ভ্রমণ বিভাগে ফিরে যান

গেলেই হয় – গড়চুমুক

March 1, 2020 | 2 min read

গাদিয়ারা থেকে গড়চুমুক মাত্র ২৩ কিলোমিটার। নদীর কোল ঘেঁষে গড়চুমুক পর্যটনকেন্দ্র ও গড়চুমুক ইকো ট্যুরিজম। হরিণের আবাসভূমি। সবুজে সাজিয়ে গুছিয়ে রোপণ করে গড়ে তোলা কৃত্রিম এই জঙ্গলে দিনমান পাখিদের কিচিরমিচির। দামোদর ও ভাগীরথীর মিলমিশটা ঠিক এখানেই। সবুজের বুনোট মিলেমিশে গিয়েছে নদী সঙ্গমের ভাঁজে।

প্রবেশমূল্য মাথাপিছু ১০ টাকা। নীলরঙা মূল তোরণ পেরিয়ে খানিক এগিয়ে বাঁ দিকে সবুজ রং করা মৃগদাবের প্রবেশতোরণ, দুই পাশে চৌকিদার ও তোরণের মাথায় দু’টি হরিণের মূর্তি খোদাই করা। জনপ্রিয় মৃগদাবটি তৈরি হয়েছিল ১৯৯১ সালের ৩১ জানুয়ারি। টিকিট বিক্রয়কেন্দ্রের জানলার সামনে লাগানো নোটিস বোর্ডে নীলের উপর সাদা হরফে লেখা ‘স্কুল পোশাকে প্রবেশ নিষেধ।’

পানা ভরা জলাশয়ে শরীর ডুবিয়ে মিষ্টি জলের কুমির। শ্রীলঙ্কা মালয়ের উপদ্বীপ অঞ্চলের মাংসাশী নিশাচর কুমিরগুলোর বৈজ্ঞানিক নাম Marsh Crocodile, Mugger। এরা এক সঙ্গে ৪০টি মতো ডিম পা়ড়ে। ৬০-৯০ দিন পরে ডিম ফুটে বাচ্চা জন্মায়। পাখির খাঁচায় টিয়া ও চন্দনা রেলিংয়ে সার দিয়ে লেজ ঝুলিয়ে বসে আছে।

শস্যদানার সুদৃশ্য মাটির পাত্রগুলো দেওয়ালে, গাছের কাণ্ডে ঝোলানো। কোনও খাঁচায় ঘাড় গুঁজে বসে আছে ময়ূর। চাইনিজ সিলভার ফেজান্ট— বুকের কাছটা কালো, ধবধবে সাদা ডানা ও পেখম, মাথায় লাল ঝুঁটি, খয়েরি-লাল শরীরের গোল্ডেন ফেজান্ট। এছাড়া রয়েছে গ্রামবাংলার নানান পাখি— দোয়েল, বসন্তবৌরী, মৌটুসী, সাদা-কালো শালিক, শাহি বুলবুলি, কোকিল, লোহিতপুচ্ছ বুলবুলি, টুনটুনি, ফিঙে, বাঁশপাতি, চড়ুই, ঘুঘু, ফটিকজল, শ্যামা, নীলকণ্ঠ ইত্যাদি। গাছে ঝোলানো বোর্ডে দেশি-বিদেশি পাখিদের নামের লম্বা ফিরিস্তি। সজারু, কুমির, কচ্ছপ, গোসাপ, বনমোরগ, হরিণ খাঁচা। কিছু চিতল ছাড়া আছে অবশ্য জঙ্গলে। তবে সেই দঙ্গলদের দেখতে হয় ৫০০ মিটার দূর থেকে। পর্যটকদের তার বেশি কাছে যাওয়া নিষেধ।

উলুঘাটা আটান্ন স্লুইস্ গেট

গড়চুমুক যাওয়ার পথে বাড়তি পাওনা উলুঘাটা আটান্ন স্লুইস্ গেট যা মূলত একটি নদী বাঁধ। বাঁধের দুই ধারেই দুই প্রবেশতোরণ। মোট আটান্নটি স্লুইস গেট পর পর। নীচ দিয়ে অকাতরে বয়ে চলেছে দামোদর ও ভাগীরথীর মিলিত জলধারা। স্লুইস গেট গলে ঝরে পড়ছে বলে স্রোতের প্রাবল্য রয়েছে। সাঁকো পেরিয়ে মূল সড়কটি গেছে উলুবেড়িয়া। এই নদী বাঁধটির নাম উলুঘাটা আটান্ন গেট। সাঁকোর ধারে ঠেস দিয়ে নিজস্বী তোলার সঙ্গে মোবাইলে তুলে রাখি ঘাটে বাঁধা ডিঙি নৌকার সারির ছবি। কিছু ডিঙি নৌকা মাঝনদীতে ভেসে জলে জাল বিছিয়ে রেখেছে। নদীর পূর্ণাবয়ব দেখতে হলে নৌকাবিহারও করা যেতে পারে।

কীভাবে যাবেন:

হাওড়া স্টেশন থেকে উলুবেড়িয়া যাওয়ার লোকাল ট্রেনে এসে অটো বা ট্রেকারে গড়চুমুক ১৫ কিলোমিটার।

হাওড়া থেকে উলুবেড়িয়া ৪৫ মিনিটের পথ।

ধর্মতলা থেকে গড়চুমুক আটান্ন গেট বাসস্টপ ৬০ কিলোমিটার। পৌঁছতে সময় লাগবে সওয়া ২ ঘণ্টা।

মুম্বই রোড ধরে গাড়ি চালিয়ে উলুবেড়িয়া এসে শহরের ভিতরে ঢুকে গড়চুমুক পর্যটনকেন্দ্র।

কোথায় থাকবেনঃ

সকালে গিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে বিকেলের মধ্যেই ফিরে আসা যায়। শীতকালে পিকনিক পার্টির জমায়েত বেশি।

কয়েকটি বেসরকারি গেস্ট হাউস আছে।

জেলা পরিষদের লজেও থাকা যায়। সব ঘরগুলিই নদীমুখী।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Gadiara, #Eco tourism, #Gorchumuk

আরো দেখুন