কিডনির অসুখ রুখতে খেয়াল রাখুন বিশেষ কিছু নিয়মে
জীবনযাপন যতই আধুনিক হোক, ভাল থাকার আবশ্যিক শর্ত ভুলে গেলে কিন্তু জবাব দেবে কিডনি।
কিডনি থেকে হওয়া অস্বস্তিতে অনেক সময়ই প্রাথমিক অবস্থায় গুরুত্ব দিতে চান না অনেকে। প্রচলিত ধরণায় মেনে নেন, জল খেলেই কমে যাবে সমস্যা, সব সময় কিন্তু এটাই শেষ কথা নয়। শরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী জল খাওয়া বা স্বাস্থ্যকর খাবার ডায়েটে রাখতে তো হবেই, কিন্তু কিডনির যত্ন নিতে গেলে মেনে চলতে হবে কিছু বাড়তি বিষয়ও।
নেফ্রোলজিস্ট অভিজিৎ তরফদার দিলেন কিডনি ভাল রাখার তেমনই কিছু পরামর্শ। খাওয়াদাওয়া, ওষুধপথ্য-সহ আরও কিছু বিষয়েও রাখতে হবে খেয়াল। কী কী সে সব?
খাওয়ার হিসেব
• ওজন কমাতে গিয়ে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খাওয়া একেবারেই বন্ধ করে দেন অনেকই। কিন্তু এতে ক্ষতি হয় কিডনির। ডায়াটেশিয়ানদের মতে, খাবারে মোট ক্যালোরির ৬০–৬৫ শতাংশ যেন কার্বোহাইড্রেট থেকে আসে। তাই সারা দিনে ছোট এক বাটি ভাত বা দু’-তিনটে রুটি বা চিড়ে–মুড়ি–খই এবং দু’–তিন রকম শাকসব্জি–ফল খান।
• নুনের পরিমাণও কমাতে হবে। কিন্তু কতটা কমাবেন এ নিয়ে ধন্দে থাকেন অনেকেই। চিকিৎসকদের মতে, এখন যতটা নুন খান তার চেয়ে ২ গ্রাম কম খান ৷ অর্থাৎ দিনে এক চা–চামচের বেশি নয় ৷
• প্রক্রিয়াজাত খাবার ও প্যাকেটবন্দি খাবারে নুনের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই অ্যাডেড সল্ট এড়াতে এই ধরনের খাবার কম খান৷ এতে কিডনির রোগের আশঙ্কা প্রায় ২০ শতাংশ কমবে ৷
• বাদ দিন জাঙ্ক ফুড। নিতান্ত খেতে হলে সপ্তাহে এক–আধ দিনের বেশি তো একেবারেই নয়৷ এতে প্রিজারভেটিভ ও নুন থাকে। এগুলি সবই কিডনির জন্য ক্ষতিকারক ৷
জল খাওয়ার নিয়ম
পরিমাণ মতো জল খেলে অবশ্যই তা কিডনির জন্য উপকারী। জিনে অন্তত ৩-৪ লিটার জল খাওয়াই নিয়ম। তবে শরীরে অন্য কোনও রোগ আছে কি না তার উপরেও নির্ভর করে এক জনের নিত্য জল খাওয়ার পরিমাণ।
তাই শরীরে কতটা জল প্রয়োজন তা জেনে নিন তা চিকিৎসকের থেকে। সেই অনুপাতে জল খান রোজ। কম জল খাওযা যেমন কিডনির কাজে সমস্যা করে, তেমনই শরীরের তুলনায় বেশি জল খেলেও কিডনিতে চাপ পড়ে ক্ষতি হয়।
অন্যান্য খেয়াল
• কিছু ওষুধ আছে যা কিডনির উপর চাপ পড়ে। যেমন, নন–স্টেরয়ডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি গ্রুপের ব্যথার ওষুধ, অ্যাঞ্জিওগ্রাফি–আইভিপি বা সিটি স্ক্যানে ব্যবহৃত রঞ্জক, কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, মৃগি বা টিবির ওষুধ, স্টেরয়েড ইত্যাদি৷ প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ যদিও তুলনায় নিরাপদ৷
• যে কোনও রকম নেশা, যেমন হেরোইন, কোকেন, গাঁজা, ভাং, এমনকি, দীর্ঘ দিন ধরে প্রচুর মদ খেলেও কিডনির সমস্যা আসবে।
• রাত জাগা, কাজের চাপ, বিশ্রামের অভাব— সবে মিলে টেনশন বাড়ে, বাড়ে হৃদস্পন্দন, রক্তচাপ৷ সেই চাপ এসে পড়ে কিডনিতে ৷