দেশ বিভাগে ফিরে যান

পড়ুয়াদের প্রতিবাদেকেই সাধুবাদ নোবেলজয়ীর

January 25, 2020 | 2 min read

ছবি সৌজন্যেঃ The Print

সম্প্রতি জানা গেছে গণতন্ত্রের সূচকে আরও ১০ ধাপ নেমেছে ভারত। দেশের গণতান্ত্রিক পরিসর ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হওয়া নিয়ে যখন বিরোধী ও জনসাধারণের ক্রমাগত প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার, তখনই কলকাতায় এসে নাৎসি জার্মানির স্মৃতি উস্কে দিলেন নোবেলজয়ী মার্কিন রসায়নবিদ জোয়াকিম ফ্র্যাঙ্ক। একটি কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই সমাবর্তন মঞ্চ থেকে তিনি সওয়াল করলেন ছাত্রশক্তির ঐক্যবদ্ধ রাজনৈতিক সচেতনতার পক্ষে। যা এই মূহূর্তে ভারতীয়রই মনের কথা।

ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউট কলকাতার ৫৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জোয়াকিম। নিজের বক্তব্যের এক বিশাল অংশতে তিনি ১৯৬০-এর দশকে নিজের ছাত্রাবস্থার কথা তুলে ধরেন। কী ভাবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ২৫ বছর কেটে যাওয়ার পরেও জার্মানির মিউনিখ শহরে তিনি দেখেছেন, মানুষের মজ্জায় নাৎসি জার্মানির ভাবনাচিন্তারই প্রতিফলন, সেকথাও বলেন উপস্থিত সকলকে। সেই ভাবধারার বিপরীতে গিয়ে ভিয়েতনামের যুদ্ধের বিরুদ্ধে বা পারস্যের শাহের বিরুদ্ধে ছাত্র-যুবরাই কী ভাবে মিউনিখের রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে নতুন সমাজ গঠনে ভূমিকা নিয়েছিলেন, সে কথাও মনে করিয়ে দেন এই জীবপদার্থবিদ।

তাঁর বক্তব্যের মূল বিষয় ছিল- হিটলারের পতন হলেও তাঁর বোনা বিদ্বেষ এবং বিভাজনের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীরাই রাস্তায় নেমে সমাজ গঠন করেন। কী ভাবে পড়ুয়াদের বিক্ষোভের মুখে মধ্যযুগীয় পোশাক বিধি বাতিল করতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বাধ্য হয়েছিল, সে কথাও সবিস্তারে তিনি।

বিভাজন ও অনৈক্যের ধারক রাজনীতিবিদদের প্রত্যাখ্যান করার বার্তা দিলেও জোয়াকিম কিন্তু একবারও সরাসরি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ‘নতুন ভারত’-এর কথা বলেননি। নামও করেননি কারও। জোয়াকিমের বক্তব্য, ‘একসঙ্গে থাকার বদলে বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক নেতারা আমাদের বিভাজিত করার কাজেই বেশী জোর দিচ্ছেন।’ সেই বিভাজনের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের জোরালো ভূমিকা থাকা উচিত বলেই তিনি মনে করছেন।

আইএসআইয়ের অনেক অধ্যাপকেরই ব্যাখ্যা, একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞানী সমাবর্তনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে নাৎসি জার্মানির প্রসঙ্গ বা ছাত্র আন্দোলনের ইতিহাস নিছক স্মৃতিচারণের জন্যই করেননি। বরং, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি বিতর্ক সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হয়েই নোবেলজয়ীর এই অভিমত। 

এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমাবর্তন শেষ হতেই সিএএ এবং এনআরসির বিরোধিতায় সরব হন আইএসআইয়ের ডিগ্রীপ্রাপক পড়ুয়া-গবেষকদের একাংশ। ‘কাগজ দেখাব না’ প্রচারের সঙ্গে সহমত জানিয়ে অনেক পড়ুয়াই ডিগ্রী হাতে ছবি তোলেননি। বরং তাঁরা শংসাপত্রের উল্টো দিক দেখিয়ে ছবি তোলেন। অন্যতম ডিগ্রীপ্রাপক প্রিয়মা মজুমদার বলছিলেন, ‘জোয়াকিম যা বলেছেন, তা আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। আমরাও তাই ডিগ্রী দেখাব না বলেই ডিগ্রী সার্টিফিকেটের উল্টো দিক দেখিয়ে ছবি তুলেছি।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Joachim Frank, #Nobel Laureate, #Student's Protest

আরো দেখুন