দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

রাজ-রাজেশ্বরীর পুজো ঘিরে মাতোয়ারা সুতির বংশবাটি গ্রাম

February 5, 2020 | 2 min read

বীরভূমের বিখ্যাত রাজ-রাজেশ্বরীর পুজো। সংগৃহীত ছবি

সুতি ১ নম্বর ব্লকের বংশবাটি গ্রামে শুরু হয়েছে রাজ-রাজেশ্বরীর পুজো। তাকে ঘিরে বসতে শুরু করেছে বাউল, নাটক ও কবি গানের আসর। ফলে মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের মানুষ এখন আনন্দে মাতোয়ারা। এখানে হিন্দু ও মুসলমান-সহ সকল সম্প্রদায়ের মানুষ যোগ দেন। তাই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মহামিলন উৎসবে পরিণত হয়েছে এই রাজ-রাজেশ্বরী পুজো। রাজ রাজেশ্বরী মা দুর্গার ষোড়শী রূপ। দশ মহাবিদ্যার তৃতীয় রূপ।

বীরভূম জেলা লাগোয়া গ্রাম মুর্শিদাবাদের বংশবাটি। জনসংখ্যা প্রায় সতেরো হাজার। অধিকাংশ মানুষই চাষবাসের উপর নির্ভরশীল। গ্রামের উত্তর ও পূর্ব দিকে একটি বহু পুরনো বড় বিল রয়েছে। যা বংশবাটি বিল নামে পরিচিত। সরস্বতী পুজোর পরদিন থেকে এলাকার মানুষজন এই পুজোয় মেতে উঠেছেন। মা রাজ রাজেশ্বরী এখানে শবাসনে বিরাজ করেন। এই পুজো পাঁচদিন চলে। তবে, প্রথমদিন থেকেই পুজো দেওয়ার জন্য বহু সাধারণ মানুষ এখানে ভিড় জমান। নবমী তিথিতে গ্রামে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের জনসমাগম হয় এবং ভক্তদের ভোগ খাওয়ানো হয়।

রাজ রাজেশ্বরী এখানে শবাসনে বিরাজ করেন। ধরিত্রীকে ধারণ করে আছেন চতুমুখী ব্রক্ষার, বিষ্ণু, মহেশ্বর ও ধর্মরাজ। মেদিনীর ওপর শায়িত শবরূপী শিব। শিবের নাভি থেকে প্রস্ফুটিত দুটি পদ্ম। একটি দেবীর দক্ষিণ চরণে। অপরটি আসন। দেবী চতুর্ভূজা। বাহন সিংহ। এক চালার প্রতিমা। পুরাণে আছে উদ্যতাসূরকে বধ করার জন্য রাজ-রাজেশ্বরী আবির্ভূত হয়েছিলেন। পূর্ণিমা তিথিতে দেবীর বিসর্জন হয় গ্রামের দক্ষিণদিকে রাজুয়া দিঘিতে।

কথিত আছে, বহু বছর পূর্বে ভিন গাঁয়ে শাখা বিক্রি করতে যাচ্ছিলেন রাতুরি গ্রামের শাঁখারি। পথে যেতে যেতে রাজুয়া দিঘিতে স্নানরতা এক তরুণীকে দেখতে পান তিনি। শাঁখারিকে দেখে তরুণী এগিয়ে আসে এবং শাঁখা পড়তে চান। কিন্তু পয়সার কথা উঠতেই ওই তরুণী বলেন, বংশবাটি গ্রামের ভবানন্দ ভট্টাচার্য তাঁর বাবা। তিনি ভট্টাচার্য বাড়ির মেয়ে। পয়সা যেন তাঁর কাছ থেকেই নিয়ে নেন। এদিকে তো ভট্টাচার্য দম্পতি ছিলেন নিঃসন্তান। মেয়ে আসবে কোথা থেকে?

তাই শাঁখারির কথা শুনে প্রথমে অবাক হয়ে গেলেন ভট্টাচার্য দম্পতি এবং পরে ছুটে গেলেন রাজুয়া দিঘির পাড়ে। দেখতে পেলেন শাঁখা পরিহিতা এক কন্যা রাজুয়া দিঘির মধ্যে দিয়ে চলে যাচ্ছে। আর তারপর থেকেই বংশবাটি গ্রামের ভট্টাচার্য পরিবারে শুরু হয় রাজ-রাজেশ্বরী পুজো। সেই পারিবারিক পুজো এখন বারোয়ারি পুজোয় পরিণত হয়েছে। দেবীর পুরনো মন্দির ভেঙে তৈরি করা হচ্ছে নতুন মন্দির। যা প্রায় ১১৫ফুট উঁচু।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Raja rajeshwari pooja, #durga, #birbhum

আরো দেখুন