কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

সাহিত্য বাসরে ধুন্ধুমার, স্বপন-ভঙ্গ বই অনুরাগীদের

January 22, 2020 | 2 min read

সত্যজিৎ রায় বেঁচে থাকলে হয়তো জটায়ুর নতুন বইয়ের নাম দিতেন ‘ভিক্টোরিয়ায় বিভীষিকা’; সাহিত্য বাসরে আজ যে দৃশ্যের সাক্ষী থাকলো মহানগরী, তাতে মানিকবাবুকেও দোষ দেওয়া যায় না।

টাটা স্টিল আয়োজিত কলকাতা সাহিত্য বাসর (লিটারারি মিট) অন্যান্য বছরের মত এবারেও বসেছে কলকাতার অন্যতম ‘আইকন’ ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল’ এর উদ্যানে। সেখানেই আজ সন্ধেবেলা রাজ্যসভা সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তর বইপ্রকাশ অনুষ্ঠান এবং আলোচনা চক্রে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। গোল বাঁধলো সেখানেই।

ছবি সৌজন্যে: উইকিপিডিয়া

স্বপন বাবুর ‘সেশন’ হওয়ার কথা সন্ধ্যে ৭টায়। তার আগেই ৬টা থেকে ভিক্টোরিয়াতে সাহিত্য বাসরের অনুষ্ঠানে দর্শকদের ঢুকতে বাধা দেয় ভিক্টোরিয়ার সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা সিআরপিএফ জওয়ানরা। তাদের বক্তব্য দৈনিক পাস শেষ হয়ে যাওয়ার দরুন আর কাউকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। কিন্তু শুরু থেকেই বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে আয়োজকরা বলেছেন “নো পাসেস রিকোয়ার্ড’ (কোনও পাস লাগবে না)। তাই দর্শকদের একাংশও ঢুকতে চেয়ে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। আবহাওয়া উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে পুরুষ সিআরপিএফ জওয়ানরা মহিলাদের নিগ্রহ করেন।

অমিতাভ ঘোষের সেশন চলাকালীন যখন পরবর্তী সেশনের বক্তাদের পরিচয় দেত্তয়া হয়, তখন দর্শকের একাংশ স্বপন দাসগুপ্ত এবং বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন, এবং কিছু পোস্টার তুলে ধরেন। বিশ্ব ভারতীতে ছাত্রদের ওপর আক্রমণের প্রতিবাদের অঙ্গ ছিল এই প্রদর্শন। আয়োজকরা সেই পোস্টার কেড়ে নিতে গেলে ধস্তাধস্তি হয়। এই ঘটনা সম্পর্কে টুইট করেন স্বপন দাসগুপ্ত। তিনি বলেন, বামপন্থী অসহিষ্ণুতা বর্জন করার সময় এসেছে।

অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার পর সরব হয়েছেন। এর আগেও এই সাহিত্য বাসরে অনেক ভিভিআইপি অতিথি এসেছেন। নিরাপত্তার কড়াকড়ি সত্ত্বেও কোনওদিন কাউকে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়নি। বইমেলায় প্রথম বছর অনুষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে পাসের ব্যবস্থাও তুলে দেওয়া হয়। তবে আজ হঠাৎ পাসের জন্য কড়াকড়ি কেন? সিআরপিএফ জওয়ানরা সাধারণ দর্শকদের নিগ্রহ করলেন কেন? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আমরা দেখেছি কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবে আসন না থাকলেও লোকে মাটিতে বসে ছবি দেখেন। কলকাতা লিটারারি মিটেও এমন বহু সেশন হয়েছে যেখানে মাঠ ভর্তি লোক দাঁড়িয়ে আলোচনা চক্র আত্মস্থ করেছেন। আজ তবে একজন সাংসদের অনুষ্ঠান ঘিরে সেই সাহিত্য বাসরে এই রকম অনভিপ্রেত ঘটনা কেন ঘটল, সেই প্রশ্নের উত্তর দাবি করে তিলোত্তমা।

তবে কি সংস্কৃতির পীঠস্থান এই শহরে নতুন ভারতের সাংসদদের প্রশ্ন করা যাবে না?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

আরো দেখুন