দেশ বিভাগে ফিরে যান

বাজেটে মিম-ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়

February 4, 2020 | 3 min read

কেন্দ্রীয় বাজেটের পর সাধারণ মানুষের হাতে কী থাকল? আলোচনা, তক্কো-বিতক্কে সরগরম বিভিন্ন চ্যানেল। তবে সে সব তো বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকদের আলোচনা। আমজনতা কী ভাবছেন? সে জন্য চোখ রাখতে হবে টুইটারে, একঝলক ফেসবুক দেখলেও চলবে। বাজেট বক্তৃতায় তখন সবেমাত্র হরপ্পা সভ্যতার সিলমোহর নিয়ে মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী, শুরু হয় ‘ট্রোলিং’। তার পর থেকে দিনভর মিমের ঝড় সোশ্যাল মিডিয়ায়। বেশিরভাগই বিদ্রূপাত্মক, তবে রসপূর্ণ।

এ দিন অর্থমন্ত্রীকে নিয়ে একটা বড় সময় ‘ব্যস্ত’ ছিলেন নেটিজেনরা। কেন? বাজেট বক্তৃতা দিতে গিয়ে হরপ্পা সভ্যতার অনুষঙ্গ টেনে আনেন নির্মলা। আরও নির্দিষ্ট করে বললে সে সময়ের সিলমোহরের কথা উল্লেখ করেন তিনি। দাবি করেন, তাতে ‘শ্রেণি’ বলে একটি শব্দ লেখা ছিল যার অর্থ ‘গিল্ড’। ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ভারতেও যে ব্যবসায়িক লেনদেন দিব্যি প্রচলিত ছিল, সে কথা তুলে ধরতে হরপ্পা সভ্যতার উদাহরণ পেশ করেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আর তাতেই ব্যঙ্গের বান ডাকে টুইটারে। 

একাধিক টুইটারেট্টি নির্মলাকে মনে করিয়ে দেন, যে সময়ের সিলমোহরের কথা তিনি বলছেন তার পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এখনও। কোথাও ইঙ্গিত, কোথাও কটাক্ষে অর্থমন্ত্রীকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, যে লিপির পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়নি তার শব্দার্থ এ ভাবে বাজেট বক্তৃতায় ঘোষণা করা ‘ভুয়ো খবর’ ছড়ানোরই সামিল। কারও আবার প্রশ্ন, ‘তবে কি নির্মলা সীতারামনজি হরপ্পার লিপির পাঠোদ্ধার করেছেন?’ 

সৌজন্য: Storypick

কেউ আবার লিখেছেন, ‘এটি অর্থ মন্ত্রকের বাজেট নয়। এটি অর্থের ইতিহাসের বাজেট।’ প্রধানমন্ত্রী মোদী ও তাঁর দলের প্রায় প্রত্যেকের মুখে পাকিস্তানের কথা প্রায়ই শোনা যায়, এমন অভিযোগ বিরোধীদের মুখে নতুন নয়। এ নিয়ে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কটাক্ষ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। কেন্দ্রীয় বাজেটের দিনে কার্যত এক কথা লিখলেন নেটিজেনদের কেউ কেউ। শমিত বসু নামে এক টুইটারেট্টি লেখেন, ‘হরপ্পা একে তো অতীতের অংশ, তায় বর্তমানে পাকিস্তানে পড়ে গিয়েছে। স্বাভাবিক ভাবে সেটিই অগ্রাধিকার পাবে।’

সৌজন্য: Youtube

জেএনইউয়ের এই প্রাক্তনীকে অবশ্য আগেও টুইটারেট্টিদের ঠেস শুনতে হয়েছে। কয়েক দিন আগে বিবেকানন্দের বাণী টুইট করেছিলেন তিনি যার প্রেক্ষিতে এক নেটিজেন দাবি করেন, বাণীটি ভুল উদ্ধৃত করেছেন অর্থমন্ত্রী। তাঁকে সম্বোধন করতে গিয়ে ‘সুইটি’ শব্দটিও জুড়ে দেন ওই ব্যক্তি। তবে রাজনৈতিক মতামত নির্বিশেষে সোশ্যাল মিডিয়ার বাসিন্দাদের বড় অংশ সে দিন নির্মলার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এ দিন অবশ্য কোনও ভাবেই রেয়াত করা হয়নি তাঁকে বা তাঁর দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরকে।

সৌজন্য: Youtube

ক্ষোভ প্রকাশে মিম-ব্যঙ্গই ছিল তাঁদের হাতিয়ার যার মধ্যে বেশিরভাগের ‘থিম’ ছিল আয়কর ছাড়। এ বারের বাজেটে নতুন-পুরোনো দু’রকম ব্যবস্থাই রাখা হয়েছে। তবে তুল্যমূল্য বিচারে মধ্যবিত্ত, চাকুরিজীবীর লাভ কতটা? সরল অঙ্কের মতো জটিল হিসেব। মিমে সেই হতাশার ছোঁয়া। কোথাও দেখা যাচ্ছে, তরুণ চাকুরিজীবীর কাঁধে হাত দিয়ে তাঁকে নয়া কর ব্যবস্থা বোঝাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। পাশে পুরোনো কর ব্যবস্থার বর্ণনা। এ দিকে, বেকারত্ব অর্থনীতির দিকে তাকিয়ে হা-পিত্যেশ করে বলেছে, ‘কবে পুরোনো সময় ফিরবে?’ 

কোনও মিমে আবার দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী যোগাভ্যাসরত ছবি। বাজেটের আগে ধ্যানরত, টানটান বসে রয়েছেন তিনি, কিন্তু বক্তৃতা শেষ হতেই ‘শবাসন’। আবার বক্তৃতা দেওয়ার সময় অর্থমন্ত্রীর পিছনে কার্যত ঢুলে পড়া সাংসদের ছবিও ভাইরাল। কেউ আবার লিখেছেন, ‘একটা লাঞ্চ ব্রেক থাকলে হতো।’ তবে সবটাই যে রসিকতা, এমন নয়। বরং কাশ্মীরের কবির উদ্ধৃতি দিয়েও যে ভাবে সেখানে পদ্ম ফুটে ওঠার কথা বলেন নির্মলা, তা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় গুরুতর সমালোচনা শুনতে হয়েছে তাঁকে। 

ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-সমালোচনা, সব মিলিয়ে বাজেটের দিনে টেলিভিশনের মতোই সরগরম থেকেছে সোশ্যাল মিডিয়া।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Nirmala Sitharaman, #Memes, #Memes on budget, #Social Media

আরো দেখুন