দেশ বিভাগে ফিরে যান

শহরে এসে শাহকে তোপ অনুরাগের

February 6, 2020 | 2 min read

মুখ খুললেন অনুরাগ কাশ্যপ। ছবি সোউজন্যেঃ thewall

কমেডিয়ান কুণাল কামরার পাশে দাঁড়ালেন অনুরাগ কাশ্যপ। তাই দমদম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে কলকাতা আসার পথেও বয়কট করলেন সেই বিশেষ বিমান সংস্থার বিমান। আর নাম না করেও মারাত্মক আঘাত হানলেন অমিত শাহের বিরুদ্ধে।

ব্রাত্য বসুর উদ্যোগে আয়োজিত উৎসবে উদ্বোধনে এসেছিলেন বিশিষ্ট পরিচালক। সেখানে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন দেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে। অমিতকে তোপ দেগে বলেন, ‘সারা দেশ জুড়ে যা চলছে তা অত্যন্ত লজ্জার। সরকারের একটাই কাজ, ধর্মের ভিত্তিতে দেশ ভাগ। দেশের মানুষ নাগরিক কিনা, তা নিয়ে ঘাম ছুটিয়ে দেওয়া। কেউ প্রতিবাদ করলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে প্রশাসন। আপনি একজন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আপনিই পুলিশকে নিয়ন্ত্রণ করছেন, মারমুখী লোকদের লেলিয়ে দিচ্ছেন জামিয়া, জেএনইউ-এ। শান্তিপূর্ণ অবস্থানকারী ছাত্রদের দেশদ্রোহী আখ্যা দিচ্ছেন,’ একদমে বলে গেলেন অনুরাগ।

কেন এমন করা হচ্ছে বলে মনে হয়? তাঁর ব্যাখ্যা, ‘ইচ্ছাকৃত কিছু অশান্তি তৈরি করে সে দিকে মানুষের দৃষ্টিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে এ সবে ব্যস্ত থেকে মানুষ সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কথা ভুলেই যায়!’

অনুরাগ মনে করছেন, ‘আমরা সারাক্ষণ রাজনৈতিকভাবে সঠিক থাকার চেষ্টা করে যাই। কিন্তু এখন সাফ কথা বলার সময় এসেছে। দেশের সংবিধানকে যেভাবে আমাদের সামনে ভুল ব্যাখ্যা করে শোনানো হচ্ছে, তা আটকানোর জন্য সংবিধানটা আমাদের ভালো করে জানা দরকার। জানতে হবে আমার কতখানি অধিকার আছে। ’

এটা বলার সাহস কেমন করে পাচ্ছেন? ‘আমি সাহসী নই। আমি বোকা টাইপের লোক। সে জন্য এসব বলে আমার কী ক্ষতি হতে পারে তা না ভেবেই বলে চলেছি। ভেবেচিন্তে বলার পরিস্থিতি নেই দেশে। দেশের সংবিধানকে তার নিজস্ব জায়গায় পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সেজন্য হিংসার পথে যাওয়ার কথা বলছি না। নিজের অধিকার থেকে সরে না দাঁড়ানোর কথাটা বলতে চাইছি।’

গত দশকে অন্য ধারার ছবি তৈরিতে অনুরাগ পথিকৃৎ। দেশের এহেন পরিস্থিতিতে শিল্পীর ভূমিকা কি হতে পারে তা জানতে চাওয়ায় বললেন, ‘শিল্পীর কাজ সকলের সামনে আয়না ধরে রাখা। নিজেকে একবার চোখের সামনে দেখতে পেলে মানুষ সচেতন হয়। শিল্পীর কাজ সকলের বিবেককে জাগিয়ে রাখা। আগের দিনে রাজার দরবারে একজন করে বিদূষক থাকতেন। তিনি ব্যঙ্গের মধ্যে দিয়েই রাজার ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিতেন। এ প্রসঙ্গে আকবরের সভায় বীরবলের ভূমিকা মনে করা যেতে পারে। এটাও একটা আর্ট ফর্ম।’

বাংলা ছবির দ্বারা অত্যন্ত অনুপ্রাণিত অনুরাগ। তাঁর কথায়, ‘বছর কুড়ি বয়সে আমি প্রথমবার একটা ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে যাই। বাক হয়ে যাই যে এই মাধ্যমটায় কতো কী করার সুযোগ রয়েছে। এর আগে আমি সত্যজিৎ রায়ের ছবিও দেখিনি। কিন্তু ‘সতরঞ্জ কে খিলাড়ি’ দেখেছিলাম। কারণ তখন শুধু হিন্দি ছবিই দেখতাম। পরে আমি বাংলার গ্রেট মাস্টারদের ছবিই দেখেছি, শিখেছি। ‘গ্যাংস অফ ওয়াসিপুর’-এর শুটিং করতে গিয়ে শুনেছি এখানে এর আগে এক বাঙালি পরিচালক কাজ করে গিয়েছেন। তাঁর নাম ঋত্মিক ঘটক!’

চোখেমুখে বিস্ময় নিয়ে বলে যেতে থাকেন, ‘এমনকী হিন্দিতে আমার প্রিয় পরিচালকরাও বাংলারই। বিমল রায়, গুরু দত্ত আমার ভীষণ পছন্দের। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে এখন যেন বাংলায় আর সেই মানের ছবি তৈরি হচ্ছে না। মজার ব্যাপারটা হল, যখনই যতো কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখনই ভালো ভালো শিল্প সৃষ্টি হয়। এই গোলমেলে সময়ে বাংলার থেকে দারুণ কিছু ছবির আশায় তাকিয়ে আছি আমি।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Movies, #Anurag Kashyap, #international film festival, #dum dum, #comedian

আরো দেখুন