বিএফজেএ ২০২০- সিনেমার সমাবর্তনে চাঁদের হাট
বাংলায় যেমন প্রতিভার অভাব নেই, ঠিক সেভাবেই তাদের কদর করার মানুষেরও অভাব নেই। বাংলা চলচিত্রর নাম যেমন আকাশ ছুঁয়েছে, তেমনই সেই কাজকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্যে রয়েছে বিভিন্ন পুরস্কার। টালিউডের সবচেয়ে পুরনো অ্যাওয়ার্ড শো ওয়েস্ট বেঙ্গল ফিল্ম জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএফজেএ)। প্রত্যেক বছরেই এই অ্যাওয়ার্ড শো অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি শহরের একটি প্রেক্ষাগৃহে অনুষ্ঠিত হল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, যার পোশাকি নাম ‘সিনেমার সমাবর্তন’।
বিএফজেএ পুরস্কারে এবছর কৌশিক গাঙ্গুলির ছবি ‘নগরকীর্তন’ এর জয় জয়কার। এই ছবির ঝুলিতে এসেছে আটটি পুরস্কার। সেরা অভিনেতা এবং সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার যথাক্রমে পেলেন ঋদ্ধি সেন এবং শুভশ্রী গাঙ্গুলী। ‘নগরকীর্তন’ ছবিতে তাক লাগানো অভিনয়ের জন্য ঋদ্ধি ইতিমধ্যেই পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। আর ‘পরিণীতা’ ছবিতে তার অভিনয়ের মাধ্যমে সাধারণ দর্শককে মুগ্ধ করেছেন শুভশ্রী। ফিল্ম ক্রিটিক এবং জার্নালিস্টদের বিচারেই নির্বাচন করা হয় সেরাদের।
সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ছবির সিনেমাটোগ্রাফার সৌমেন্দু রায়কে দেওয়া হল লাইফটাইম অ্যাচিভমেন্ট সম্মান। স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়কে শাহাজাহান রিজেন্সিতে অভিনয়ের জন্যে সেরা সহ-অভিনেত্রী বিভাগে মনোনীত করা হয়। যদিও এই বিভাগে তাকে মনোনীত করা নিয়ে মোটেই সন্তুষ্ট নন স্বস্তিকা। তার মতে এই দেশে সবকিছুই হাস্যকর হয়ে গেছে। ওনার দাবি, এই ছবিতে তার সহ-অভিনেত্রীর ভূমিকা ছিল না।
সঙ্গীত বিভাগে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘শাহজাহান রিজেন্সি’ ছবির জয় জয়কার। সেরা সঙ্গীত যেমন পেয়েছেন অনুপম রায় ও প্রসেন, গানের কথার জন্য সেরার শিরোপা ছিনিয়ে নেন প্রসেন। এছাড়া, গায়ক হিসেবে সিনেমায় হাতেখড়ি হওয়ার সাথে সাথেই সেরা গায়কের পুরস্কার ঢুকলো অনির্বাণ ভট্টাচার্যের ঝুলিতে। ‘কিচ্ছু চাইনি আমি’ গানের জন্য সেরা গায়কের পুরস্কার পেলেন তিনি। এছাড়াও বিবাহ অভিযানের জন্যে পেয়েছেন সেরা কৌতুক অভিনেতার পুরস্কার।
বাংলা সিনেমা জগতের একাধিক তারকা এদিন উপস্থিত ছিল এই অনুষ্ঠানে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক কারা জিতলেন পুরস্কার:
সেরা অভিনেতা- ঋদ্ধি সেন (নগরকীর্তন)
সেরা অভিনেত্রী- শুভশ্রী গঙ্গোপাধ্যায় (পরিণীতা)
সেরা পরিচালক- কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (নগরকীর্তন)
সেরা ছবি- নগরকীর্তন (কৌশক গঙ্গোপাধ্যায়)
সেরা চিত্রনাট্য- কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (নগরকীর্তন)
সেরা অভিনেতা (জনপ্রিয়তার বিচারে)- প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় (গুমনামি) ও দেব (সাঁঝবাতি)
সেরা সহ অভিনেত্রী- সুদীপ্তা চক্রবর্তী (জ্যেষ্ঠপুত্র) ও লিলি চক্রবর্তী (সাঁঝবাতি)
সেরা সহ অভিনেতা- রুদ্রনীল ঘোষ (কেদারা)
সেরা নবাগত অভিনেত্রী- তুহিনা দাস (ঘরে বাইরে আজ)
সেরা নবাগত পরিচালক- ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত (কেদারা)
সেরা গায়িকা – লগ্নজিতা ঘোষ (প্রেমে পড়া বারণ, ছবি- সোয়েটার)
সেরা গায়ক- অনির্বাণ ভট্টাচার্য (কিচ্ছু চাই নি আমি, শাহজাহান রিজেন্সি)
সেরা গীতিকার- দীপাংশু আচার্য (কিচ্ছু চাই নি আমি, শাহজাহান রিজেন্সি)
সেরা সঙ্গীত- অনুপম রায় ও প্রসেন (শাহজাহান রিজেন্সি)
সেরা আবহ সঙ্গীত- প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায় (নগরকীর্তন)
সেরা সাউন্ড ডিজাইনার- অনির্বাণ সেনগুপ্ত (কেদারা)
সেরা সিনেমাটোগ্রাফার- শুভঙ্কর ভর (কেদারা)
সেরা সম্পাদক- শুভজিত সিংহ
সেরা শিল্প নির্দেশক- শিবাজি পাল (গুমনামি)
সেরা মেক আপ- রাম রেজ্জাক (নগরকীর্তন)
সেরা কস্টিউম- গোবিন্দ মন্ডল (নগরকীর্তন)