বেলডাঙার স্কুলে মিড–ডে মিলের ভোজনকক্ষে চলছে সম্প্রীতির পাঠ
স্কুলে এসে মিড–ডে মিলের খাবার খেতে খেতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির পাঠ নেবে পড়ুয়ারা। এমন অভিনব ভাবনা থেকেই গড়ে উঠেছে স্কুলের ভোজনকক্ষটি। পড়ুয়ারা জানবে তার সঙ্গে স্কুলে পড়তে আসা এবং পাশে বসা সহপাঠী তার বন্ধু। সে কোন সম্প্রদায়ের বা জাতির, তা তার কাছে কিছুই এসে যাবে না। সেই পরিকল্পনা থেকেই স্কুল কর্তৃপক্ষ তৈরি করিয়েছেন ভোজনকক্ষটি। নতুন ভোজনকক্ষ পেয়ে খুব খুশি পড়ুয়ার দল। এখন থেকে তারা টেবিলে রেখে খাবার খাবে জেনে আনন্দে আত্মহারা।
সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার নওপুকুরিয়া জে জে হাই স্কুলে তৈরি করা হল ছাত্রছাত্রীদের ভোজনকক্ষ। ভোজনকক্ষটির নাম রাখা হয়েছে ‘এসো বসো আহারে’। একই সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল রাখার সুবিধার জন্য তৈরি করা হয়েছে সাইকেল গ্যারেজ ‘ঠিকানা’। মিড–ডে মিলের খাওয়ার জায়গা অর্থাৎ ভোজনকক্ষটি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। সর্বধর্ম সমন্বয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে চারদিকে নানা রঙিন ছবি ঝাঁ চকচকে খাওয়ার ও বসার জায়গা ইত্যাদির মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের মিড–ডে মিল খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বাড়ানো হয়েছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, পড়ুয়াদের মিড–ডে মিলের খাওয়ার জন্য কোনও ঘর না থাকায় তাদের অসুবিধা হত। আমাদেরও খারাপ লাগত। শেষে কষ্ট হলেও ঘর তৈরি করা হয়েছে। আসলে বিভিন্ন পরিবেশ থেকে বিভিন্ন আর্থিক সঙ্গতিপূর্ণ ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে আসে। ভোজনকক্ষ না থাকায় অনেকে খেতে চাইত না। এখন এইরকম সুন্দর পরিপাটি খাওয়ার ঘর দেখে ছাত্রছাত্রীরা একসঙ্গে খেতে বসছে।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মৃগাঙ্কমৌলি বিশ্বাস জানান, ভোজনকক্ষটি তৈরি করার সময় একটি থিমের পরিকল্পনা করা হয়। স্কুলে ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা গ্রহণ করে বড় হয়। সেখানে তাদের যে শিক্ষা দেওয়া হবে, ভবিষ্যতে তারা সেই শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে চলবে। তাই বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে সম্প্রতির পাঠ দেওয়া আমাদের কর্তব্য বলেই মনে হয়েছে। সেই ভাবনা থেকেই ঘরটি তৈরি করা হয়েছে। ঘরের দেওয়াল জুড়ে ছবির মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। বিখ্যাত শিল্পী যামিনী রায়ের আঁকা ছবি রাখা হয়েছে। এমনকী যে খাবার তারা খাচ্ছে তার গুণাগুণ লেখা আছে। তা দেখে পড়ুয়ারা সচেতন হবে। কোন ভিটামিনেের অভাবে কী রোগ হতে পারে সে সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল হবে।