বাংলার পুতুল নাচের ইতিকথা
পুতুল নেবে গো… পুতুল?
পুতুল নিয়ে অবসেশন ছোটো-বড়ো কম-বেশি সবারই৷ আর সেই পুতুল যদি নড়ে, চড়ে, গল্প শোনায়, নাচে, গায় তাহলে কেমন হয়? কৃত্রিম ভাবে পুতুলের এই নড়া-চড়া, কথা বলা বলা- এরই পোশাকি নাম পুতুল নাচ বা পাপেট্রি৷ পাপেট্রিও কিন্ত্ত একধরনের অ্যানিমেশন৷ কার্টুনকে যেমন আঁকার পর ক্যামেরার সাহায্যে গতি দেওয়া হয় এটাও অনেকটা তাই৷ তবে ক্যামেরার বদলে এখানে গতি দেয় মানুষ৷ আর পাপেট শো’য়ে কেবল জীবজন্তু নয় যে কোনও জড় বস্তুই পাপেট হয়ে উঠতে পারে৷
‘পুপা’ ল্যাটিন শব্দ থেকে ‘পাপেট’ ইংরেজি শব্দটা এসেছে৷ অসমে পুতুল নাচকে ‘পুতলা নাচ’, মণিপুরে ‘লাই থবি জোগাই’, রাজস্থানে ‘কাঠপুতলি’, তামিলনাড়ুতে ‘বোমালাট্টম’ নামে ডাকা হয়৷
অতীত বনাম আধুনিকঃ
আগের পুতুল নাচের সঙ্গে এখনকার পুতুল নাচের বিস্তর ফারাক ঘটে গিয়েছে৷ নানা ধরনের আর্ট ফর্ম এতে এসে মিশেছে৷ শুধু পুতুল নাচ ছাড়াও এখন পাপেট থিয়েটার, সিনেমাও হচ্ছে৷
নাটক বা সিনেমার ক্ষেত্রে প্রথমে গল্প বাছা হয়৷ চিত্রনাট্য লেখা হয়৷ চরিত্র বুঝে পুতুলের ছবি আাঁকা হয়৷ সেই অনুযায়ী কাঠ, থার্মোকল, ফোম, পেপার ম্যাস বা পাল্প দিয়ে পুতুল বানানো হয়৷ তাকে রং, গয়না, কাপড় পড়িয়ে সাজানো হয়৷ নাটকের ক্ষেত্রে এরপর সেই পুতুলগুলো দিয়ে প্রসিডিয়াম মঞ্চে পারফর্ম করানো হয়৷
সিনেমার ক্ষেত্রে ক্যামেরা ব্যবহার করা হয় নানা লোকেশনে নিয়ে গিয়ে৷ শো’য়ের সময় পুতুলের হয়ে কথা বলেন পাপেটিয়ার নিজে৷ অনেক সময় রেকর্ড বাজানো হয়৷ পুতুল নাচের জন্য আবহ, গান এমনকি কোরিওগ্রাফ পর্যন্ত করা হয়৷
এছাড়া, পাপেট শো তো পড়াশোনার আঙিনায়ও ঢুকে পড়েছে৷ বিদেশে অনেক আগেই পাপেট শো কোর্সে রয়েছে৷ পাপেট শো ছোটো-বড়ো সকলেই এতটাই এনজয় করে যে, যে এর মাধ্যমে সমাজের সব স্তরে সহজেই কোনও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পৌঁছে দেওয়া যায়৷