শহরের থেকে দূরে নিরুপদ্রবে সময় কাটাতে চলে যান মুকুটমণিপুরে
এক নাগাড়ে অফিস-আর-বাড়ি! আর ভাল লাগছে না! দু’দিনের জন্য একটু ঘুরে আসলে বোধহয় ভাল হত। শহর থেকে দূরে নিরুপদ্রবে দুটো দিন কাটাতে চলে যান বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুরে।
বাংলায় এমন অনেক ছোট ছোট ট্যুরিস্ট স্পট রয়েছে, যেখানে নিশ্চিন্তে দুটো দিন কেটে যাবে চোখের নিমেষে। তেমনই এক জায়গা মুকুটমণিপুর। বাঁকুড়া সদর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরত্বেই রয়েছে, এ দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ ‘আর্থ ড্যাম’। চারপাশে ঘন সবুজ, দূরে পাহাড়ের আলতো আন্দোলন, মাঝে টলটলে নীল জল— মুকুটমণিপুরের বর্ণনা এভাবে করাই যায়।
বাঁকুড়া থেকে গাড়ি করে মুকুটমণিপুর পৌঁছতে মেরেকেটে লাগে ঘণ্টা দেড়েক। পিচের মসৃণ রাস্তা একসময়ে লাল মাটির পরিবেশ পেরিয়ে জয়পুরের ঘন জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে হারিয়ে যায় গ্রামীণ পরিবেশে। দূরে চোখে পড়বে ছোট ছোট পাহাড়। জলাধারে ঢোকার সময় ও এন্ট্রি-ফি রয়েছে। জলাধারের মাঝ দিয়েই এঁকেবেঁকে রাস্তা চলে গেছে একেবারে শেষ পর্যন্ত। গাড়ি নিয়ে সোজা চলে যাওয়া যায় সেই শেষ বিন্দুতে। বাঁধের শুরুতেই রয়েছে নৌকাবিহারের বন্দোবস্ত।
বাঁধের আশেপাশে থাকার ব্যবস্থা সে ভাবে না থাকলেও, বাঙালির রসনাতৃপ্তিতে কোনও অসুবিধা হবে না। ঘরের ভাত-ডাল-ভাজার সঙ্গে মনের মতো মাছ, চিকেন বা মটন পেয়ে যাবেন। শুধু একটু আগে থেকে বলে রাখতে হবে রাস্তাত ধারের ছোট্ট ‘হোটেল’গুলিতে।
জলাধার থেকে ফেরার পথে ঘুরে আসা যায় ‘ডিয়ার পার্ক’। ভুটভুটি করে পৌঁছে যাওয়া যায় সে অঞ্চলের প্রত্যন্ত এক গ্রামে। মিনিট দশেকের পথ, তার পরে সাইকেল ভ্যানই সহায়। তারপরেই দেখা যাবে ‘সোনার হরিণ’। বন দফতরের বিশাল এলাকা। খাঁচার বাইরে গ্রামের বাচ্চারা কচি ডালপালা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বিক্রির আশায়। পর্যটকদের হাত থেকে সেই সবুজ পাতা খেয়ে যায় হরিণের দল।
মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরত্বে রয়েছে প্রাচীন শহর, অম্বিকানগর। এক সময়ে এই স্থান ছিল জৈন ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ পীঠস্থান। ইতিউতি খুঁজলে পাওয়া যায় ভাঙা মূর্তির অংশও।