বেহাল দশা বিশ্ব ভারতীর, সাংসদের তৎপরতায় ঘুম ভাঙলো কেন্দ্রের
২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে রবীন্দ্র স্মৃতি বিজড়িত শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী বাড়িগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব থেকে হাত গুটিয়ে নেয় কেন্দ্রীয় সর্বেক্ষণ বিভাগ। বিশ্বভারতীর আশ্রম প্রাঙ্গনে উপাসনা গৃহ, শান্তিনিকেতন গৃহ, উত্তরায়নের কবির স্মৃতি বিজড়িত উদয়ন বাড়ি, পুনশ্চ, উদিচী, কোনার্ক, শ্যামলীর মত ঐতিহ্যবাহী গৃহগুলির নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের দরকার। তাই বাড়িগুলি রক্ষায় বিশ্বভারতী হেরিটেজ কমিটি’র তত্ত্বাবধানে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
শতবর্ষ প্রাচীন উত্তরায়নের প্রথম বাড়ি ‘কোনার্ক’। এই ভবনের ছাদে জল জমে ড্যাম ধরে গেছে। এই বর্ষায় ছাদ চুযে জল পরেছে ঘরে। আরেক ঐতিহ্যবাহী গৃহ ‘উদয়ন’ বাড়ি। তারই পেছন দিকের দু-ধারের বারান্দার সিলিং থেকে খসে পড়ছে চাঙর। বেরিয়ে পড়েছে লোহার বিম। কঙ্কালসার দশা বেরিয়ে পড়েছে জায়গায় জায়গায়। নষ্ট হতে বসেছে কবিপুত্র রথীন্দ্রনাথের নিজে হাতে গড়া কারুশিল্পেরও অমূল্য নিদর্শন। কারুকার্যময় আসবাপত্রগুলির কোনোটিতে ঘুণ ধরেছে, তো কোনোটিতে উঁই লেগেছে আবার কোনোটির অংশ বিশেষ ভেঙে পড়েছে। রুগ্ন চেহারা ধামাচাপা দিতে রীতিমত নাভিশ্বাস উঠছে রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বে থাকা রবীন্দ্রভবনের কর্মীদের।
এই বিষয়টিই গত ২০শে নভেম্বর সংসদে তুলে ধরেন বাংলার সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। যে বাড়িগুলির দাগে দাগে পৃথিবীর কবির স্মৃতিচিহ্ন তার সংরক্ষণে এএসআই যেন পিছু না হটে, এই দাবি তোলেন তিনি। বহু সদস্য সমর্থন করেছিলেন তাঁর এই দাবিকে। রাজ্যসভার চেয়ারম্যানও সরকারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
অবশেষে মিলল সুখবর। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রী ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন যে এএসআই শান্তিনিকেতনের ইতিহাসের ধুলোবালি মাখানো বাড়িগুলো দেখভাল করবে। প্রয়োজনীয় নির্দেশ এএসআই-এর কলকাতা অফিসের ডিজি’কে দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সাংসদের প্রতিক্রিয়া, “আমাগো দাবায়ে রাখা যাইব না। রবীন্দ্রনাথ একটি জাতির নাম। জয় বাংলা।”