রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

সিএএ-র প্রতিবাদে আন্দোলনে যোগদান পশ্চিমবঙ্গের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের

January 28, 2020 | 2 min read

সৌজন্যে: PTI Photo

পশ্চিমবঙ্গের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের বহু মানুষ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের(সিএএ) প্রতিবাদে লড়াইয়ে নেমেছেন। তারা তিনটি কর্মসূচীর মাধ্যমে এই আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সেগুলি হল পদযাত্রা, গির্জায় বিভিন্ন কর্মসূচী যা বিগত একমাস ধরে চলছে, এবং জেলায় জেলায় আগামী দিনে বিভিন্ন অনুষ্ঠান। তাদের এই লড়াই সংবিধান রক্ষার স্বার্থে এবং সমাজ বিভাজনের বিরূদ্ধে।

রবিবার যখন গোটা দেশ প্রজাতন্ত্র দিবস পালন করছিল তখন কলকাতা সহ  সংলগ্ন জেলাগুলি হাওড়া, হুগলী, উত্তর ও দক্ষিন ২৪ পরগনার ৬৫টি গির্জায় সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করা হয়। গির্জায় এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম। রাজনীতি বিশারদদের মতে খ্রিস্টান সম্প্রদায় স্বাধীনতার পর থেকে খুব কম সংখ্যক রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেছে। 

কলকাতার আর্চ বিশপ, থমাস ডি’সুজা বলেন, “আমাদের অধীনে থাকা ৬৫ টি গির্জায় সংবিধানের প্রস্তাবনা পাঠ করা হয়। আমাদের এতো সুন্দর সংবিধান দেওয়ার জন্যে ভগবানকে ধন্যবাদ জানাতে এই পাঠ। আমরা একটা খুব খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা এবং সাম্যের মৌলিক নীতিগুলি রক্ষা করতে হবে।”

রাজধানীতে শতাধিক খ্রিস্টান আর্চবিশপের আহ্বানে সাড়া দিয়ে “সর্ব-ধর্ম” মানববন্ধনে যোগ দিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ। দক্ষিণ কলকাতার গোলপার্ক থেকে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার বিস্তৃত এই মানব বন্ধনের সংগঠক ছিল ইউনাইটেড ইন্টারফেইথ। 

এছাড়াও খ্রিস্টানদের প্রভাবশালী সংগঠন বঙ্গীয় খ্রিস্ট পরিসেবা আগামী কয়েক মাস ধরে বাংলার জেলাগুলিতে একাধিক নাগরিক সমাবেশের পরিকল্পনা করেছে।

বঙ্গীয় খ্রিস্ট পরিসেবার সম্পাদক হেরদ মল্লিকের মতে, “আমরা এই আন্দোলনকে গ্রামে গঞ্জে ছড়িয়ে দেব। সিএএ-র মাধ্যমে ধর্মের ভিত্তিতে মানুষকে বিভাজন করা  হচ্ছে। আজকে একটা ধর্মকে নিশানা করা হয়েছে, কাল অন্য কাউকে করা হবে। আমাদের এটা ভুললে চলবে না যে এর আগেও এই বিভাজন শক্তি বাংলা, ওড়িশার খ্রিস্টান সম্প্রদায়কে আক্রমণ করেছে। সারা দেশকে একতার সাথে সংবিধানকে রক্ষা করতে হবে।”

এই মাসের শুরুতে, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজের ছাত্র পরিষদ এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সিএএ এবং ন্যাশনাল রেজিস্ট্রার অফ সিটিজেনের (এনআরসি) বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে একটি মিছিলের নেতৃত্ব দেয়। কলেজের অধ্যক্ষ, ফাদার ডমিনিক স্যাভিও এতে অংশ নিয়েছিলেন। 

যদিও খ্রিস্টানরা রাজ্যের জনসংখ্যার ১% এরও কম, তবে শত শত মিশনারি-পরিচালিত  স্কুলগুলির কারণে তাদের সমাজে উল্লেখযোগ্য সাংস্কৃতিক প্রভাব রয়েছে বলে মনে করা হয়।

“খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের অংশগ্রহণ একটি উল্লেখযোগ্য বিষয়, কারণ তারা কখনই কোনও রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে নিজেকে যুক্ত করেনি। খ্রিস্টানদের  এই আইনের কারণে বৈষম্যের শিকার না হওয়া সত্ত্বেও, মুসলিমদের সমর্থনে সিএএর বিরোধিতা, বাঙালি সমাজে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে।” প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায়।   

ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) সিএএ  বিরোধী বিক্ষোভে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেছে। পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর মতে, “খ্রিস্টান মিশনারিরা দীর্ঘকাল ধর্মীয় রূপান্তর করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত করার চেষ্টা করেছে। এখন তারা টুকরে-টুকরে গ্যাংয়ে যোগ দিয়েছে।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#“All-faith” human chain, #Kolkata, #Anti-CAA Protests, #Bengali Christians

আরো দেখুন