বাংলার লোক নৃত্য – এক সম্ভ্রান্ত ঐতিহ্য
বাংলা বরাবরই লোকশিল্পে সমৃদ্ধ। লোকগান, লোকনৃত্য, যাত্রা, পালাগান – কি নেই এই বাংলার ঝুলিতে? বাংলার লোকনৃত্যও যথেষ্ট সমৃদ্ধ।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক বাংলার পাঁচ বিখ্যাত লোকনৃত্য:
গম্ভীরা
মালদা জেলার এক ঐতিহ্যশালী লোকনৃত্য। সময়ের সাথে সাথে এই লোকনৃত্যে অনেক বদল এসেছে। মূলত দুজন নৃত্য শিল্পী হারমোনিয়াম ও বাঁশির সাথে নাচেন। এবং তারাই কথক হিসেবে গান করে এক একটা গল্প ফুটিয়ে তোলেন।
শুরুর দিকে কৃষি কাজ এই লোকনৃত্যের থিম ছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে ধর্মীয় বিষয়ও এই শিল্পের থিম হয়ে উঠেছে।
কীর্তন
৫০০ বছর পুরনো এই নৃত্য মূলত নারদ মুনি তাঁর আরাধ্য ভগবান বিষ্ণুকে খুশি করার পরিবেশন করতেন। মূলত বিষ্ণুর প্রশংসাই ছিল এই গানের মূল বিষয়। তার সাথে চলত নাচ।
নদীয়া অঞ্চলেই মূলত প্রসিদ্ধ এই শিল্প এখন কৃষ্ণের ভক্তিগীতি। যা ভগবানের উদ্দেশ্যে ভক্তরা গেয়ে থাকে এবং তার তালে তালে চলে এই বিশেষ কীর্তন নাচ।
কুশান নৃত্য
কু মানে খারাপ এবং শান কথার অর্থ বিতাড়িত করা। কুশান কথার অর্থ অশুভ শক্তির বিনাশ। রামায়ণ মহাকাব্যের গল্প নিয়ে হয় এই লোক নৃত্য। পুরুষরাই মূলত এই নাচ করে।
পুরুষরা মহিলাদের মতো পোশাক পড়ে এই নৃত্য পরিবেশন করে থাকে। নৃত্য শিল্পীরাই বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় হারমোনিয়াম, বাঁশি, খোলের সাথে গান গায় এবং তার সাথে নাচে।
আল্কাপ
গ্রামীণ মালদা এবং ওপার বাংলার রাজশাহীর এক অত্যন্ত জনপ্রিয় লোক নৃত্য। মূলত শিবের গাজন উৎসবে পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন গল্পের ওপর ভিত্তি করে হয় এই পালা। মূল শিল্পী বাদেও সমবেত গাওয়ার জন্যে অন্য শিল্পীরা থাকে।
ছৌ
পুরুলিয়ার ছৌ শুধু বাংলা নয় পৃথিবী বিখ্যাত একটি নৃত্য শৈলী। চৈত্র মাসে সূর্য দেবের আরাধনায় মুখোশ পড়ে এই অনবদ্য এই নাচ করা হয়।