কেন মারণ ভাইরাসের লাগামহীন হানাদারি, প্রকাশ নেচার পত্রিকায়
করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণকে পৃথিবীব্যাপী মহামারী, পোশাকি পরিভাষায় প্যানডেমিক ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। বিশ্বের ১০০-ও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। যে ভাবে দ্রুত ঘাতক হয়ে উঠছে এই ভাইরাস, তাতে রীতিমতো চিন্তিত হু।
কেন সার্স (সার্স কোভ-১) এবং মার্সের (মার্স কোভ-২) তুলনায় দ্রুত ছড়াচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস (সার্স কোভ-২)? কেনই বা বাড়ছে মৃত্যু?
বুধবার এ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে বিখ্যাত বিজ্ঞানপত্রিকা ‘নেচার’-এ। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, বাইরের দিকে বেরিয়ে থাকা স্পাইক প্রোটিন কোষের গ্রাহক অর্থাৎ রিসেপ্টরের সঙ্গে জুড়ে গিয়ে কোষের মধ্যে ঢুকে পড়ে। নভেল করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের বিশেষ অংশে ফুরিন উৎসেচকের (এনজাইম) বিক্রিয়া ঘটছে। এই বিক্রিয়ার উপযোগী জায়গাটা সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে। এটাকেই করোনাভাইরাসের মহামারীর আকার নেওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিজ্ঞানীরা।
দেহ কোষের মধ্যে থাকা ফুরিন উৎসেচক স্পাইক প্রোটিনকে ভেঙে আরও সক্রিয় করে তোলে। এর ফলে ভাইরাস এনজিও টেনসিন কনভার্টিং এনজাইম-২ রিসেপ্টরকে আরও শক্ত করে জুড়ে দেয়। এবং সহজেই কোষের মধ্যে ঢুকে যায়। এ ভাবেই কোষের উপর করোনাভাইরাসের আক্রমণ শুরু হয়। শ্বাসনালী ছাড়াও যকৃৎ ও ক্ষুদ্রান্তে ফুরিন এনজাইম থাকায় করোনাভাইরাস এই সব অঙ্গে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং মৃত্যুর কারণ হচ্ছে।
নেচার পত্রিকায় এই গবেষণা-তথ্য প্রকাশিত হতেই নড়েচড়ে বসেছেন বিজ্ঞানীরা। এই আবিষ্কার করোনাভাইরাসের মোকাবিলায়, ভ্যাকসিন তৈরিতে ও রোগের গতিপ্রকৃতি বুঝতে কাজে লাগবে, এমনটাই মনে করছেন তাঁরা। ফুরিন উৎসেচকের প্রতিরোধী ও ভাইরাস প্রতিরোধী ওষুধ তৈরির কাজে তাঁরা এগোতে পারবেন, এমনটাই দাবি বিজ্ঞানীদের।