কেমন আছে খিদিরপুরের ফ্যান্সি মার্কেট?
একটা সময় খিদিরপুর ফ্যান্সি মার্কেটে বিদেশী জিনিস কিনতে যেতে হতো। এখন শপিং মলের রমরমায় খুব খারাপ দশা সেই মার্কেটের। ’৭০-এর দশকের মাঝামাঝি প্রয়াত মহেন্দ্র সিং-এর হাতে তৈরী হাজার চারেক স্কোয়্যার ফুট এলাকা জোড়া এই ফ্যান্সি মার্কেট। এখন কীসের ফ্যান্সি, কোথায় ফ্যান্সি? মলে-মলে, অলি-গলিতে মিলছে ফ্যান্সি প্রোডাক্ট।
আজকের ফ্যান্সি মার্কেটে একতলায় নীচে প্রায় ৫৫-৬০টি দোকান। দোতলার পুরোটা ব্যাঙ্ক। তিনতলা-চারতলা জুড়ে জামা-কাপড়, জুতোর দোকান। সব জায়গায় হতাশা।
আগে খিদিরপুরে মার্কেট বলতে ছিল শুধুই ‘ফ্যান্সি’, সেখানে আজ এই এলাকায় অনেক মার্কেট। উল্টোদিকের গায়েই ‘নিউ ফ্যান্সি মার্কেট’, পাশেই ‘ফাইভ স্টার’। সেখানে প্রায় চারশো দোকান। এদিকে-ওদিকে গজিয়ে উঠেছে ‘এস পি মার্কেট’, ‘গ্রিন প্লাজা ওয়ান-টু-থ্রি’, ‘এম কে প্লাজা’, হংকং মার্কেট’…প্রায় ১৬-১৭টা মার্কেট। সব জায়গাতেই মিলছে একই জিনিস।
একটা সময় লোকমুখে ফিরত এই মার্কেটের অন্য আর এক নাম, ‘চোরা মার্কেট’। ডক থেকে নাকি চোরাগোপ্তা পথে এখানে আসত বিদেশী সব পণ্য। তাই বেশ সস্তাতেও মিলত সেই সমস্ত জিনিস। ১৯৮০-৮১ থেকে টানা ’৯৭-’৯৮, মার্কেটে রমরমিয়ে চলেছে নানা দেশের ফ্যান্সি আইটেম। কোন দেশের জিনিস না ছিল আইটেমে? ফ্রান্স-ইতালি-ইংল্যান্ড-জাপান-সুইডেন…কে না এসেছেন তার টানে?
পসরার ভিড়ে এখন সেখানে শুধুই ভারতীয়-চিনের সস্তার কিছু আইটেম। কিছু প্রসাধনী-কিছু পোশাক-জুতো। অধিকাংশই মোবাইলের দোকান। বিদেশী জিনিস কোথায়? ‘ফ্যান্সি’ নামটাই শুধু রয়ে গিয়েছে। সেই মার্কেটটা আর নেই।