বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

করোনায় ঘরবন্দি? পড়ে ফেলুন এই ক্লাসিক বইগুলি

March 21, 2020 | 3 min read

ঘরে একা একা বসে থাকতে ভীষন বোরিং ফিল করছেন? তবে সঙ্গী হিসেবে বেছে নিতে পারেন মানুষের সব সময়ের সঙ্গী – বইকে। আবার তাঁক থেকে পেড়ে, ঝেড়েমুছে পড়ে দেখতে পারেন কালজয়ী উপন্যাসগুলি। ভারাক্লান্ত মনে করোনার আতঙ্ক থেকে কিছুটা স্বস্তি লাভ করতে পারেন, আবার পেতে পারেন পরম মানসিক প্রশান্তি।

একনজরে দেখে নেওয়া যাক এমনই কয়েকটি ক্লাসিক বাংলা উপন্যাসের তালিকা 

পথের পাঁচালি (১৯২৯)

বিভৃতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যে স্নিগ্ধ প্রকৃতির নিঃসঙ্গ উপাসক। গ্রাম বাংলার প্রকৃতি ও জীবন, তার আকাশ বাতাস, রৌদ্র বৃষ্টি, গাছপালা, নদী-মাঠ সবকিছুই তার সত্তার সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। 

মূলত বাংলার গ্রামে দুই ভাইবোন অপু আর দুর্গার বেড়ে ওঠা নিয়ে উপন্যাস পথের পাঁচালি। প্রথমে গ্রামে এবং তারপরে শহরের জীবন  সম্পর্কে তিক্ত ও মিষ্টি সুন্দর বিবরণে স্মরণীয় চরিত্রের বর্ণনায় ভরপুর পথের পাঁচালি। 

পদ্মা নদীর মাঝি (১৯৩৬)

মানিক বন্দোপাধ্যায় রচিত উপন্যাসগুলোর মধ্যে সর্বাধিক পঠিত, আলোচিত ও একাধিক বিদেশী ভাষায় অনূদিত জনপ্রিয় একটি উপন্যাস। এই উপন্যাসটিতে মানব মনের মনস্তাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপগুলিতে আলোকপাত করে, উচ্চ আদর্শের পাশাপাশি আবেগ, স্তত্ত্বা ইচ্ছা, অনিচ্ছার পরিপূর্ণ বিবরণ পাওয়া যায়।

পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাসটি জেলে অধ্যুষিত গ্রামের জীবনযাত্রা নিয়ে রচিত। কেন্দ্রীয় চরিত্রে কুবের। উপন্যাসে পদ্মার তীর সংলগ্ন কেতুপুর ও পার্শ্ববর্তী গ্রামের পদ্মার মাঝি ও জেলেদের বিশ্বস্ত জীবনালেখ্য চিত্রিত হয়েছে।  

জাগরী (১৯৪৬)

স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় একজন তরুণ বিপ্লবীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ভোরবেলায় তাকে ফাঁসি দেওয়ার আগে কারাগারে তাঁর শেষ রাত। চারটি মন্ত্রমুগ্ধ অধ্যায়গুলিতে আমরা চারটি কণ্ঠ শুনি: দোষী, তার বাবা, তার মা – সকলেই কারাগারে রয়েছেন তার ভাই প্রত্যেকে। তাদের একই গল্পের সংস্করণ বর্ণনা করেন।  

বাংলা কথাসাহিত্যের মানসম্পন্ন একটি চমৎকার উদ্ভাবনী উপন্যাস, সতীনাথ ভাদুড়ী রচিত জাগরী। পারিবারিক গতিশীলতা এবং রাজনৈতিক পটভূমি, ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং দেশপ্রেম নিয়ে অনবদ্য রচনা এটি।

হাজার চুরাশির মা (১৯৭৪)

‘হাজার চুরাশির মা’ মহাশ্বেতা দেবীর একটি কালজয়ী উপন্যাস। এই উপন্যাসের মূল বিষয় তৎকালীন ভারতবর্ষের নকশাল আন্দোলন। এই উপন্যাসের মধ্যে রূপকার্থে লুকিয়ে আছে মহাশ্বেতা দেবীর নিজ সন্তান নবারুণ ভট্টাচার্য।

এই  উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে একজন স্নেহময়ী মায়ের চরিত্র, যার কাজ ছিল স্বামীর দৈহিক সুখের আশায় সন্তান জন্ম দেওয়া। এতে আছে নারীদেহের উপর আসক্ত একজন স্বামীর চরিত্র, যে তার স্ত্রীকে ভোগ করেই কেবল ক্ষান্ত হয়নি, বরং তার উগ্র যৌনতাকে শান্ত করার জন্য বেছে নিয়েছিল অবাধ নারীসঙ্গ। এখানে আরও চিত্রিত হয়েছে তৎকালীন ধনিক শ্রেণীর মানুষের জীবনব্যবস্থা, সংগ্রামী প্রেমিকার চরিত্র, স্বার্থবাদী মানুষের চরিত্র। 

হারবার্ট (১৯৯৩)

জন্মসূত্রেই  নবারুণ ভট্টাচার্য সাহিত্যেরপ্রতি গভীরনুরাগী। তাঁর মা হলেন মহাশ্বেতা দেবী, তাঁর পিতা ছিলেন নাট্যকার ও লেখক ব্যক্তিত্ব বিজন ভট্টাচার্য। 

হারবার্ট কার্যত সত্তরের দশকের নকশাল আন্দোলন প্রেক্ষাপটে রচিত উপন্যাস। মানসিকভাবে, মনস্তাত্ত্বিক ও বুদ্ধিদীপ্তভাবে – মধ্যবিত্ত নগরবাসীর গল্প বলা, হার্বার্ট সরকার নামে এই নিঃশ্বাসের উপন্যাসটি, একটি বিদ্রূপাত্মক সাংবাদিকতার কণ্ঠ। এটি শুরু হয় নায়কটির আত্মহত্যার মধ্য দিয়ে। হারবার্ট বইটির  ছত্রে ছত্রে আন্দোলনের চেতনা যে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় নি যে কোনো মূহুর্তেই তা আবার ফেটে পড়তে পারে তা বোঝানো হয়েছে।

বাংলার সাহিত্য ভাণ্ডার অফুরন্ত। বই আলোচনা শুরু করলে সহজে শেষ হবে না। এই কিস্তিতে এই কটা বই থাকে। ভবিষ্যতে আরও বইয়ের সন্ধান দেবে টিম দৃষ্টিভঙ্গি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#corona fear, #classic books, #book

আরো দেখুন