শহরের ঐতিহ্যময় ইতিহাস তুলে ধরতে চন্দননগর উৎসব
আমরা কথায় বলি বিন্দু বিন্দু থেকে সিন্ধু হয়। যখন উদ্ভাবনী চিন্তা ও কলাকুশলী এক জায়গায় মেশে, তৈরী হয় এক অভূতপূর্ব অনুষ্ঠান। এটাই হতে চলেছে আগামীকাল থেকে শুরু হতে চলা দ্বিতীয় চন্দননগর উৎসবে। এখানকার বাসিন্দারা কয়েক দশক ধরে এখানকার ফরাসি কলোনির ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে সচেষ্ট হয়েছেন।
এবারের মেলা চলবে সেন্ট মেরিজ পার্কে ৩রা থেকে ৬ই ফেব্রুয়ারি। থাকবে গান, যাত্রা এবং স্থানীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠান। স্থানীয় অনেক সম্মানীয় ব্যক্তিকে সম্মান জানানো হবে। এনারা শুধু স্থানীয় বাসিন্দা নন, তাঁদের অনুদান উল্লেখযোগ্যও বটে। ওনারা ‘চন্দননগরের গৌরব’।
সপ্তদশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে ফরাসিরা এখানে উপনিবেশ গড়ে তোলে। ১৬৮৮ সালে মোঘল সুবেদারের থেকে ফরাসিরা এখানে ব্যবসার অনুমতি আদায় করে। ১৭৩০ সালে ফরাসি গভর্নর ডুপ্লেসিসের অধীনে আফিম, রেশম, রুলো, চাল, চিনির বাণিজ্যে এই অঞ্চলে হয়ে ওঠে ইউরোপীয় দেশগুলির সঙ্গে বাংলার বাণিজ্যের মূল কেন্দ্র। পরে ব্রিটিশ রাজত্বের সময়েও ফরাসিরা এখানে তাঁদের আধিপত্য বজায় রেখেছিল। ১৯৪৭ সালের ভারতের স্বাধীনতার পরেও এই অঞ্চলে উপনিবেশ ছিল এবং আইনত ভারতের অংশ হয় ১৯৫২ সালে ও পশ্চিমবঙ্গের অংশ হয় ১৯৫৪ সালে।
এবারে সেন্ট মেরিজ পার্কের প্রাঙ্গণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জমজমাট হবে। ৩রা ফেব্রুয়ারি সুরজিৎ চট্টোপাধ্যায়, মাধুরি দে, গুরুজিৎ সিং অনুষ্ঠান করবেন। ৪ঠা ফেব্রুয়ারি স্থানীয় বিধায়ক তথা গায়ক ইন্দ্রনীল সেন গাইবেন জোজোর সঙ্গে। ৫ই ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠান পরিবেষণ করবেন লোপামুদ্রা মিত্র, রূপঙ্কর বাগচী, অরিত্র দাসগুপ্ত। শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হবে চৈতন্য অপেরার গঙ্গাপুত্র ভীষ্ম যাত্রাপালা। স্থানীয় শিল্পীদের অনুষ্ঠানও থাকবে প্রতিদিন।