স্বাস্থ্য বিভাগে ফিরে যান

করোনা ভাইরাসে ভরসা জনসচেতনতাই

January 31, 2020 | 3 min read

করোনা ভাইরাস বাঁচার উপায় একমাত্র সাবধানতা, ছবি সৌজন্যেঃ cambridgemask.com

করোনা ভাইরাসের মোকাবিলায় হাসপাতালকে প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি চিকিৎসাকর্মী এবং হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনদের সচেতন করতেও উদ্যোগী হল বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল। নভেল করোনা ভাইরাসের মতো সংক্রামক রোগ থেকে নিজেকে রক্ষা করার উপায় বাতলে পোস্টার লাগানো হল এই হাসপাতালের তরফে। হাসপাতালের অধ্যক্ষ বলেন, ‘নভেল করোনাভাইরাস এখনও ভারতে আসেনি। কিন্তু যেহেতু ইতিমধ্যেই একাধিক দেশে এর প্রভাব দেখা গিয়েছে, তাই আমাদের তরফে সচেতনতামূলক পোস্টার তৈরী করে সাবধান করার চেষ্টা করা হয়েছে। কারণ, এই রোগে আক্রান্ত যে কেউ যে কোনও সময়ে হাসপাতালে এসে পড়তে পারে।’

মাস দেড়েক আগে ধরা পড়া করোনা ভাইরাসের এই নতুন টাইপ চীনের উহান শহরে ইতিমধ্যেইপ্রাণ কেড়েছে ১৭ জনের। চীন থেকে সরাসরি আসা যাত্রীদের মধ্যেসম্ভাব্য নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিহ্নিতকরণের কাজও শুরু হয়েছে কলকাতা-সহ দেশের বেশ কিছু বিমানবন্দরে।

আইডি ইতিমধ্যেই সম্ভাব্য নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় দশ বেডের আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রেখেছে। হাসপাতালের উপাধ্যক্ষ বলেন, ‘আইসোলেশনের মধ্যেও আইসোলেশনের ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের এখানে। যাতে আইসোলেশন ওয়ার্ডের মধ্যেও সম্ভাব্য আক্রান্তরা একসঙ্গে না-থাকেন, তাই তাঁদের এক-একটি আলাদা কেবিনে রাখার ব্যবস্থা হয়েছে।’

আইসোলেশন ওয়ার্ডে কর্মরত চিকিৎসক এবং চিকিৎসাকর্মীদের জন্য সংক্রমণরোধী পোশাকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়াও আইসোলেশন ওয়ার্ডের মধ্যে ব্যবহৃত জল যাতে সরাসরি পুরসভার বর্জ্যনালায় পড়ার বদলে আগে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের মধ্যে দিয়ে বর্জ্যনালায় যায়, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উপাধ্যক্ষের কথায়, ‘যেহেতু এই ভাইরাস কতটা ক্ষতি করতে পারে সে বিষয়ে এখনও সুস্পষ্ট ধারণা নেই, তাই পাবলিক হেলথ বিশেষজ্ঞ হিসেবে মনে করি, আইডি হাসপাতালের আশপাশের বাড়িতে সচেতনতা কর্মসূচী চালানো প্রয়োজন। কারণ, একবার সম্ভাব্য আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হলে তখন ঝুঁকিটা অনেকটা বেড়ে যেতে পারে।’

রাজ্য প্রাণী ও মৎসবিজ্ঞান বিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের শিক্ষক চিকিৎসক বলছেন, করোনাভাইরাস কিন্তু আমাদের পরিবেশেই থাকে। সাধারণ সর্দি-কাশি ঘটায় এই ভাইরাস। বিপদ এই নতুন প্রজাতিকে নিয়ে। কারণ, জেনোমিক মিউটেশন হয়ে এর সারফেস অ্যান্টিজেন বদলে গিয়েছে। ফলে মানুষের কোষের বাইরে থাকা রিসেপ্টরের মাধ্যমে কোষের ভিতরে ঢুকতে বেশি সক্ষম হয়ে গিয়েছে। ফলে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হারও বাড়ছে।’

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা অবশ্য এখনই কলকাতাবাসীদের বিশেষ আশঙ্কিত হতে মানা করছেন। তাঁদের পরামর্শ সচেতন হওয়ার। তিনি বলছেন, ‘চিনের উহান শহর বা তার কাছাকাছি কোনও জায়গা থেকে ঘুরে আসার সপ্তাহ দু’য়েকের (দু’সপ্তাহ হল কোয়ারেনটাইন পিরিয়ড বা ভাইরাস শরীরে প্রবেশের পর উপসর্গ প্রকাশের মধ্যবর্তী সময়কাল) মধ্যে কারও যদি সর্দি-কাশি-জ্বর দেখা যায়, তা হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে গেলেই হবে। অযথা ভয় পাওয়ার কিছু নেই।’

সাধারণতন্ত্র দিবসের প্রাক সন্ধ্যায় পদ্মশ্রী পুরষ্কারের তালিকা ঘোষণা করে কেন্দ্র সরকার। সেই তালিকায় বাংলার নাম উজ্জ্বল করেছেন এক চিকিৎসক। বিরাটির অরুণোদয় মণ্ডল। দীর্ঘদিন ধরে প্রান্তিক এলাকা গিয়ে পিছিয়ে পড়া মানুষজনের নিঃস্বার্থ সেবা করে চলেছেন তিনি। এবার তাঁর সেই সেবার স্বীকৃতি দিল কেন্দ্র সরকার।

এ যাবৎ বাংলার বহু চিকিৎসক পদ্মশ্রী পুরস্কার পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে অরুণোদয় মণ্ডল যেন অনন্য। দীর্ঘদিন ধরে নিঃস্বার্থভাবে সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। প্রতি সপ্তাহের শেষে কলকাতা থেকে ছ’ঘণ্টার পথ পেরিয়ে অরুণোদয়বাবু চলে যান সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকায়। তাঁর অপেক্ষায় থাকেন কয়েক শো রোগী। তাঁদের বেশিরভাগই গরিব, দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করেন। শনিবার সেখানেই রাত কাটিয়ে রবিবার সকাল থেকে রোগী দেখা শুরু করেন তিনি।

বাঙুর অ্যাভিনিউতে বাড়ি অরুণোদয়বাবুর। জানা গিয়েছে, শনিবার সকাল-সকাল হাসনাবাদ লোকালে উঠে পড়েন। সঙ্গে থাকে ওষুধের ব্যাগ। তার পর হাসনাবাদ স্টেশনে নেমে সেখান থেকে ভ্যান রিকসায় চেপে পৌঁছন নদীর ঘাট পর্যন্ত। নৌকায় নদী পার হয়ে বাসে দেড় ঘণ্টার পথ লেবুখালি। আবার নৌকায় রায়মঙ্গল নদী পার হয়ে দুলদুলির ঘাট।
সেখান থেকে অটোতে সাহেবখালি গ্রাম পঞ্চায়েতের দায়পাড়ায় রয়েছে তাঁর ‘সুজন চিকিত্‍সা কেন্দ্র’। অরুণোদয়বাবু ‘সুন্দরবনের সুজন’ বলেই পরিচিত। শুধু প্রেসক্রিপশনে ওষুধ লিখে দেওয়াই নয়। তাঁদের ওষুধও জোগাড়ও করে দেন অরুণোদয়বাবুই। নিয়ম করে চলে রক্তদান শিবির।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Symptoms, #Protection, #awarenes, #China Coronaviruses, #Coronavirus

আরো দেখুন