ষ ৩২ হাজার ৩৫৩ জন এই প্রকল্পের মাধ্যমে চিকিৎসা করিয়েছেন। যার আর্থিক পরিমাণ ১১৩ কোটি ৬৯ লক্ষ ৬৮ হাজার ৮৫ টাকা। সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে বাঁকুড়ার পরেই রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা। ওই জেলার এক লক্ষ ১৭ হাজার ৪৫১ জন চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ নিয়েছেন। যার মূল্য ১৪৮ কোটি ৭৯ লক্ষ ৯০ হাজার ২১৫ টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছে নদীয়া জেলা। সেখানের এক লক্ষ ৫৫৫৬ জনের চিকিৎসার জন্য রাজ্য মিটিয়েছে ৮৪ কোটি ৬৫ লক্ষ ৭০ হাজার ৩৮৩ টাকা। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের বাঁকুড়া জেলা প্রকল্প আধিকারিক মহম্মদ কৌসর আলি বললেন, দপ্তরের সমস্ত কর্মীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টাতেই আমরা শীর্ষস্থানে এসেছি। লকডাউন পরিস্থিতিতেও আমরা প্রায় ১৯ হাজার মানুষকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসার সুবিধা দিয়েছি।

২০১৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় টোকেন কার্ড তুলে দিয়ে এই প্রকল্পের সূচনা করেন। ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই প্রকল্পের আওতায় থাকা মানুষজনকে সুবিধা দেওয়ার কাজ শুরু করে রাজ্য সরকার। শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। বর্তমানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য, সরকারি চুক্তিভিত্তিক কর্মী, আশাকর্মী, সরকার পোষিত বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক, পার্শ্ব-শিক্ষক, কেবল অপারেটর সহ ৯২টি ক্যাটাগরির মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পান। প্রকল্প অনুযায়ী, যে কোনও ক্যাটাগরিতে থাকা পুরুষ বা মহিলারা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের জন্য প্রতি বছর পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা ফ্রিতে পান। পুরুষদের ক্ষেত্রে স্ত্রী, সন্তান, বাবা-মা ও প্রতিবন্ধী ভাইবোন এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে স্বামী, সন্তান, শ্বশুর-শাশুড়ি ও তাঁর নিজের বাবা-মা এই প্রকল্পের মাধ্যমে চিকিৎসার সুবিধা পান। বাঁকুড়া জেলায় এখনও পর্যন্ত মোট সাত লক্ষ ২৪ হাজার ৯২ জন স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন। শুধু লকডাউনের সময়েই জেলার ১৯ হাজার মানুষকে ১৬ কোটি ৭২ লক্ষ ৫৯ হাজার ৭৭৩ টাকার চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে মানুষের প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে আলাদা কাউন্টার তৈরি করা হয়। সেখানে জরুরি প্রয়োজনে নাম নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করে জেলা প্রশাসন। ফলে প্রয়োজনের সময় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকে সুবিধা পেয়ে বহু গরিব পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে। আর পাঁচটা সচ্ছল পরিবারের মতো তাঁরাও নার্সিংহোমে চিকিৎসা করানোর সুযোগ পাচ্ছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen