রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বাদাবনে ফিরে আসছে বাতাগুর বাসক

February 18, 2020 | 2 min read

আর কিছু দিনের মধ্যেই সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যে ফের দেখা যাবে অতি বিপন্ন প্রজাতির কচ্ছপ ‘বাতাগুর বাসকা’দের। ইতিমধ্যেই এই বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপদের লাল তালিকাভূক্ত করেছে ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার’।

বাদাবনে ফিরে আসছে বাতাগুর বাসক। ছবি সৌজন্যেঃ iucn

দশ বছর আগে ‘টারটেল সারভাইভাল অ্যালায়ান্স’ সংস্থার সহায়তায় ভারতের সুন্দরবনের সজনেখালি ও বাংলাদেশের ভাওয়াল জাতীয় উদ্যানে ‘বাতাগুর বাসকা’র কৃত্রিম প্রজনন প্রকল্প শুরু হয়। সজনেখালিতে গত দশ বছরে ওই বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে তিনশো। অথচ বাংলাদেশের ওই কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রে ‘বাতাগুর বাসকা’ বেড়ে হয়েছে মাত্র পঞ্চাশ। প্রায় অবলুপ্তির পথে চলে যাওয়া এই জলচর কচ্ছপদের সংখ্যা বৃদ্ধিতে রীতিমতো উচ্ছ্বসিত বন দপ্তর। তাই সজনেখালির ওই কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র থেকে সুন্দরবনের বাদাবনে ‘বাতাগুর বাসকা’ ছাড়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে।

আপাতত বর্ষার আগেই পরীক্ষামূলক ভাবে ৫০টি অতি বিপন্ন ‘বাতাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপকে ছাড়া হবে সুন্দরবনে। তাদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালাতে ৬টির দেহে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ‘স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার’ প্রতিস্থাপন করা হবে। ইতিমধ্যেই ৫০ গ্রাম ওজনের এই স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার আমেরিকা থেকে আমদানি করেছে রাজ্য বন দপ্তর। যার একেকটির মূল্য সাড়ে ছয় লক্ষ টাকা। বিশেষ আঠার সাহায্যে ওই স্যাটেলাইট ট্রান্সমিটার কচ্ছপের দেহে এঁটে দেওয়া হবে।

এক সময় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার স্বচ্ছ জলের নদীগুলিতে প্রচুর পরিমাণে ‘বাতাগুর বাসকা’ প্রজাতির কচ্ছপ মিলত। কিন্তু ওই প্রজাতির কচ্ছপের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় অবাধ শিকার শুরু হয়। মানুষের লোভেই প্রায় বিলুপ্তির দোরগোড়ায় পৌঁছেছে এই বিশেষ প্রজাতির কচ্ছপ। আকারে সাধরণত ৬০ সেন্টিমিটার লম্বা হয় বাতাগুর বাসকা। ওজন হয় আঠারো কিলোগ্রাম। এক লপ্তে ৫০-৬০ মাইল পর্যন্ত পাড়ি দিতে পারে এরা। প্রয়োজনে স্থলপথও ব্যবহার করে। এদের প্রজননের মরসুম ডিসেম্বর থেকে মার্চ। এই প্রজাতির একেকটি মাদি কচ্ছপ ১০-৩৪টি ডিম পাড়ে।

এক সময় সুন্দরবন থেকে কলকাতার বাজার হয়ে দেশের বিভিন্ন বাজারে রমরমা চোরাচালান চলত ওই কচ্ছপদের। চোরাশিকারের ফলেই ম্যানগ্রোভ থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যায় বাতাগুর বাসকা। তাদের ফের প্রকৃতিতে ছাড়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষায়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#বাটাগুর, #Freshwater, #অতিবিপন্ন প্রাণী, #sundarbans, #turtles, #batagur baska

আরো দেখুন