চালের দানার মতো রাডার বানালেন বঙ্গসন্তান
লাগবে না বডি স্ক্যানার, চালের দানার মতো রাডার বানালেন বঙ্গসন্তান
চালের দানার থেকেও ছোট্ট একটা মাইক্রোচিপের উপর রাডার বানালেন এক বঙ্গসন্তান। ভারতে এই প্রথম।
পাঠানো রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে যে রাডার দেখতে পারবে সিমেন্ট, কংক্রিটের পুরু দেওয়ালের ও-পারে কী হচ্ছে। সেখানে রয়েছেন ক’জন। তাঁরা দাঁড়িয়ে রয়েছেন নাকি শুয়ে রয়েছেন। রাডারের এমন পুরু দেওয়াল-ফোঁড়া ‘চোখ’ (‘থ্রু দ্য ওয়াল রাডার সিস্টেম’ বা ‘টিডব্লিউআর’) এর আগে এ দেশে আর কেউ বানাতে পারেননি। যা বানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স (আইআইএসসি)’-র অধ্যাপক গৌরব বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর ফলে, আগামী দিনে আমাকে, আপনাকে আর বিমানবন্দরে গিয়ে পোশাক খুলে দেহতল্লাশির (‘বডি স্ক্যান’) মুখে পড়তে হবে না। পেরতে হবে না মেটাল করিডরও। তার ফলে, এড়ানো সম্ভব হবে এক্স-রে শরীরে ঢোকার বিপদআপদও। এই প্রযুক্তি আরও উন্নত হলে বহু দূর থেকে হৃদস্পন্দন আর শ্বাস-প্রশ্বাসের হার মেপে বলে দেওয়া যাবে কোনও ব্যক্তি অসুস্থ কি না। সেটা হবে বিমানবন্দরের বিভিন্ন জায়গায় রাখা এই রাডার সিস্টেমের মাধ্যমে। চেহারাটা হবে একটা সেলফোনের মতো। যার মধ্যে চালের দানার চেয়েও ছোট মাইক্রোচিপে থাকবে গৌরবের উদ্ভাবিত রাডার।
এই গবেষণায় অর্থসাহায্য করেছে কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (ডিআরডিও) এবং ‘ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বেল)’। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইমপ্রিন্ট’ কর্মসূচিতে।
রোজকার জীবনে কী কী ভাবে কাজে লাগবে এই রাডার?
এই ব্যবস্থা যদি এখনই চালু থাকত বিমানবন্দরে, তা হলে চিনের উহান থেকে আটক ভারতীয়দের দিল্লিতে ফিরিয়ে এনে রক্ত ও নানা ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষার জন্য সপ্তাহভর আলাদা ভাবে রাখতে হত না মানেসরের বিভিন্ন ক্যাম্পে। বিমানবন্দরে নামার পরেই যাত্রীদের দেখে সেই রাডার বুঝে ফেলতে পারত, করোনাভাইরাসের প্রাথমিক লক্ষণগুলি রয়েছে দেশে ফিরিয়ে আনা ভারতীয়দের কার কার মধ্যে।
তার জন্য খুব বেশি কিছু করতেও হবে না। বিমানবন্দরের কয়েকটি জায়গায় মোবাইল ফোনের চেহারায় এমন কয়েকটি রাডার ব্যবস্থা থাকলেই চলবে। যে ফোনগুলির মধ্যে চালের দানার চেয়েও ছোট্ট মাইক্রোচিপে থাকবে সেই দেওয়াল-ফোঁড়া চোখের রাডার। এমনকি, বিভিন্ন বাসস্টপেজ বা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আমরা ব্যাগে কী নিয়ে যাচ্ছি, বহু দূর থেকে তা দেখেও বুঝে ফেলতে পারবে গৌরবের বানানো এই রাডার। গবেষকদলে গৌরব ছাড়াও রয়েছেন তাঁর ৬ জন ছাত্র সাই জগন, কে ব্যাশক, সুমিত কুমার, পুস্তিবর্ধন সোনি, অনশাজ শ্রীবাস্তব ও ঋতুরাজ কর।