মনখারাপ ঠিক করার জন্য বদলাতে হবে খাবার
কাজ করতে করতে বা বাড়ি–অফিসের নানা ঝামেলা সামলে খুব ক্লান্তি আসে। কখনও কখনও সারাটা দিনই বিছানায় পড়ে থাকতে ইচ্ছে করে, উঠে স্নানটুকু করার কথা ভাবলে গায়ে জ্বর আসে। মন আর হরমোনের ব্যালেন্স ঠিক আছে কি না কখনও ভেবে দেখেননি বোধহয়।
আমাদের শরীরে খুশি, আনন্দের যে বোধ তাতে সেরিটোনিন হরমোনের একটা প্রভাব থাকে। সেই হরমোনের ঘাটতি হলে মাঝেমাঝেই আমাদের মন খারাপের অসুখ অনেকটাই বাড়ে যায়। আজকাল অনেকেই প্রাণায়াম, যোগসাধনা ইত্যাদি করে নিজেদের মনকে সুস্থ, সুন্দর, সতেজ রাখতে চান।
সবই হচ্ছে কিন্তু আপনার খাবারের তালিকায় ঠিক কী কী আছে, সেটা একবার চোখ বুলিয়ে নিচ্ছেন তো? জেনে নিন এই ছুটোছুটির যুগে কোন কোন খাবারে আপনার মেজাজ, মন, মাথা তুলনামূলকভাবে ভালো থাকতে পারে।
আখরোট
যখন আপনি হতাশ হয়ে পড়েন, তখন ওমেগা থ্রি আপনার দরকারি। বেশীরভাগ বাদামে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, এছাড়াও পাশাপাশি প্রোটিনের দুর্দান্ত উৎসও বাদাম। তাই আপনার হতাশা কমাতে দু চারটে বাদাম কুটকুট করে চিবোতেই পারেন। তবে এই বাদামের মধ্যেই আখরোট ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম সেরা উৎস। আখরোটের এই ওমেগা থ্রি মস্তিষ্কের সামগ্রিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
দানাশস্য
রাস্তার ভাজাভুজি যখন চিবিয়ে কড়মড় করে খান, তখন বোধহয় মনের রাগ একটু কমে মনে করেন আপনি। কিন্তু তার বদলে আপনি যদি দানাশস্য জাতীয় কার্বোহাইড্রেট খান তাহলে বোধহয় লাভ আপনারই। এতে থাকে হাই ফাইবার। আমরা যাকে চলতি কথায় বলি রাঙা আলু বা মিষ্টি আলু তাকে আপন করে নিতে পারেন আপনি।
এছাড়াও খেতে পারেন ব্রাউন রাইস। এগুলি সেরিটোনিন হরমোনের উৎপাদনে সাহায্য করে আপনাকে। তাই খুশি খুশি থাকেন আপনিও। মন খুব খারাপ লাগলে, দেখুন তো এই খাবারগুলো খেয়ে। হতেই পারে আর অন্ধকার ঘর করে থাকতে হল না আপনাকে।
হলুদ
সাধারণত আমাদের রান্নাঘরে এই মশলা থাকেই। সহজেই সব রান্নায় ব্যবহারও করা হয়। এতে আছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি গুণ। তাই শরীরের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে তো কাজ করেই, সঙ্গে আপনার মুডসুইংয়ের সমস্যাও অনেকটাই কমিয়ে দেয়। এতে টার্মেরনস এবং কার্কিউমেনয়েডসের যৌগ থাকায় তা মন চনমনে রাখতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি
গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের একটি দুর্দান্ত উৎস, মূলত হতাশা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে এতে থাকা থিয়ানিন অ্যামিনো অ্যাসিড খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। কফি খান যাঁরা তাঁরা এটা জেনেই খান যে, এতে ক্যাফিন আছে, কিন্তু গ্রিন টি যাঁরা খান, তাঁরা অনেকেই জানেন না এতে থিয়ানিন আছে। তাই এটা জেনে এবার থেকে মুড অফ থাকলে, এক কাপ গ্রিন টি নিয়ে বসতেই পারেন আপনি।
কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাতীয় খাবার
কম ফ্যাটযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার, যেমন স্কিম মিল্ক, দই, কম ফ্যাটযুক্ত পনির এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারে ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি এবং প্রোটিন বেশী থাকে। এগুলি হতাশার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে আপনাকে। তাই রোজকার খাবারে এগুলোর যে কোনও একটা রাখতেই পারেন আপনি।