বিবিধের মাঝে ঐক্যর কথা মনে করিয়ে দিতে ‘কোরাস ২০২০’: রূপম ইসলাম
আগামী ৭ই মার্চ আয়োজিত হতে চলেছে ‘কোরাস ২০২০’। আয়োজক – সিটিজেন স্পিক ইন্ডিয়া। বিভিন্ন অভিনেতা, সংগীতশিল্পী, কবি এবং নৃত্যশিল্পীরা তাদের শিল্পের মাধ্যমে সমাজের বর্তমান অবস্থার বিষয়ে নিজেদের মনের কথা বলবেন। নজরুল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে এই অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের আগে এই অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক রূপম ইসলাম মুখোমুখি হয়েছিলেন টিম দৃষ্টিভঙ্গির। রইলো তাঁর একান্ত সাক্ষাৎকার।
আগামী ৭ই মার্চ আয়োজিত হতে চলেছে কোরাস ২০২০। এই অনুষ্ঠানের লক্ষ্য কি?
রূপম: ঐক্যবদ্ধ ভাবে যাতে আমরা বাঁচতে পারি, তার ক্ষেত্র তৈরী করার একটা প্রচেষ্টা হচ্ছে সাংস্কৃতিক জগৎ থেকে। ভারতের মূলগত ঐক্যের যে ধারণাটাকে গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে অনেকদিন ধরে, সেই কথা মনে করিয়ে দেওয়ার প্রচেষ্টা। দেশের সাংবিধানিক সত্য – বিবিধের মাঝে ঐক্য – এই কথাটিকে মনে করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই অনুষ্ঠান।
আপনি চিরকালই বাংলার অন্যতম প্রতিবাদের কণ্ঠ। কয়েকদিন আগেই আপনার নতুন গান ‘দগদগে ইতিহাসের ঘা’ প্রকাশ পেয়েছে। কেমন রেস্পন্স পেলেন?
রূপম: ইতিহাসের ঘা একটি প্রতিবাদের গান। এই ধরণের গানের প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় গানের অনুষ্ঠানে। মূলত যে প্রতিবাদের গানের যে অনুষ্ঠান আমি করে থাকি তার নাম ‘রূপম ইসলাম একক’। এই গানটি প্রকাশের পর এই অনুষ্ঠান আপাতত হয়নি। পরবর্তী গানের অনুষ্ঠানেই আমি জানতে পারবো এই গানের প্রতিক্রিয়া জনমানসে কি’রম ভাবে পড়ল।
আপনার কি মনে হয় বাঙালির প্রতিবাদস্পৃহা কিছুটা হলেও কমে আসছে?
রূপম: আমার মনে হয় না বাঙালির প্রতিবাদস্পৃহা কমে আসছে। বরং ‘রূপম ইসলাম একক’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি জানতে পারি যে বাঙালির প্রতিবাদস্পৃহা ক্রমে বাড়ছে।
দেশের বর্তমান যা পরিস্থিতি তাতে শিল্প – গান, কবিতা ইত্যাদি – সৃষ্টি করাটা কতটা কঠিন হয়ে উঠছে?
রূপম: গান, কবিতা এগুলো বিষয় দিয়ে তৈরী হয় না। দুটো জিনিস দিয়ে তৈরী হয় – আবেগ (কোনো ঘটনার প্রতিক্রিয়াতে যা তৈরী হতে পারে) এবং সেই শিল্প তৈরী করার ক্ষমতা। এই দুটো জিনিসের যদি অভাব না হয়, তাহলে শিল্প তৈরীতে কোনও সমস্যা নেই। এর জন্য পরিস্থিতি অবশ্যই আছে। যে শিল্পী তৈরী করবেন, তার সেই ক্ষমতা আছে কিনা সেটা দেখতে হবে।
আপনার কি মনে হয়, যে পরিবেশে আমরা বাস করছি সেখানে সত্যিই কলম তরবারির চেয়ে বেশি ক্ষুরধার?
রূপম: এটাতো একটা মেটাফর। এটাতো কোনোকালেই বাস্তব সত্য ছিল না। একটা তরবারি নিয়ে যদি কেউ তেড়ে আসে, সেই তরবারির আঘাতে তো আমি টুকরো হয়ে যেতেই পারি। আমার কাছে যদি কলম থাকে তবে আমি আঘাত করতেই পারি। তরবারির আঘাতটা বেশি হবে। এটাতো একটা মেটাফর। মানেটা বুঝতে হবে। কোনটা বেশি ক্ষুরধার সেটা আমার জানা নেই। যার যেটা আছে সেটা দিয়েই কাজ করতে হবে। যার তরবারি আছে, সে সেটা নিয়েই কাজ করবে। আবার যার কলম বা গিটার আছে, সে কলম, গিটারেই কাজ করবে।