নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতের ফাঁসি আলাদা ভাবে? আজ শুনানি
নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতকে আলাদা ভাবে ফাঁসি দেওয়া যায় কি না, সেই মামলা আজ শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লি হাইকোর্ট এই মামলা খারিজ করে দেওয়ার পর সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে কেন্দ্র দিল্লি সরকার।
দিল্লি হাইকোর্ট নির্ভয়া কাণ্ডের চার দোষীর ফাঁসিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে। সেই রায়কেও চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে কেন্দ্র ও দিল্লি সরকার। তবে সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছে বিচারপতি আর ভানুমতির বেঞ্চ। বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এতে ফাঁসি কার্যকরের প্রক্রিয়া আরও বিলম্বিত হবে।
অন্য দিকে নির্ভয়া কাণ্ডে দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল তিহাড় জেল কর্তৄপক্ষও। তাদের আবেদন ছিল, নতুন করে মৄত্যু পরোয়ানা জারি করুক নিম্ন আদালত। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
ফাঁসি পিছোতে নির্ভয়া কাণ্ডের দণ্ডিতরা আলাদা আলাদা ভাবে আইনি সংস্থান খুঁজছে। এক জনের আর্জি খারিজ হচ্ছে, তো অন্য জন একই আর্জি নিয়ে আদালত বা রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হচ্ছে। আবার আইন অনুযায়ী একই অপরাধে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তদের আলাদা ভাবে ফাঁসি দেওয়া যায় না। সব দণ্ডিতের ফাঁসি একসঙ্গে কার্যকর করতে হয়। অপরাধীরা যাতে বার বার সেই সুযোগ নিয়ে ফাঁসি দেরি করতে না পারে তার জন্যই দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল কেন্দ্র ও দিল্লি রাজ্য সরকার।
কিন্তু সেই আর্জি খারিজ হয়ে যাওয়ার পর একই আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে তারা। সরকার পক্ষের আইনজীবী শুনানিতে বলেন, দেশের মানুষের অনেক ধৈর্যের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। এ বার বিষয়টিতে সুপ্রিম কোর্টের উচিত এ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন তৈরি করে দেওয়া। প্রাথমিক শুনানি শেষে শুক্রবার বিচারপতিরা জানিয়ে দিলেন এই মামলার শুনানি হবে আজ।
দিল্লি হাইকোর্ট দু’বার মৄত্যু পরোয়ানা জারি করার পরেও নানা আইনি জটিলতায় তা কার্যকর না হওয়ায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য ফাঁসিতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে দিল্লির আদালত। নির্ভয়া কাণ্ডের চার দণ্ডিতকে সাত দিনের মধ্যে সমস্ত আইনি প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশও দিয়েছে দিল্লির উচ্চ আদালত। সেই রায়কেও চ্যালেঞ্জ করলেও তা শুনতে রাজি হয়নি শীর্ষ আদালত।
২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর রাতে দিল্লির রাস্তায় চলন্ত বাসে তরুণীকে গণধর্ষণ ও অকথ্য নির্যাতন করে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দিয়ে যায় দুষ্কৄতীরা। ঘটনায় বিনয় শর্মা, পবন গুপ্ত, মুকেশ সিংহ, অক্ষয় সিংহ ও রাম সিংহ এবং এক নাবালককে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশ। এদের মধ্যে রাম সিংহ তিহাড় জেলের মধ্যেই আত্মহত্যা করে। জুভেনাইল আইনে তিন বছরের সাজা হয় নাবালকের। সেই সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ওই নাবালক ছাড়াও পেয়ে গিয়েছে। বাকি চার জনকেই মৄত্যুদণ্ডের আদেশ দেয় নিম্ন আদালত। তার পর থেকেই ফাঁসি কার্যকর করা নিয়ে চলছে দীর্ঘ আইনি লড়াই।